শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ১১:৩৬ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
রাজশাহীতে কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের মাঝে গ্লুকোজ বিতরণ রাজশাহীতে দৈনিক মানবিক বাংলাদেশ পত্রিকার প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন দুর্গাপুরে প্রশাসনকে ম্যানেজ করে রাতের আঁধারে আবাদি জমিতে পুকুর খনন মোহনপুরে মদ্যপান অবস্থায় বাইক আরোহী নিহত,আহত ২ মান্দায় মহান মে দিবস পালিত মে দিবসে খাবার স্যালাইন,ক্যাপ ও পানি বিতরণ করল রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড জাতীয় শ্রমিক লীগ রাজশাহী মহানগরের উদ্যোগে মহান মে দিবস পালন সারিয়াকান্দিতে দর্জি শ্রমিক ইউনিয়নের মহান মে দিবসে র‌্যালি ও শ্রমিক সমাবেশ সারিয়াকান্দিতে মে দিবস উপলক্ষে শ্রমিক দলের র‍্যালী ও শ্রমিক সমাবেশ সারিয়াকান্দিতে যমুনা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করায় ৫০ হাজার টাকা জরিমানা
নোটিশ :
দেশের জনপ্রিয় সর্বাধুনিক নিয়ম-নীতি অনুসরণকৃত রাজশাহী কর্তৃক প্রকাশিত নতুনধারার অনলাইন নিউজ পোর্টাল ‘যমুনা প্রতিদিন ডট কম’

কেন প্রকৃত চিত্রশিল্পী তৈরি হচ্ছে না বাংলাদেশে

বিশ্ববিদ্যালয় চান্স পাওয়া এখন ঠিক লটারির মতো হয়ে গেছে।দেশে শুরু হলো করোনা তারই সাথে সাথে শুরু হল ডিজিটাল ক্লাস যার নাম অনলাইন ক্লাস।প্রকাশ হলো অটোপাশ। তারই সাথে শুরু হল গুচ্ছ পরীক্ষা।সব মিলিয়ে শিক্ষার্থীদের কাছে একটি চাপ সৃষ্টি শুরু হলো যারা শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা দেওয়ার জন্য বিভিন্ন ব্যাচ পরিচালনা করছেন তারাও পড়ে গেলেন অনেক বিপাকে।আর যারা চারুকলায় পরীক্ষা দেওয়ার স্বপ্ন নিয়ে ছোট থেকে বড় হয়েছেন তাদের জীবন ব্যর্থ তাদের স্বপ্ন চিরতরে মিথ্যা এটা ১০০% সত্য কথা।

আবার যারা চারুকলায় পরীক্ষা দিবেন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাদের পিছনে পড়ে থাকে এক শ্রেণীর বিশ্ব চিন্তাবিদরা।চারুকলায় পড়তে আবার এত কষ্ট করতে হয় নাকি বড়ই অবাক লাগে এ ধরনের বিষয় যখন আমাদের কান পর্যন্ত এসে পৌঁছায়।চারুকলায় যারা পড়ছেন এবং যারা পড়ার জন্য প্রিপারেশন নিচ্ছেন তারাই জানে কি প্রয়োজন হয়‌।

আমি বলবো একজন মেডিকেল পরীক্ষা দেওয়া শিক্ষার্থী চান্স পেতে যতটা কষ্ট করতে হয় তার চেয়ে ডাবল কষ্ট করতে হয় একজন চারুকলায় পড়া স্টুডেন্টের।জানি আমার এই পোস্টটি দেখে অনেকেই হাসবেন তাদের জন্য বলবো।

১০০ মার্কের পরীক্ষা কঠিন না ৫০ মার্কের পরীক্ষা কঠিন এটি শুধু চিন্তা করেন।৫০ মার্কের মধ্যে চারুকলার শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা করতে হয় বাংলা ইংরেজি সাধারণ জ্ঞান এবং শিল্প ও সংস্কৃতি বিষয়ের উপরে, ৫০ মার্কের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে পরবর্তীতে প্রাক্টিক্যালের জন্য আরো ৬০ মার্কের পরীক্ষা দিতে হয়।তারপরে কি তার চান্সের নিশ্চয়তা ঘটে? না তারপরও তার ভাইবা থেকে যায় ম্যাক্সিমাম বিশ্ববিদ্যালয় সেখানেও ২০মার্কের প্রশ্ন করা হয়।তাহলে তিনবার পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে চারুকলায় পড়ার অনুমতি পায়।তাহলে এবারে আপনি চিন্তা করুন অবশ্যই উত্তর পেয়ে যাবেন।

