রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০৭:৩৮ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
বিয়েতে রাজি না হওয়ায় আত্মহত্যা, প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে মামলা সারিয়াকান্দির সেই মেধাবী ছাত্র সাকিবুল হাসানের দায়িত্ব নিলেন সাহাদারা মান্নান এমপি সারিয়াকান্দিতে জিপিএ-৫ পেয়েও অর্থের অভাবে কলেজে ভর্তি অনিশ্চিত সাকিবুল হাসানের সারিয়াকান্দিতে ইউএনও’র সাথে নবনির্বাচিত ভাইস চেয়ারম্যানের শুভেচ্ছা বিনিময় সারিয়াকান্দিতে সরকারি খাদ্য গুদামে ইরি-বোরো ধান ও চাল সংগ্রহের শুভ উদ্বোধন সারিয়াকান্দিতে ট্যাপেন্টাডল ট্যাবলেটসহ গ্রেফতার-২ নালিতাবাড়ী খাদ্য গুদামে ধান-চাল সংগ্রহের উদ্বোধন অনুষ্ঠিত সারিয়াকান্দিতে অভিবাসী কর্মীদের পুনঃএকত্রীকরণে রেইজ প্রকল্পের ভূমিকা’ শীর্ষক ওরিয়েন্টেশন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে লালমনিরহাট জেলা পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যানের শ্রদ্ধা সারিয়াকান্দিতে পূর্ব শত্রুতার জেরে এক যুবককে ছুরিকাঘাত
নোটিশ :
দেশের জনপ্রিয় সর্বাধুনিক নিয়ম-নীতি অনুসরণকৃত রাজশাহী কর্তৃক প্রকাশিত নতুনধারার অনলাইন নিউজ পোর্টাল ‘যমুনা প্রতিদিন ডট কম’

রাজশাহীতে ১৪ মাসে ১৭২ নারী ও কন্যা শিশু নির্যাতিত

গত ১৪ মাসে (জানুয়ারী ২৩-ফেব্রুয়ারী ২৪) রাজশাহীতে ১৭২ জন নারী ও কন্যা শিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছে।

৮ মার্চ নারী দিবস।নারীর অধিকার আদায়ের দিবস।”নারীর সমঅধিকার,সমসুযোগ এগিয়ে নিতে হোক বিনিয়োগ” স্লোগানে পালিত হলো এবারের নারী দিবস।বর্তমান সরকার নারীদের উন্নয়নে বহুমাত্রিক উন্নয়ন কর্মসূচী বাস্তবায়ন করছে।নারীদের বিচরণ এখন সবত্র।একই সাথে আমাদের দেশে উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে নারী ও কন্যা শিশু নির্যাতন, যৌন সন্ত্রাস ও পর্নোগ্রাফী।রাজশাহী জেলাও এর বাইরে নয়।

২০২২ সালে আঁচল ফাউন্ডেশন কর্তৃক পরিচালিত জরিপে দেখা যায়, দেশে মোট তরুণীদের মধ্যে ৬৫ দশমিক ৫৮ শতাংশই যৌন হয়রানির শিকার হয়।এছাড়া ৪৫ দশমিক ২৭ শতাংশ তরুণী গণপরিবহনে যৌন হযরানির শিকার হন।গণপরিবহন হিসেবে সর্বাধিক ব্যবহৃত বাস বা বাসস্ট্যান্ডে যৌন হয়রানির মতো অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হন ৮৪ দশমিক ১০ শতাংশ তরুণী।পাশাপাশি বিভিন্ন জায়গায় ইভটিজিংয়ের শিকার হয়েছেন ২২ দশমিক ২৬ শতাংশ তরুণী।

সংগঠনটির দেওয়া তথ্য মতে, জরিপে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ৩৫দশমিক ৪৯ শতাংশ তরুণী জানিয়েছেন যে তারা বিকৃত যৌন ইচ্ছার প্রছন্ন ইঙ্গিতের মাধ্যমে নিগ্রহের শিকার হয়েছেন।২৯.৬২ শতাংশ তরুণীকে আপত্তিকর স্পর্শের ভুক্তভোগী হতে হয়েছে।যৌন হয়রানির মধ্যে আপত্তিকর স্পর্শের শিকার হয় ৬৪দশমিক ৯২ শতাংশ তরুণী।এমনকি ২০ দশমিক ০৪ শতাংশ তরুণী কুদৃষ্টি এবং অনুসরণের শিকার হয়েছেন।

