বয়স বেড়ে গেলে ত্বকেই সবচেয়ে আগে এর ছাপ পড়ে।কেউই চান না তাকে বয়স্ক দেখা যাক।যৌবন ধরে রাখতে সবাই চান।তাই ৪০ বছর পার হলেই ত্বকে বয়সের ছাপ পড়তে শুরু করে।ছবি- আনিকা তাবাস্সুম
এমন কিছু খাবার আছে যেগুলো খেলে মানুষের শরীরে বয়সের ছাপ পড়ার প্রবণতা কমে।এজন্য বয়স ৪০ এর পর থেকে শরীরের প্রতি বিশেষ নজর রাখতে হবে সবারই।
অ্যান্টি-এজিং খাবারগুলো ত্বকের বিভিন্ন ক্ষতিকর ফ্রি র্যাডিকেলের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে। দেহে কোলাজেন মেরামত করতে এবং প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।
ওমেগা-৩ সমৃদ্ধ সালমন মাছ এবং তিসি থেকে শুরু করে ভিটামিন ‘সি’ জাতীয় সাইট্রাস ফলসহ বিভিন্ন খাবার আছে, যেগুলো আপনার বয়স কমিয়ে দিতে পারে।
জেনে নিন ১০টি সেরা অ্যান্টি-এজিং খাবার সম্পর্কে, যেগুলো ৩০-৪০ বছরের পর থেকেই নিয়মিত খেলে যৌবন ধরে রাখতে পারবেন-
গ্রিন টি
গ্রিন টি’তে প্রচুর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং ফাইটোকেমিকেল আছে।যা দেহের প্রদাহ হ্রাস করে।শরীরের ক্ষতিকারক ফ্রি র্যাডিকেল বাড়লে ত্বকে বয়সের ছাপ পড়তে থাকে।গ্রিন টি’তে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ফ্রি র্যাডিকেলের সঙ্গে লড়াই করে।যা কোষের ক্ষতি ঠেকাতে পারে।নিয়মিত গ্রিন টি খেলে বয়স বাড়লেও কমবে ত্বকের বয়স।
ফ্ল্যাক্সিড বা তিসি
ফ্ল্যাক্সিড ত্বক কুঁচকানোর হাত থেকে রক্ষা করে।নিয়মিত তিসি খেলে ত্বকে আর্দ্রতা বজায় থাকে।এর ফলে ত্বক হয় কোমল এবং তারুণ্যময়।সেইসঙ্গে এর তেল ত্বক ও চুলে ব্যবহারের মাধ্যমেও উপকার মিলবে।
এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, ফ্ল্যাক্সিডের তেল যারা ১২ সপ্তাহ নিয়মিত ত্বকে ব্যবহার করেছেন; তাদের ত্বকে আর্দ্রতার পরিমাণ বেড়েছে ৩৯ শতাংশ।এই অ্যান্টি-এজিং খাবারটি খাদ্যতালিকায় নিয়মিত রাখতে পারেন।
সালমন
সামুদ্রিক মাছ সালমনে থাকে ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড।এই মাছে যে ধরণের ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড পাওয়া যায়; সেটিতে থাকে ডিএইচএ (অর্থাৎ ডকোসাহেক্সেনইওিক এসিড)।যা মস্তিষ্ক, হার্ট এবং চোখকে বার্ধক্যের হাত থেকে রক্ষা করে।
মাশরুম
প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ডি থাকে মাশরুমে।যা সাধারণ হাড়ের গঠন এবং রক্ষণাবেক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।তাই প্রতিদিনের খাবারে অল্প পরিমাণে হলেও মাশরুম রাখতে ভুলবেন না।
দুধ
৪০ পেরিয়ে গেলেও ডায়েটে রাখুন দুধ।এতে আছে উচ্চ পরিমাণ প্রোটিন, ক্যালসিয়াম।যা শরীরের পেশিতে শক্তি বাড়ায় ও হাড়ের ক্ষয় থেকে মুক্তি মেলে।এ ছাড়াও দুধে থাকা ইলেক্ট্রলাইটস শরীরের আর্দ্রতা বজায় রাখে।
ডার্ক চকোলেট
ডার্ক চকোলেটের একাধিক স্বাস্থ্য উপকারিতা আছে।এটি খেতেও যেমন মজাদার; ঠিক তেমনিই এতে আছে বেশ কয়েকটি উপকারী খনিজ পুষ্টিগুণ- ক্যাফেইন, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ইত্যাদি।এসব উপাদানসমূহ যৌবন ধরে রাখতে সাহায্য করে।
লেবু
সকালে এক গ্লাস উষ্ণ গরম পানিতে লেবুর রস মিশিয়ে খাওয়ার হাজারো উপকারিতা আছে।এই সাইট্রাস ফলটি ভিটামিন সি’তে ভরা।
এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, যে নারীরা নিয়মিত ভিটামিন সি গ্রহণ করে; তাদের ত্বকে কম বলিরেখা পড়ে এবং ত্বক থাকে টানটান।
আনারস
অ্যান্টি-এজিং খাবারের মধ্যে আছে আনারাস।এটিও ভিটামিন সি এর দুর্দান্ত উৎস।যা কোলাজেন তৈরির জন্য বিশেষভাবে কাজ করে।
হলুদ
রান্নাঘরের এই মশালায় থাকে প্রাকৃতিক অ্যান্টি অক্সিডেন্ট।চেহারা থেকে বার্ধক্যের ছাপ মুছে ফেলতে পারে এই খাবারটি।এ ছাড়াও হলুদ বিভিন্ন প্রদাহ হ্রাস করতেও ব্যবহৃত হয়।
ওটস
৪০ পার হলেই কার্বস কম খাওয়া উচিত।এজন্য ভাতের বদলে নাস্তায় ওটস রাখতে পারেন।এতে আছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার।শরীরের শক্তি জোগাতেও সাহায্য করে ওটস।ফাইবার হজম শক্তি বাড়ায়।বিভিন্ন সমীক্ষায় দেখা গেছে, ওটস যৌবন ধরে রাখতে সাহায্য করে।
লেখক: পুষ্টিবিদ ইসরাত জাহান