মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১১:০৯ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
সারিয়াকান্দিতে যমুনা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করায় ৫০ হাজার টাকা জরিমানা সারিয়াকান্দিতে প্রতিপক্ষের হুমকিতে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে কুতুবপুর গ্রামের বাসিন্দা সারিয়াকান্দিতে তীব্র তাপদাহে প্রাণিসম্পদ সুরক্ষায় করণীয় বিষয়ে লিফলেট বিতরণ সারিয়াকান্দিতে সহম্রাধিক তৃষ্ণার্তদের শরবত খাওয়ালো ইসলামী দাওয়াহ্ সেন্টার জুয়া খেলে বাগমারায় জিরো থেকে হিরো কে এই ফিরোজ? তীব্র খরায় খাদ্য সামগ্রী নিয়ে নিম্ন আয়ের মানুষের পাশে ডা. অর্ণা জামান সারিয়াকান্দিতে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সাখাওয়াত হোসেন সজলকে বিজয় করা লক্ষে মতবিনিময়সভা বজ্রপাতে নিহত নাবিল খানের ষষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী আজ,এখনো কাঁদছে পরিবার সারিয়াকান্দিতে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ বাবার আদর্শ ধরে মানুষের স্বার্থে মানুষের জন্য কাজ করতে চাই: সাখাওয়াত হোসেন সজল
নোটিশ :
দেশের জনপ্রিয় সর্বাধুনিক নিয়ম-নীতি অনুসরণকৃত রাজশাহী কর্তৃক প্রকাশিত নতুনধারার অনলাইন নিউজ পোর্টাল ‘যমুনা প্রতিদিন ডট কম’

চিলমারীতে ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে লাখো পুণ্যার্থীর ঢল

কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে ঐতিহ্যবাহী অষ্টমীর স্নানে লাখো পুণ্যার্থীর ঢল নেমেছে।

উপজেলার চিলমারী নদী বন্দর ঘাট থেকে জোড়গাছ পর্যন্ত ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকা জুড়ে এবারের অষ্টমীর স্নান ও মেলার স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে।

মঙ্গলবার(১৬ এপ্রিল) ভোর ৪টা থেকে ৫টা পর্যন্ত স্নানের উত্তম লগ্ন থাকলেও দিনব্যাপী স্নান ও মেলা চলবে।

দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আগত পুণ্যার্থীদের থাকার জন্য উপজেলার প্রায় ২২টি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় খুলে দেওয়া হয়েছে।পুণ্যার্থীদের রাত্রী যাপনের জন্য ৪৪টি অস্থায়ী বুথ, সরকারী ও বেসরকারীভাবে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের জন্য নলকুপ ও পয়নিস্কাশনের জন্য টয়লেট ও স্নান পরবর্তী পোশাক পরিবর্তনের জন্য বুথ স্থাপন করা হয়েছে।পুণ্যার্থীদের পূজাপর্বের জন্য প্রায় দুই শতাধিক ব্রাহ্মণ পূজারি দায়িত্ব পালন করবেন।

হিন্দু সম্প্রদায়ের পঞ্জিকা অনুযায়ী চৈত্র মাসের অষ্টমী তিথিতে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা ব্রহ্মপুত্র নদে স্নান করলে ভক্তের সমস্ত পাপ ধুয়ে মুছে যায়।পাপমোচনের অভিপ্রায়ে তাই প্রতি বছর জেলা ও জেলার বাইরে থেকে লক্ষ লক্ষ হিন্দু ধর্মাবলম্বী পুণ্যার্থী ব্রহ্মপুত্র নদে স্নান করতে আসেন।

জানা যায়, প্রায় ৪০০ বছর থেকে চৈত্র মাসের শুক্ল পক্ষের অষ্টমী তিথিতে ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে এ স্নান পর্ব চলে আসছে।

