শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১২:২৯ অপরাহ্ন
নোটিশ :
দেশের জনপ্রিয় সর্বাধুনিক নিয়ম-নীতি অনুসরণকৃত রাজশাহী কর্তৃক প্রকাশিত নতুনধারার অনলাইন নিউজ পোর্টাল ‘যমুনা প্রতিদিন ডট কম’

সিআরপি’র পরিচিতি সভায় কাঁদলেন এবং কাঁদালেন ডা: অর্ণা জামান

আমরা প্রতিবন্ধীদের কেনো সমাজের থেকে আলাদা করে রাখছি? কেনো আমরা এসকল বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের এসমাজের একটি অংশ মনে করতে পারি না? তারাও তো মানুষ।আমরা চেষ্টা করবো সমাজকে ভাগ না করে সকলকে এক কাতারে নিয়ে চলতে।আমার বাবা খাইরুজ্জামান লিটন আমাদের পারিবারিক জায়গাটি যে এমন একটি সমাজসেবা মূলক কাজে দিয়েছে তাতে আমরা গর্বিত।আমি আশা করবো এই জায়গাটিতে সিআরপি ভালো ভাবে জনগনের সেবায় সকলের কল্যাণের জন্য কাজ করবে।

সিআরপি রাজশাহী-শহীদ এ এইচ এম কামারুজ্জামান ও জাহানারা জামান সেন্টারের পরিচিতি সভায় বক্তব্য দিতে গিয়ে আবেগ আপ্লুত হয়ে সুবিধাবঞ্চিত ও বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের সাধারণ মানুষদের সাথে এক কাতারে দেখার প্রত্যয় ব্যাক্ত করেন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য এবং রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ডা: আনিকা ফারিহা জামান অর্ণা।

আর্তমানবতার সেবায় জনকল্যানে সিআরপি‘কে পারিবারিক ১৫ বিঘা জমি দান করেছেন জাতীয় চার নেতার অন্যতম শহীদ এ.এইচ.এম কামারুজ্জামানের হেনার পুত্র বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন।

৯ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার রাজশাহী জেলার কাটাখালি পৌরসভার কাপাসিয়া বাজারের পাশে পক্ষাঘাতগ্রস্তদের পুনর্বাসন বিভাগীয় উপকেন্দ্র শহীদ এ এইচ এম কামারুজ্জামান ও জাহানারা জামান সেন্টারের প্রস্তাবিত স্থানে পরিচিত সভা অনুষ্ঠিত হয়।

পরিচিতি সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এ এইচ এম খাইরুজ্জামান লিটন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাসিক মেয়র সিআরপি ও সুবিধাবঞ্চিত জনগনের বিষয়ে তিনি বলেন, দীর্ঘ ১৫ বছর আগ থেকে আমি ও আমার স্ত্রী শাহীন আকতার রেনী, আমরা দুজনে পক্ষাঘাতগ্রস্ত, পঙ্গু ও প্রতিবন্ধীদের কল্যানে কাজ করছি।এ সংক্রান্ত কয়েকটি সংগঠনের সাথে জড়িত থেকেও কাজ করেছি।তখন থেকে মনে হতো, তাদের জন্য স্থায়ীভাবে যদি কিছু করতে পারতাম।সেই চিন্তা থেকে পক্ষাঘাতগ্রস্তদের পুনর্বাসন কেন্দ্র গড়ে তুলতে ১৫ বিঘা জমিটি সিআরপিকে প্রদান করেছি।চিকিৎসা সেবা সহ এই প্রতিষ্ঠানটিকে ঘিরে কর্মসংস্থান শুরু হবে।

এসময় মেয়র পরিবারের পক্ষ থেকে অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে বক্তব্য দেন রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও বিশিষ্ট সমাজসেবক শাহীন আক্তার রেনী, রাজশাহীর মতো জায়গায় সিআরপি চালু হলে শুধু নগরীই নয় রাজশাহী বিভাগের বিভিন্ন এলাকার মানুষ এখান থেকে সেবা নিতে পারবে।এছাড়াও স্থানীয় এলাকা বা তার আশেপাশের বিভিন্ন এলাকার মানুষের বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।

