মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ০৯:১১ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
আমি নির্বাচিত হয়ে,মানুষের পাশে থেকে কাজ করতে চাই: ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ইউনুছ আলী আমি নির্বাচিত হয়ে ,মানুষের পাশে থেকে কাজ করতে চাই: ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ইউনুছ আলী সারিয়াকান্দি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে জনপ্রিয়তার শীর্ষে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী লিখন মিয়া সারিয়াকান্দিতে দিনব্যাপী গণসংযোগ ও উঠান বৈঠক করেছেন চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহজাহান আলী সারিয়াকান্দিতে দিনব্যাপী গণসংযোগ ও উঠান বৈঠক করেছেন ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী লিখন মিয়া বাবা মায়ের স্বপ্ন পূরন করা হলো না এনজিও কর্মী সঞ্জয়ের সারিয়াকান্দি উপজেলা পরিষদ নিবার্চন থেকে সরে দাঁড়ালেন চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুস সালাম ও আশিক রাজশাহীতে কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের মাঝে গ্লুকোজ বিতরণ রাজশাহীতে দৈনিক মানবিক বাংলাদেশ পত্রিকার প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন দুর্গাপুরে প্রশাসনকে ম্যানেজ করে রাতের আঁধারে আবাদি জমিতে পুকুর খনন
নোটিশ :
দেশের জনপ্রিয় সর্বাধুনিক নিয়ম-নীতি অনুসরণকৃত রাজশাহী কর্তৃক প্রকাশিত নতুনধারার অনলাইন নিউজ পোর্টাল ‘যমুনা প্রতিদিন ডট কম’

ইউটিউবের সহযোগিতায় চা বানানো শিখে মনিরের মাসে আয় ৫০ হাজার টাকা

ছোট্ট একটি ঘরে।সকাল থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত চলে সোরডাক।আমাকে এক কাপ দিন, আমাকে এক কাপ দিন এরকম চলে হাকডাক।এটা তার নিত্যদিনের ছবি।তবে বেলা বাড়ার সাথে সাথে দোকানে বাড়তে থাকে ভিড়।এ সময় একটু দম ফেলার কোন সুযোগ মেলে না দোকানির।এই দোকান থেকেই মাসে আয় হয় ৪০ থেকে ৫০হাজার টাকা।

বলছিলাম মাদারীপুর সদর উপজেলা পাঁচখোলা ইউনিয়নের পশ্চিম পাঁচখোলা এলাকার চায়ের দোকানি মোঃ শাহরিয়ার মনিরের কথা।মুক্তিসেনা স্কুলের একটু সামনে মনিরের চা দোকানের খ্যাতি এখন জেলাজুরে।সকাল-রাত প্রায় সব বয়সী লোকজনের ভির দেখা মেলে চায়ের জন্য।

তবে তার চায়ের দোকানটি নাফসিন ভ্যারাইটিজ কর্নার স্টোর নামে জেলায় বেশ পরিচিত।বর্তমানে তার দোকানে ৮০ প্রজাতীর চা পাওয়া যায়।এরমধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় চা হলো দুবাই চা ও স্পেশাল তুর্কি চা এবং আয়ুর্বেদিক রং চা।