জরিপের তথ্য অনুযায়ী জানা যায়, তরুণীরা সবচেয়ে বেশি এ ধরনের নিপীড়নের শিকার হন একাকী চলার সময়ে, যা ৭৫ দশমিক ৬০ শতাংশ।তবে ২১ দশমিক ৫৭ শতাংশ মা, বোন, বান্ধবী বা অন্য নারী সঙ্গী থাকা অবস্থায় এবং ২ দশমিক ৮৩ শতাংশ বাবা, স্বামী, ভাই বা অন্য পুরুষ সঙ্গী থাকা অবস্থায় নিপীড়নের শিকার হয়েছেন।এছাড়া ৪৩ দশমিক ৮৯ শতাংশ তরুণী অনলাইনে বিডম্বনার শিকার হয়েছেন।এর মধ্যে অবাস্তব ও কুরুচিপূর্ণ মেসেজ পাঠিয়ে এবং মন্তব্য করে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলা হয়েছে ৬১ দশমিক ১২ শতাংশকে।সামাজিক যোগযোগমাধ্যমের আইডি হ্যাকিংয়ের শিকার হয়েছেন ১০ দশমিক ৩৪ শতাংশ।৯ দশমিক ৮৯ শতাংশ ব্যক্তিগত ও সংবেদনশীল ছবি নিয়ে দুর্ভোগ পোহান বলে জানিয়েছেন।এছাড়াও ৫ দশমিক ১৭ শতাংশ অযাচিত আইডি স্টাকিংয়ের শিকার হন বলে সমীক্ষায় উঠে আসে।

এছাড়া নারীর অধিকার রক্ষায় রাজশাহী অঞ্চলে দীর্ঘদিন যাবৎ কাজ করে আসছে উন্নয়ন ও মানবাধিকার সংস্থা লেডিস অর্গানাইজেশন ফর সোসাল ওয়েলফেয়ার (লফস)।

৮ মার্চ নারী দিবস উপলক্ষ্যে সংস্থাটি তার নিজেস্ব ডকুমেন্টসেল থেকে গত ১৪ মাসে রাজশাহী জেলার নারী ও কন্যা শিশু নির্যাতনের তথ্য প্রকাশ করে।

এতে দেখা যায়-গত ১৪ মাসের হত্যা ১৭, হত্যার চেষ্টা ০৬, আত্বহত্যা ২৮, আত্বহত্যার চেষ্টা ০৩, ধর্ষন ২২, গণধর্ষন ০২, ধর্ষণের চেষ্টা ০৯, যৌন নির্যাতন ০৯, নির্যাতন ৬৪, ভিকটিম অফ পর্নোগ্রাফি ০২, অপহরণ ০৫, অপহরণের চেষ্টা ০২, নিখোঁজ ০১, শ্রীলতাহানি ও ইভটিজিং ০২ জন নারী ও কন্যা শিশু।

উন্নয়ন সংস্থা লফস সমাজের নারী নেত্রী, সাংবাদিক, শিক্ষক, আইনজীবী সরকারী/বে-সরকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা সহ সমাজের বিজ্ঞজন ও জনসাধারনের সাথে নারী ও কন্যা শিশু নির্যাতন বিষয়ে কথা বলে এবং তথ্য অনুযায়ী জানা যায়-পারিবারিক কলহ, প্রেম ঘটিত কারনে হত্যা ও আত্মহত্যার মতো ঘটনা নিয়মিত ঘটছে।ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতনের মতো ঘৃনিত অপরাধ ঘটছে অহরহ যা প্রতিরোধের কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না বা আইনের ফাঁকে অপরাধীরা বেড়িয়ে আসছে।একইভাবে যৌতুক ও বাল্যবিবাহ’র ফলে নারী ও কন্যা শিশুরা প্রতিনিয়ত নির্যাতিত হচ্ছে এর ফলে সংসারে ভাঙ্গন দেখা দিচ্ছে,আত্মহত্যার ঘটনা ঘটছে।অনেক ক্ষেত্রে পরকীয়া প্রেম নারীর জীবনকে দূর্বিষহ করে তুলছে।সোস্যাল মিডিয়া মাধ্যমে ব্লাকমেইলিং এর প্রবণতা দিন দিন বাড়ছে যার একটি বড় অংশ নির্যাতনের শিকার হচ্ছে তরুনীরা।

লফস মনে করে, নারী নির্য়াতন প্রতিরোধে নারীদের নির্ভয়ে প্রতিবাদ ও আইনী সহায়তা গ্রহন করা উচিৎ।সমাজের অপরাধ প্রবনতা কমাতে দ্রুত অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনা, শাস্তি নিশ্চিত করা ও সামাজিক সচেতনতার মাধ্যমে নারী ও কন্যা শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ সম্ভব।

লফস এর নির্বাহী পরিচালক শাহানাজ পারভীন ২০২৪ সালে নারী দিবসে আমাদের প্রত্যাশা “নারীর সমঅধিকার, সমসুযোগ এগিয়ে নিতে হোক বিনিয়োগ” নারীর অধিকার আদায়ে সকল মতপার্থক্য ভুলে সকলকে ঐক্যবদ্ধ সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার আহবান জানান।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

16 − 3 =


অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ

x