সোনিয়া খাতুন: তীব্র গরমে অতিষ্ঠ জনজীবন।টানা দাবদাহে নাজেহাল অবস্থা কর্মজীবী ও সাধারণ মানুষের।এতে সব থেকে বিপাকে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষেরা।জীবিকার তাগিদে গরম উপেক্ষা করে বাইরে বের হলেও মিলছে না কাজ।কিছুটা কাজ জুটলেও তীব্র রোদ আর গরমে কাজ করতে পারছে না শ্রমিকরা।এতে কাঙ্ক্ষিত যে আয় সেটি করতে পারছে না তারা।নুন আনতে পান্তা ফুরানো এই অসহায় মানুষগুলোর কথা চিন্তা করেই মানবতার হাত বাড়িয়ে কয়েকদিনের খাদ্য সামগ্রী নিয়ে তাদের পাশে দাড়িয়েছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক উপকমিটির সদস্য, রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য এবং যুব মহিলা লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ডা. আনিকা ফারিহা জামান অর্ণা।
আজ সোমবার (২৯ এপ্রিল) বিকেল ৫ টায় ডা. কাইছার রহমান চৌধুরী মিলনায়তনে প্রায় ৫ শতাধিক পরিবারের মাঝে কয়েকদিনের খাদ্য সামগ্রী তুলে দেন তিনি।
প্রতি জনকে দেওয়া হয়েছে ১ কেজি চিনি গুড়া চাল, ২ কেজি আঠাশ চাল, ১ কেজি মসুর ডাল, ১ কেজি চিনি, ১ কজি লাচ্চা সামাই, ১ কেজি ময়দা , আধা কেজি খেজুর এবং ২ লিটার সয়াবিন তেল।
বর্তমান পরিস্থিতিতে এমন সহায়তা পেয়ে খুশি অসহায় খেটে খাওয়া মানুষেরা।নগরীর তেরোখাদিয়া থেকে আসা জুলেখা বেগম (৫৫)। হাত পেতেই চলে তার জীবন।তিনি জানান, এই তীব্র রোদে আমি বাড়ী থেকে বের হতে পারছি না।তাই আয়-রোজগার নেই।এক বেলা খাচ্ছি, আরেকবেলা নেই।স্থানীয় এক ছাত্রলীগ নেতার মাধ্যমে ডা. অর্ণা জামানের একটা স্লীপ পাই।তারপর এখানে আসার পর এতো কিছু পেয়ে খুব খুশি হয়েছি।
এদিকে রিকশাচালক রফিকুল ইসলাম (৪০) বলেন, এই তীব্র রোদে রিকশা চালাতে খুব কষ্ট হয়।আবার এই রোদের কারনে মানুষও খুব কম বের হচ্ছে।যার জন্য আমরা যাত্রী পাচ্ছি না।আয়-রোজগারও কমে গেছে।ঠিক এই সময় এতোগুলো সামগ্রী পাওয়ায় কয়েকদিন ভালোভাবে দিন কাটাতে পারব।এর জন্য ডা. অর্ণা জামানের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি।
খাদ্য সামগ্রী বিতরণ শেষে ডা. অর্ণা জামান বলেন, রাজশাহীতে তীব্র তাপপ্রবাহ ও অসহনীয় গরমে যারা কষ্টে রয়েছে, বিশেষ করে যারা দিনমজুর ও খেটে খাওয়া মানুষ রয়েছে তাদের কষ্ট কিছুটা লাঘব করতে এবং এই গরমে যারা কাজ করতে পারছে না, আয়-রোজকার কমে গেছে, সেই দিকটা বিবেচনা করে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় তাদের পাশে দাড়ানোর জন্য আমার এই কার্যক্রম।এই রোদের মধ্যে অন্তত ২ দিন তারা বাড়ীতে থেকে আরামে এগুলো খেতে পারবে।আমরা দেখেছি অতিরিক্ত গরমে বিভিন্ন জায়গায় শরবত, স্যালাইন দেওয়া হচ্ছে কিন্তু আমি এই খাবারগুলো দেওয়ার মাধ্যমে আমার মনে হয় যে, ২ দিন অন্তত তারা বাড়ীতে থাকতে পারবে এবং হিট স্ট্রোকের যে ঝুকি সেটা নিয়ন্ত্রণ করা যাবে।আমি চেষ্টা করেছি মানুষকে সাধ্যমতো খাবার দেওয়ার এবং আমি মনে করি আমি সফল হয়েছি।আগামীতে এমন তীব্র তাপপ্রবাহ থাকলে আমি আবারও এমন উদ্যোগ গ্রহণ করবো।
তিনি আরো বলেন, এই আবহাওয়ায় আমরা যেনো কেও অসুস্থ হয়ে না পরি, তাই বাহিরের খাবার বর্জন করে বাড়ীর খাবার খাবো।হালকা পোশাক পরবো ও পানি জাতীয় জিনিস বেশি খাবো।কারন আমরা জানি এই আবহাওয়ায় অনেকে অসুস্থ হয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে।বিশেষ করে শিশুরা বেশি অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে।তাই আমাদের সচেতন থাকতে হবে।এজন্য আপনারা একটু সাবধানে থাকবেন।
ডা. অর্ণা জামান বলেন, আজকের এই আয়োজন আপনাদের জন্য।আপনাদের হাতে এই খাবারগুলো তুলে দিলে মনে হবে আমি আমার শহরের জন্য কিছু করতে পেরেছি।আমি প্রধানমন্ত্রীকে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে জানাবো আমাদের শহরের কথা, শহরের মানুষের কথা এবং আপনাদের জন্য আরো ভালো কিছু করার চেষ্টা করবো।