এদের উল্লেখযোগ্য চা হলো-টক ঝাল মিষ্টি আমলকি চা, টক ঝাল মিষ্টি হট তেঁতুল চা, টক ঝাল মিষ্টি কোন্ড তেঁতুল চা, অস্থির বোম্বাই মরিচের জাদুকরি চা, তাল মিশ্রি দারচিনি চা, তাল মিশ্রি লবঙ্গ এলাচ চা, গুড়ের টক ঝাল মিষ্টি হট লেমন চা, গুড়ের টক ঝাল মিষ্টি কোল্ড লেমন চা, গুড়ের টক ঝাল মিষ্টি হট তেঁতুল চা, গুড়ের টক ঝাল মিষ্টি কোলড তেঁতুল চা, গুড়ের টক ঝাল মিষ্টি হট মাল্টা চা, গুড়ের টক ঝাল মিষ্টি কোল্ড মাল্টা চা, গুড়ের টক ঝাল মিষ্টি হট কমলা চা, গুড়ের টক ঝাল মিষ্টি কোল্ড কমলা চা, স্পেশাল টক ঝাল মিষ্টি পাঁচমিশালী এনার্জি বুলেট চা, আকর্ষণীয় ডাবল লেয়ার চা, স্পেশাল মধু ললবঙ্গ চা, মধু দারুচি চা, আয়ুর্বেদিক রং চা, মিউশন চা, স্পেশাল মধু কালোজিরা রং চা, রং চা, তুলসী চা, পুদিনা চা, লেমন চা, টক ঝাল মিষ্টি হট লেমন চা, টক ঝাল মিষ্টি কোল্ড লেমন চা, টক ঝাল মিষ্টি হট জলপাই চা, টক ঝাল মিষ্টি কোল্ড জলপাই চা, টক ঝাল মিষ্টি হট কাঁচা আমের চা, নরমাল মাল্টা চা, টক ঝাল মিষ্টি মাল্টা চা, টক ঝাল মিষ্টি কোল্ড মাল্টা চা, কমলা চা, টক ঝাল মিষ্টি হট কমলা চা, টক ঝাল মিষ্টি কোল্ড কমলা চা, টক ঝাল মিষ্টি হট চালতা চা, টক ঝাল মিষ্টি কোন্ড চালতা চা, টক ঝাল মিষ্টি হট কদবেল চা, খাঁটি গরুর দুধের চা, স্পেশাল মসলা দুধ চা, স্পেশাল মালাই চা, স্পেশাল তুর্কি চা, গুরের দুধ চা, তাল মিশ্রি দুধ চা, তাল মিশ্রি এলাচ লবঙ্গ দুধ চা, লবঙ্গ এলাচ দুধ চা।

মনির জানান, ২০০০ সালে এসএসসি পাশ করে অভাবের সংসারে হাল ধরার জন্য পারিজমান ঢাকার শহরে।সেখানে চাকরি নেন চাকরি নেন গার্মেন্টসে।গার্মেন্টস থেকে যে টাকা পায় নিজের চলতে কষ্ট হয়ে যায়।পরে ছেড়ে দেন চাকরি।চলে আসেন পাঁচখোলা ইউনিয়ন ১নং ওয়ার্ডের নিজ বাড়িতে।তারপরে চিন্তা আছে মাথায় নিজে কিছু একটা করার।বিভিন্ন দোকানে চা বানানো দেখে এবং ইউটিউবের সহযোগিতায় শিখে নেন চা বানানোর কৌশল।মুক্তিসেনা স্কুলের সামনে বৃদ্ধাশ্রমের পাশে শুরু করে দেন দোকান নির্মাণের কাজ।

প্রথমে তিনি ১৫ রকমের চা দিয়ে শুরু করেন ব্যবসা।বর্তমানে তার দোকানে ৮০ প্রজাতির চা রয়েছে।এছাড়াও বাহারী ধরনের পান রয়েছে।এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য পান আগুন পান। ব্যতিক্রম একটি খাবার রয়েছে তার নাম স্মোক বিস্কিট।সব মিলিয়ে এখন তার মাসে আয় ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা।এই আয়ের টাকার মধ্যে দিয়ে সংসার এবং ভাই-বোনদের লেখাপড়া খরচ চালান তিনি।

এমন এক সময় গেছে তাদের দিন আনতে দিন খাইতে অনেক কষ্ট হয়ে গেছে।এখন এই চায়ের দোকানে তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়েছে।সংসারে ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা খরচ হল বাড়তি ২০ হাজার টাকার পুজি থাকে।

তিনি আরো বলেন, তার দেখা দেখি অনেক বেকার যুবকরাও এই বাহারি চায়ের দোকান দেওয়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে এবং তার কাছ থেকে তারা চা বানানোর কৌশল শিখেছে।