অন্যদিকে বক্তব্য দিতে গিয়ে আবেগ আপ্লুত হয়ে সুবিধাবঞ্চিত ও বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের সাধারণ মানুষদের সাথে এক কাতারে দেখার প্রত্যয় ব্যাক্ত করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য এবং রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ডা: আনিকা ফারিহা জামান অর্ণা বলেন, আমি ডাক্তার হওয়ার আগে অর্থাৎ যখন এমবিবিএস পড়বো বলে ভেবেছিলাম।সেইসময় আমার বাবার (মেয়র লিটন) কাছে একটা প্রতিশ্রুতি চেয়েছিলাম, যে আমার একটা স্পেশালাইজড হসপিটাল দরকার।যেখানে আমি চিকিৎসা দিতে পারব এবং সেটা রাজশাহীতেই দরকার।

অর্ণা জামান বললেন, এখানকার মানুষ ঢাকায় গিয়ে হয়তো অনেকের আবাসন ব্যবস্থার সমস্যা থাকে, অনেকের খাওয়ার সমস্যা থাকে, আর্থিক সংকট থাকে। এই যে কষ্টগুলো যখন চোখের সামনে থেকে দেখা লাগে খুবই কষ্ট পাই।এজন্য বাবার কাছ থেকে কথা নিয়েছিলাম যে, আমাকে একটা হসপিটাল করে দিতে হবে এবং অবশ্যই আমি যেন সেটার একটা দেখভাল করার সুযোগ পায়।

আমাদের কাপাসিয়ার এই বাগানটি ১৬ বিঘা জায়গার উপর সুন্দর একটা জায়গা এবং আমি মনে করি, হয়তো আমার বাবার জায়গায় অন্য কেউ থাকলে এখানে বিশাল বড় বাংলো করে, বাড়ি করে, সুইমিং পুল এটাচ করে, পিছে বাগান করে রাজমহল গড়ে তুলতে পারতেন।রাজশাহীতে অনেক ভূমিদস্যু হয়েছে, জলদস্যুও আছে, বালুদস্যুও আছে কিন্তু বাবার মতো এরকম মনের মানুষ নাই।

তিনি আরো বলেন, আজকের এই সিআরপি রাজশাহী সেন্টার যেটি আমার দাদা শহীদ এ এইচ এম কামরুজ্জামান হেনা এবং জাহানারা জামান আমার দাদি তাদের নামে হচ্ছে এখানে রাজশাহীর পার্শ্ববর্তী এলাকা নওগাঁ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, জয়পুরহাট, বগুড়া, রংপুর পর্যন্ত, খুলনা পর্যন্ত অনেক মানুষ আছে যাদের চিকিৎসা সেবার খুবই কষ্ট তারা আসবেন, সেবা নিবেন এবং সুস্থ হবেন।

আমার ভালো লাগে এই বাচ্চাগুলো এত ট্যালেন্টেড আপনারা বিশ্বাস করতে পারবেন না তাদের ছবি আঁকা দেখলে তাদের কথা শুনলে।তারা যখন কালচারাল প্রোগ্রামগুলো করে, আমি গিয়েছি দেখেছি আমার ভেতরটা কষ্টে ফেটে যায়।এই বাচ্চাগুলোর পেছনে যারা কাজ করেন তাদেরও সেই অবদান এই চিকিৎসকরাও যারা কষ্ট করে সারাদিন রাত পরিশ্রম করছে তাদের জন্য।ডা: অর্ণা আরো বলেন, আমরা একটা সুস্থ সমাজ ও অসুস্থ সমাজ দুই ভাগে ভাগ করে দিয়েছি কেনো।কেন আমরা একটা সমাজ হতে পারছি না, সবাই একটা হতে পারছি না কেন, সবাই সুস্থ হতে পারছি না কেন, কেন মানতে পারছিনা ওরা আমাদের, আমাদেরই অংশ।আজ যদি আমার সন্তান প্রতিবন্ধী হয় আমি কি তাকে ফেলে দিব, আমি কিভাবে মা হিসেবে তাকে ফেলে দিব আমি পারবো না।

আমি দেখেছি আমার মাকে কষ্ট পেতে,আমরা যখন অসুস্থ থাকি, আমার এই শারীরিক গঠনের কারণে মানুষ যখন বিভিন্ন কথা বলে ভাবী আপনার মেয়ে মোটা হয়ে যাচ্ছে এত খাওয়ান।আমি সত্যি বলছি বাসায় তেমন খাবার হয় না বা লুকিয়ে খাবার অভ্যাস আমার নেই।কিন্তু এখন হয়ে গেছি এরকম কি করব, ডাক্তার হিসেবে আমিও জানি এটা খারাপ।আমি চেষ্টা করিনি নিজেকে ঠিক করার আমি করবি ইনশাল্লাহ।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

1 + 17 =


অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ

x