২০২২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে লিখিত পরীক্ষায় পাশ করে আমার কাছে প্রাকটিকাল বিষয়ের জন্য মাত্র সাত দিনের জন্য ভর্তি হয়েছিল ৪০০০ টাকা দিয়ে।ক্লাসের সময় ছিল সকাল ১০ টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত।আমার কাছে ক্লাস করে তারা দুজন চান্স পেয়েছে মেধা তালিকা ১৮তম এবং ১২১তম।

কিন্তু দুঃখ থেকে গেল হৃদয়ে।কারণ তারা যখন প্রাকটিক্যাল ক্লাস করছেন তাদের কাছে প্রশ্ন করেছি এসএম সুলতান কে নিয়ে তখন তারা হতভাগ হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আমাকে প্রশ্ন করলেন স্যার এই এসএম সুলতান কে? তিনি কি জীবিত আছেন? কোন দেশের শিল্পী?

আমি অবাক হয়েছি।একজন চারু শিল্পীর এন্টিকাটার খুব দরকারী একটি সাবজেক্ট।এন্টি কাটারের সাথে প্রত্যেকটা মিনিট শিল্পীর সাথে সম্পর্ক জড়িয়ে থাকে কারণ একজন শিল্পীর প্রত্যেক পাঁচ মিনিট এর মধ্যে একবার পেন্সিল কাটতে হয়।সবারই এন্টি কাটার প্রয়োজন হয় তাদের কাছে বললাম তোমাদের একটি করে এন্টি কাটার দরকার হবে।তার প্রতি উত্তরে আমি পেয়েছিলাম স্যার এন্টিকাটার দিয়ে কি করতে হয়।আর আমরা এটা কোথায় পাবো।

এ ব্যাপারে হয়তো লিখে সবটা পৌঁছানো সম্ভব নয় তবুও কষ্টটা কিছুটা দূর করার জন্য লিখতে হল।অথচ আমার কাছ থেকে যে সকল শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিল তাদের কাছে শিল্পীদের সম্পর্কে শুনলে মিনিমাম ২০ থেকে ২৫ জন শিল্পীর জীবন বৃত্তান্ত তারা মুখস্ত বলতে পারে মাত্র পাঁচ থেকে দশ মিনিটের মধ্যে।

একজন মানুষের ছবি দেখে দেখে ৫মিনিটে এঁকে দিতে পারে এবং কোন শিল্পী কিভাবে ছবি একে বিখ্যাত হয়েছে এতসব জেনেও তারা চারুকলায় পড়া থেকে বঞ্চিত হয়।

জেনারেল পড়া সাবজেক্ট এর মধ্য থেকে প্রশ্ন করা হয় যা কোন চারুকলার সাথে সম্পর্ক থাকে না।তাই তারা হয়তো উত্তীর্ণ হতে পারে না।যারা কখনো চারুকলার স্বপ্ন দেখেনি তারাই উত্তীর্ণ হয়ে বর্তমানে চারুকলায় পড়ছে।

আমার প্রশ্ন একটাই মাত্র চার বছরে কি একজন ব্যক্তিকে শিল্পী তৈরি করা সম্ভব হয়? মাত্র চার বছর কেটে যায় তার শিল্পীর প্রতি শিল্পী হওয়ার ভাবনায়।

আমি ২০১০ সাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি কোচিং পরিচালনা করছি।বাংলাদেশ ভারত সকল চারুকলায় ২১৬ জন শিক্ষার্থী ইতোমধ্যে পড়ার সুযোগ পেয়েছে।ইতোমধ্যে ২১৬ জনের মধ্য থেকে ৩০ জনের মতো সরকারি চাকরি করছে এটা আমার কাছে গর্বের বিষয়।