নিয়মিত চা খেতে আসেন মাদারীপুর সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র সোহান ইসলাম।সে বলে, মাদারীপুর জেলার সবচেয়ে সুস্বাধু চা পাওয়া যায় মুক্তিসেনা বৃদ্ধাশ্রম এর পাশে মনির ভাইয়ের দোকানে।আমরা বন্ধুরা মিলে প্রায়ই এখানে চা খেতে আসি।আমরা দুবাই চাটাই বেশি খাই।

রুবেল হোসেন বাড়ি রাজবাড়ী জেলায় চাকরি করেন মাদারীপুরে।চাকির সুবাদে থাকায় হয় মাদারীপুরে।পাঁচখোলা এলাকায় গেলে মনির ভাইয়ের চায়ের দোকানে চায় খাই।বিশেষ করে তার দোকানে দুবাই ও তুর্কি চাটা বেশি চলে।তার দোকানে বিভিন্ন ফ্লেভারের চাপ পাওয়া যায়।

শরীয়তপুর থেকে চা খেতে আসা মোহাম্মদ রিয়ান বলেন, আমি মাঝে মাঝে এখানেই চা খেতে আসি এবং সবচাইতে আমার কাছে দুবাই চাটাই মজা লাগে।এজন্য আমার মন চায় আমি বারবার এই চা খাই।

গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রাহাত ইসলাম বলেন, আমরা ভার্সিটির বন্ধুরা মিলে ২০০ টাকা ভাড়া দিয়ে প্রতি শক্রবার এখানকার চায়ের অতুলনীয় স্বাদ নিতে আসি।এখানকার চা অন্য সব দোকানের থকে আলাদা।একবার খেলেই মুখে এর স্বাদ অনেক দিন লেগে থাকে।

অটোচালক রুহুল বলেন, সারা দিন শহরে অটো চালিয়ে সন্ধ্যার পর বাসায় যাওয়ার আগে মনির ভাইয়ের চা খাই।সন্ধ্যার পরে চা খেতে হলে সিরিয়াল নিতে হয়।

মনিরের স্ত্রী মুন্নী বেগম বলেন, যখন দোকানে ভিড় থাকে তখন আমি আমার স্বামীকে দোকানের কাজে সাহায্য সহযোগিতা করি।বেশিরভাগ সময় সন্ধার পরেই ভিড় বেশি থাকে তখন আমি আমার স্বামীকে সংসারের পাশাপাশি তার দোকানও সহযোগিতা করি।

মুক্তিসেনা স্কুলের সহকারী শিক্ষক মোঃ হাসান বলেন, আমি অবসর সময় বিভিন্ন দোকানের চা খাই, কিন্তু এখানের মত এরকম কেউ চা বানাতে পারে না।এখানকার চা একবার খাইলে আবারও খেতে মন চায় যে এখানে সবচাইতে যে বিষয়টা হলো যেখানে তুর্কি দুবাইসহ বিভিন্ন ফ্লেবারের এত সুন্দর ভাবে মন চায় আমাদের বারবার খেতে।

পাঁচখোলা ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোঃ তিনু হাওলাদার বলেন, মনিরের চায়ের দোকানে নাম এখন জেলা জুড়ে বিস্তৃত।আমি শহরের যেখানে যাই প্রতিটা লোকের কাছেই শুনে যে মনিরের চায়ের বিভিন্ন রকমের সুস্বাদু চা পাওয়া যায়।আমিও গিয়ে খেয়েছিলাম।এখানে সবচাইতে তুর্কি, আয়ুর্বেদিক এবং দুবাই চাটা বেশি চলে।মনির জীবনে অনেক কষ্ট করেছে আজকে মনির সফলতার মুখ দেখছে এ কারণে মনিরকে ধন্যবাদ জানাই।

প্রসঙ্গত, শাহরিয়ার মনিরের টি স্টোরের সুস্বাধু চা খেতে আসতে হবে মাদারীপুর সদর উপজেলা পাঁচখোলা ইউনিয়ন মুক্তিসেনা সামনে বিদ্রাশ্রমের পাশে।এখানে এসে যে কাউকে জিজ্ঞাসা করলে মনিরের চা স্টোরটি দেখিয়ে দেবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

three × 1 =


অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ

x