এবারের স্নানের তিথি ভোর সাড়ে ৪টায় শুরু হওয়ায় দূরের পুণ্যার্থীগণ একদিন পূর্বে স্নান মেলা নিকটতম স্থানে উপস্থিত হয়েছেন।তারা চিলমারী উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, আত্নীয় স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নেন।কেউ কেউ আবার ব্রহ্মপুত্র নদের তীরের প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিচ্ছিন্নভাবে বিছানা করে রাত্রী যাপন করেছেন।

পাশ্ববর্তী জেলা লালমনিরহাট কাকিনা এলাকা থেকে আসা ধিরেন রায় (২২) জানান, এবার প্রথম বাবা মায়ের সাথে মেলায় এসেছি।মেলার পরিবেশ খুব ভালো লাগলো।

দিনাজপুর শহর থেকে আসা পংকজ রায় (৬৫) জানান, প্রায় ২০ বছর ধরে চিলমারীর বান্নির মেলায় আসি।প্রতিবার রাস্তায় প্রচুর ভীর থাকে যার কারনে আসতে অনেক সময় লাগে।এবার রাস্তায় গাড়ির তেমন ভীর নাই।কাল বিকালে বাসা থেকে বের হইছি।এখানে এসে বাস থেকে নেমে স্নান করলাম।স্নান শেষ এখন পরিবার নিয়ে একটু মেলায় কেনা কাটা করবো।এরপর খাওয়া করে আবারও আমরা বাসার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হবো।

একই এলাকার নিখিল চন্দ্র জানান, ছোটবেলায় বাবা-মায়ের সাথে ব্রহ্মপুত্র নদে স্নান করতে আসতাম।বয়স হয়েছে, এবছর নিজের স্ত্রী, সন্তান, নাতি-নাতনিসহ ব্রহ্মপুত্র নদে স্নান করতে এসেছি।এটি উত্তরাঞ্চলের সব থেকে বড় স্নানান উৎসব।ব্রহ্মপুত্রে স্নান করলে সব ধরণের পাপমোচন হয়।পাপমোচনের আশায় এতদূর থেকে কষ্ট করে এসেছি।

ঐতিহ্যবাহী চিলমারী ব্রহ্মপুত্র নদে অষ্টমীর স্নান মেলা উৎসব কমিটির কোষাধ্যক্ষ শ্রী তপন কুমার রায় জানান, অষ্টমীর স্নান সনাতন ধর্মালম্বীদের হলেও এখন এটি চিলমারী উপজেলাবাসীর ঐতিহ্যের প্রতীক হয়ে উঠেছে।পার্শ্ববর্তী ভারত থেকেও কিছু পুণ্যার্থী এসেছে।

সব মিলে প্রায় ২লাখ পুণ্যার্থী স্নান করতে এসেছেন বলে ধারনা করা হচ্ছে।চিলমারী উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, আনসার বাহিনী ও জনপ্রতিনিধি সহ স্থানীয় মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকজন পুণ্যার্থীদের নানা ভাবে সহযোগিতা করছে।

মেলা নির্বিঘ্ন করতে এবারে শ্রী বিষু চন্দ্র বর্মণকে আহ্বায়ক করে ৫৬ সদস্যের স্নানাৎসব কমিটি গঠন করা হয়েছে।এবারে ২০০ জনের অধিক ব্রাহ্মণ ঠাকুর স্নানাৎসবে পূজা অর্চনা করেন বলেও তিনি জানান।

চিলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মিনহাজুল ইসলাম বলেন, চিলমারীর ব্রহ্মপুত্র নদে অষ্টমীর স্নান উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে লোকজন আসে।তাই আমরা উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে চিলমারীর বিভিন্ন স্থানে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোড়দার করেছি।ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে ফায়ার সার্ভিসের ইউনিট, ডুবুরি দল এবং পুলিশ, আনসার বাহিনীর সদস্য সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করেছে।এখন পর্যন্ত কোথাও কোনো অসুবিধা হয়নি।তবে গতকাল রাতে একজন পুরোহিতের মৃত্যু হয়েছে বলে জানতে পেরেছি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

three × five =


অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ

x