দুঃখ শুধু একটাই যারা স্বপ্ন দেখে ছোটবেলা থেকে তাদের স্বপ্নটা ভেঙে যায়।আর যারা শিল্পী হওয়ার স্বপ্ন দেখে না তাদের জোর করে শিল্পী তৈরি করার দায়িত্ব পালন করেন আমাদের কর্মরত শিক্ষকরা।

একজন ব্যক্তিকে শিল্পী তৈরি করা কখনোই সম্ভব না।যে পর্যন্ত সে নিজে শিল্পী হওয়ার চেষ্টা না করবে।

আমার প্রতিষ্ঠানের নাম খুলনা আর্ট একাডেমি।আমি খুলনা আর্ট কলেজে পড়তাম।শিক্ষার্থীদের পথপ্রদর্শক হিসেবে দীর্ঘ বছর ধরে কাজ করে যতটুকু সাধনা অর্জন করেছি।আমাদের দেশের স্বনামধন্য জীবিত চিত্রশিল্পীদের সান্নিধ্য পেয়েছি।

২০১৫ সালে ঢাকা থেকে আগত প্রথিতযশা স্বনামধন্য শিল্পীরা খুলনা আর্ট একাডেমিতে এসেছিলেন শিল্পী রফিকুন নবী, শিল্পী সমীর দত্ত, শিল্পী মোস্তাফিজুল হক, শিল্পী শামসুদ্দোহা, শিল্পী নিসার হোসেন, শিল্পী শেখ আফজাল হোসেন, শিল্পী শিশির ভট্টাচার্য, শিল্পী সিলভিয়া নাজনীন, শিল্পী বিমানেশ চন্দ্র, শিল্পী তরিকত ইসলাম খুলনা আর্ট একাডেমি পরিদর্শন করেন।

স্যারদের পদধূলি নিয়ে প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করি।এ ব্যাপারে চারুকলার স্যারেরাও খুব ব্যথিত প্রকৃত শিল্পী তারা পাচ্ছে না।

শিক্ষার্থীদের কাছে আমরা জানতে পারি বর্তমানে চারুকলায় এমনও শিক্ষার্থী আছে একটা কাগজ দুজনে ভাগে কেনে একটা রঙ দুজনে ভাগে কেনে।ক্লাসে যতটুকু দরকার ওইটুকু হলেই তাদের যথেষ্ট তারা অতিরিক্ত কখনোই প্র্যাকটিস করে না।তাদের প্রয়োজনে কি আইডি কার্ড আরেকটি সনদপত্র এতে কি শিল্পী হবে? এমন প্রশ্নই হৃদয় জাগ্রত হয় বারবার।

মনের অনুভূতি প্রকাশ করলাম সিদ্ধান্ত নিবেন আমাদের দেশ পরিচালনা পর্ষদ যারা শিক্ষা ডিপার্টমেন্ট পরিচালনা করেন।যদি এই পোস্টটি শিক্ষা ডিপার্টমেন্টের কোন কর্মকর্তা পড়ে থাকেন আমার লেখার সারমর্ম একটু বুঝে আপনার নিজ উদ্যোগে ভবিষ্যতে শিক্ষার্থীদের এ ধরনের বিপদ থেকে মুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিবেন এমনটাই অনুরোধ রইল শিক্ষাবিদদের কাছে।আর আমি যদি লেখার মাঝে কোন ভুল ত্রুটি করে থাকি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।

বিঃদ্রঃ যারা আমাদের সাথে ড্রয়িং এর জন্য যোগাযোগ করেছিলেন তাদের জন্য বলছি গুচ্ছ পরীক্ষায় পাশ করেছেন তাদের জন্য শর্ট কোর্চের ক্লাস শুরু হয়েছে।যারা ক্লাস করতে আগ্রহী তারা আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন।২০২২সালে আমাদের প্রতিষ্ঠান থেকে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ৬ জন পরীক্ষা দিয়ে ৫ জন সফলতা অর্জন করেছিল।আমাদের সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে Khulna Art Academy ইউটিউব চ্যানেল দেখুন।আমরা সকল শিক্ষার্থীদের সার্বিক মঙ্গল কামনা করি।

শুভকামনায়,

প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক,

খুলনা আর্ট একাডেমি

যোগাযোগঃ 01716570062 (whatsapp)


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

twelve − seven =


অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ

x