সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা থানার ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কের নাটোর মহাসড়কের হাটিকুমরুল গোতচত্বর গেলেই হাটিকুমরুল নিউ টাউন মৎস্য আড়ৎ।সেখানে দাঁড়িপাল্লা হাতে দাঁড়িয়ে কয়েলদার।পেছনে খাতা-কলম হাতে হিসাব কষতে ব্যস্ত আড়তের সরকার।দিনের আলো না ফুটতেই সিরিয়াল ধরে আসছে মাছ ভর্তি বিভিন্ন যানবাহন।সেই মাছ আনলোড করে পাল্লায় তুলতে ব্যস্ত শ্রমিকরা।দূর-দূরান্ত থেকে আসা ব্যাপারীরা হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন পাল্লার ওপর।পছন্দের মাছ কিনতে ব্যাপারীরা দাম হাঁকিয়ে যাচ্ছেন।প্রতি পাল্লা মাছ বিক্রি করতে কিছুক্ষণ চলছে দর কষাকষি।শেষ সর্বোচ্চ দরদাতার হাতে যাচ্ছে মাছ।
প্রতিদিন সকাল ৬টা থেকে মাঝখানে ঘণ্টাদুয়েক বিরতি দিয়ে দুপুর ২টা পর্যন্ত আড়ৎজুড়ে চলে মাছ বেচাকেনার কর্মযজ্ঞ।এ আড়তের প্রত্যকটি ঘরগুলোতে প্রতিদিন প্রায় গড়ে ৩ থেকে ৪ লক্ষ্য টাকার মাছ বিক্রি হয়।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঢাকা রাজশাহী মহাসড়কের পাশেই হাটিকুমরুল গোলচত্বর নামক স্থানে রাস্তায় মাছভর্তি সারিবদ্ধ যানবাহন।মাঝখানে ফাঁকা রেখে আড়তের চারপাশে গড়ে তোলা হয়েছে আড়তের ঘর।পুরো অংশে বিছিয়ে দেওয়া হয়েছে ইট।আড়ৎ চলাকালে ভেতরে পা ফেলার জায়গা থাকে না।এসব আড়ৎ ঘিরে গড়ে উঠছে বিভিন্ন খাবারের দোকান।
আড়তদাররা জানান, জানান, ২০ বছর আগে হাইওয়ে রোডের পাশেই প্রথম আড়ৎটি চালু হয়।কিন্তুু বর্তমানে সরকার হাটিকুমরুল ইন্টারচেন্জ এর জন্য জমি অধিগ্রহণ করায় বর্তমানে নিজস্ব অর্থায়নে ১০ বিঘা জমি বর্ধিত করে এ আড়ৎ গড়ে তোলা হয়েছে।
তিনি জানান, এখানে ১২০ জন আড়ৎদার রয়েছেন।প্রতিদিন এখানে ২ হাজারেরও বেশী কর্মচারী ও শ্রমিক কাজ করেন।সকাল ও দুপুরের বাজার মিলে ৫ থেকে ৭ হাজারের বেশি ব্যাপারী মাছ কিনতে এ আড়তে নিয়মিত আসেন।প্রতিদিন প্রায় ১ থেকে ২ কোটি টাকার বিভিন্ন প্রজাতির মাছ বিক্রি হয় এ আড়তে।
মাছের ব্যাপারীরা জানান, বড় বড় মাছের জন্য এ আড়তের খ্যাতি দেশজোড়া।পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা ভালো হওয়ায় আড়তের ভেতরে পানি জমে না।তবে আড়তে চাঁদাবাজদের কোনো দৌরাত্ম্য নেই।
ব্যাপারী ইলিয়াস রহমান বলেন, যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো হওয়ায় নিরাপদ পরিবেশেই মাছ কিনে সবাই নিজ নিজ গন্তব্যে যেতে পারেন।ব্যাপারীদের সুযোগ সুধিধা ও বরফের দাম কম হওয়ায় উত্তর বঙ্গের মাছের ব্যবসায়ীরা এখান থেকেই নিয়মিত মাছ কেনেন।
ইজারাদার মিজানুর রহমান বি এস সি বলেন, উত্তরবঙ্গের সবচেয়ে পুরাতন ও এতিহ্যবাহী মৎস্য আড়ৎ এটি।প্রতিবছর প্রায় ২ কোটি টাকা হাটঢাক ইজারার মাধ্যম সুনামের সহিত এ হাট চলে আসছে।কিছু দূস্কৃতিকারী হাটটি নষ্ট করার পায়তারা করেছিল।আমরা আরও বড় পরিসরে ঐতিহ্যবাহী হাটটি পুনরায় সাজিয়েছি বিক্রেতা ও ক্রেতাদের আরো বেশী সুযোগ সুবিধা দিয়ে।ভবিষ্যতে এই আড়ৎটি বাংলাদেশের মধ্য একটা মডেল আড়ৎ হিসেবে স্বীকৃত পাবে আমরা আশাবাদী।