নওগাঁর আত্রাইয়ে দেশি মাছের অভাবে শুঁটকি পল্লীতে স্থবিরতা সৃষ্টি হয়েছে।কাঙ্খিত লাভের মুখ দেখতে না পাওয়ায় অনেকে এ পেশা ছেড়ে দিতে বাধ্য হচ্ছে।ফলে এবারে আত্রাইয়ে শুঁটকি উৎপাদন হচ্ছে অন্যান্যবারের তুলনায় অনেক কম।অন্যান্যবার এ মৌসুমে শুটকি উৎপাদনে ব্যাপক সরব থাকলেও এবারে নেই তাদের মাঝে আগ্রহ।তাই অনেক চাটাইগুলো দিনের পর দিন পড়ে থাকছে মাছ বিহীন।
জানা যায়, উত্তর জনপদের মৎস্য ভান্ডার হিসেবে খ্যাত স্থান সমুহের মধ্যে আত্রাইও একটি খ্যাত স্থান।প্রতিদিন শত শত টন মাছ আত্রাই থেকে রেল, সড়ক ও নৌ পথে দেশের বিভিন্ন জেলায় বাজারজাত করা হয়।সে অনুযায়ী শুঁটকি উৎপাদনেও আত্রাইয়ের যথেষ্ট প্রসিদ্ধি রয়েছে।
রাজধানী ঢাকাসহ উত্তরাঞ্চলের রংপুর, নিলফামারী, সৈয়দপুর, কুড়িগ্রাম, দিনাজুপরসহ দেশের প্রায় ১৫/২০ জেলাতে বাজারজাত করা হয় আত্রাইয়ে শুঁটকি মাছ।আর এ মাছের শুঁটকি তৈরী করে জীবিকা নির্বাহ করে প্রায় শতাধিক পরিবার।
আত্রাইয়ের ভরতেঁতুলিয়া গ্রাম শুঁটকি তৈরীতে বিশেষভাবে খ্যাত।এ গ্রামের শতাধিক শুঁটকি ব্যবসায়ী এ পেশার সাথে সম্পৃক্ত।শুধু বর্ষা মৌসুমে শুঁটকি তৈরী করে তারা পরিবারের সারা বছরের ভরণপোষণ নিশ্চিত করতেন।কিন্তু এবাবে দেশি মাছের দাম বৃদ্ধির কারনে এসব শুঁটকি ব্যবসায়ীরা হাতাশ হয়ে পড়েছেন।কাঁচা মাছের আমদানী কম, বাজাররে মূল্য বেশি অথচ শুঁটকির বাজারে ধস।সবকিছু মিলে এবারে শুঁটকি ব্যবসায়য়ীরা কাঙ্খিত লাভ না পাওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছেন।
বিলম্বে বন্যা, নিষিদ্ধ জাল দিয়ে মাছ নিধনের ফলে দেশি মাছের এ সংকট সৃষ্টি হয়েছে বলে অনেকে মনে করছেন।
ভরতেঁতুলিয়া গ্রামের বিশিষ্ট শুঁটকি ব্যবসায়ী আব্দুস ছাত্তার সরদার বলেন, অন্যান্য বছর শুঁটকি বিক্রি করে আমরা যে পরিমান লাভবান হতাম।এবার তার অর্ধেকও লাভ করতে পারছি না।কাঁচা মাছের আমদানি কম, মূল্য বৃদ্ধি অথচ শুঁটকির দাম কম হওয়ায় এবারে শুঁটকি তৈরী করে আমাদের কাঙ্খিত লাভ হচ্ছে না।পরিবারের নারী পুরুষ মিলে কাঁচা মাছকে শুঁটকির উপযোগী করে শুঁটকি তৈরি করতে হয়।এত হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রমের পরও কাঙ্খিত লাভ না পাওয়ায় আমাদের অনেকেই এ পেশা ছেড়ে দিতে বাধ্য হচ্ছেন।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা পলাশ চন্দ্র দেবনাথ বলেন, বর্ষা মৌসুমে নিষিদ্ধ জাল দিয়ে কেউ যাতে মাছ শিকার করতে না পারে এর জন্য আমরা ব্যাপক অভিযান পরিচালনা করেছি।অনেক জাল আটক করে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। তারপরও বিলম্বিত বন্যার কারনে মাছের কিছুটা সংকট সৃষ্টি হয়েছে।আমরা সরকারীভাবে শুঁটতি উৎপাদনকারীদের উৎসাহ প্রদান করছি।