শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১২:৩২ অপরাহ্ন
নোটিশ :
দেশের জনপ্রিয় সর্বাধুনিক নিয়ম-নীতি অনুসরণকৃত রাজশাহী কর্তৃক প্রকাশিত নতুনধারার অনলাইন নিউজ পোর্টাল ‘যমুনা প্রতিদিন ডট কম’

নারীর ক্ষমতা,পুরুষের দুর্বলতা

মোঃ আসিফ :: কোরবানি ঈদের চারদিন আগে গরু কেনার জন্য হাটে যাচ্ছিলাম।বয়স আমার ২৫ হতে চললো কিন্তু এত বছরেও কোনোদিন হাটে যাওয়া হয়নি।এবারই প্রথম হাটে যাচ্ছি।তাই বাসা থেকে সবাই নিষেধ করছিলো।কারণ গরুর হাটে নাকি অনেক সময় গরু লাথি মারে।কিন্তু আমি মনস্থির করেছি এবার আমি হাটে যাবোই।এমন সুযোগ হয়তো আর পাবো না।বন্ধু মানিককে সাথে নিয়ে যাব।আমাকে রেখেই সবাই চলে গেছে।তাই মানিকের মোটরসাইকেলে আমরা রওনা দিলাম।হাট আমার বাসা থেকে বেশ খানিকটা দূরে।আমরা একটি পার্কের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলাম।হঠাৎ মানিক গাড়িটা পার্কে ঢুকিয়ে দিল।আমি জিজ্ঞেস করলাম কিরে কোথায় যাচ্ছিস? জবাবে বলল চুপচাপ বসে থাক একটা কাজ আছে।কি কাজ? মানিক বলল এত কথা বলিস না তো চুপচাপ বসে থাক।মিনিট দুয়েক পরে বুঝতে পারলাম মানি কেন পার্কে ঢুকেছে।একটু দূরে দুইটা মেয়ে নাচানাচি করছে।আর একজন ভিডিও করছে।মানিক ভেবেছিল হয়তো নাটক বা সিনেমার আমার শুটিং হচ্ছে।আমিও প্রথমে তাই ভেবেছিলাম।কিন্তু একটু কাছে যেতেই বুঝতে পারলাম তারা আসলে টিকটক ভিডিও বানাচ্ছে।প্রথমে দুইজন হাসলাম।তারপর মানিক আমাকে বলল দেখ মানুষের রুচিবোধের কি অবস্থা।এরাই সমাজ তাকে ধ্বংস করে ফেলছে।মানিক কথাগুলো একটু জোরে জোরে বলল।মোটরসাইকেলের সামনে একটি কুকুর দাড়িয়ে থাকায় মানিক হর্ণ বাজিয়ে গাড়ি স্টার্ট দিচ্ছিলো।ঠিক তখনই মেয়েগুলোর মধ্যে থেকে একজন আমাদের ডাক দিলো।

এই ভাইয়া দাঁড়ান।
আমাদেরকে বলছেন!
হ্যাঁ –

আমরা দাঁড়ালাম।মেয়েটির কাছে এসেই বলল আপনারা কি বললেন? আমি বিস্মিত হয়ে বললাম আমরা তো আপনাদের কিছু বলিনি! মেয়েটি কড়া ভাষায় জবাব দিলেন আমরা কি তাহলে কানে কম শুনি নাকি।আমরা নাকি সমাজটাকে নষ্ট করছি।বুঝলাম মানিকের কথাগুলো তারা শুনেছে।মানিক বলল আসলে আপনাদের উদ্দেশ্য করে কিছু বলিনি।মেয়েটি আরো গরম হয়ে বললেন কাকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন তাহলে? এর মধ্যে বাকি দুজন মেয়েও চলে আসলো।তারা এসেই আমাদের বললেন আপনারা গাড়ি থেকে নামেন।আমি বললাম কেন? বাড়ি থেকে নামতে হবে কেন? তারা আমাকে ধমক দিয়ে বললেন বেশি কথা বললেন না।এবার আমার মাথা গরম হয়ে গেল।মানিককে বললাম নাম তো দেখি কি করে।এক কথা দুই কথা বলতে বলতে তাদের সাথে তুমুল ঝগড়া লেগে গেল।তারা আমাদের তুই করে বলতে শুরু করলো।মেজাজ প্রচন্ড খারাপ হয়ে গেল।মেয়েগুলো এত জোরে জোরে কথা বলছিলেন যে আশেপাশের সব মানুষ বড় হয়ে গেল।

লোকজন জিজ্ঞেস করলো-এখানে কি হয়েছে? হঠাৎ একটা মেয়ে বলে উঠলো এরা দুজন আমাদের ইভটিজিং করেছে।আমরা তো হতভম্ব হয়ে গেলাম।লোকজনকে সব ঘটনা খুলে বললাম।কিন্তু আমাদের কথা কেউই বিশ্বাস করলেন না।অথচ মেয়েগুলো যা বলছিলেন সব তারা বিশ্বাস করছিলেন।হঠাৎ করে একজন আমাদের মারতে শুরু করলেন।মুহূর্তের মধ্যে গণপিটুনি শুরু হয়ে গেল।মানিক কোনরকমে পালিয়ে গেল।কিন্তু আমি পালাতে পারলাম না।সব মার আমার পিঠেই পড়লো।আসলে সমাজের নিয়ম তাই এরকম হয়ে গেছে।

একজন নারী কোন কথা পুরুষকে বললে সে কথা পুরুষ খুব সহজে বিশ্বাস করে ফেলে।কিন্তু পুরুষ মানুষ কোন কথা বললে সে কথা কেউ বিশ্বাস করতে চায় না।এটাই নারীর ক্ষমতার পুরুষের দুর্বলতা।সেখানে আমি থাকলে হয়তো একই কাজ করতাম।আমিও হয়তো নারীদের কথা বিশ্বাস করে গণপিটুনি শুরু করতাম।আসলে নারী নির্যাতনের বিচার হয় কিন্তু পুরুষ নির্যাতনের কোন বিচার হয় না।ভেবেছিলাম হাটে গেলে হয়তো গরুর লাথি খাবো কিন্তু তার আগেই মানুষের লাথি খেয়ে ফিরে আসলাম।

লেখক-ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগ
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

3 × four =


অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ

x