রবিবার, ০৫ মে ২০২৪, ১১:০৮ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
সারিয়াকান্দিতে দিনব্যাপী গণসংযোগ ও উঠান বৈঠক করেছেন চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহজাহান আলী সারিয়াকান্দিতে দিনব্যাপী গণসংযোগ ও উঠান বৈঠক করেছেন ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী লিখন মিয়া বাবা মায়ের স্বপ্ন পূরন করা হলো না এনজিও কর্মী সঞ্জয়ের সারিয়াকান্দি উপজেলা পরিষদ নিবার্চন থেকে সরে দাঁড়ালেন চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুস সালাম ও আশিক রাজশাহীতে কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের মাঝে গ্লুকোজ বিতরণ রাজশাহীতে দৈনিক মানবিক বাংলাদেশ পত্রিকার প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন দুর্গাপুরে প্রশাসনকে ম্যানেজ করে রাতের আঁধারে আবাদি জমিতে পুকুর খনন মোহনপুরে মদ্যপান অবস্থায় বাইক আরোহী নিহত,আহত ২ মান্দায় মহান মে দিবস পালিত মে দিবসে খাবার স্যালাইন,ক্যাপ ও পানি বিতরণ করল রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড
নোটিশ :
দেশের জনপ্রিয় সর্বাধুনিক নিয়ম-নীতি অনুসরণকৃত রাজশাহী কর্তৃক প্রকাশিত নতুনধারার অনলাইন নিউজ পোর্টাল ‘যমুনা প্রতিদিন ডট কম’

বদলগাছী মৎস্য কর্মকর্তার পরামর্শে মাছের হ্যাচারীতেই বাজিমাত পিয়ালের!

দেশীয় মাছের রেনুর হ্যাচারি করে ভাগ্য বদলে গেছে পিয়াল হোসেন নামে এক যুবকের।এখন তিনি নওগাঁর বদলগাছী উপজেলায় যুবকদের রোল মডেল।মৎস্য চাষের রেণু উৎপাদনে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ইতিমধ্যেই পেয়েছেন পুরস্কার।খামারের প্রচার ও প্রসারের জন্য সরকারি সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি।

সংসারে অভাবের তাড়নায় এক সময় অন্যর মাছের হ্যাচারীতে কাজ করতেন পিয়াল।পিয়ালের বাড়ি নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার কাশিমালা গ্রামে।বাবার অভাব অনটনের সংসারে পড়াশোনা বেশি দূর এগোতে পারেনি।এসএসসি পাশ করে একদিন সামান্য কিছু টাকা নিয়ে জীবন জীবিকার তাগিদে বাড়ি ছাড়েন পিয়াল।

সামান্য কিছু বেতনে অন্যর মাছের হ্যাচারীতে কর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন।মৎস্য হ্যাচারীতে কাজ করার সময় পিয়াল দেখতে পান দেশীয় মাছের দাম অন্য মাছের তুলনায় বেশি।সেই থেকেই বিলুপ্ত প্রজাতির দেশীয় মাছের রেণু উৎপাদনের চিন্তা তার মাথায় আসে।অন্যর মৎস্য হ্যাচারীর কাজ ছেড়ে দিয়ে নিজেই কিছু করার পরিকল্পনা করেন।এরপর ময়মনসিংহ থেকে মৎস্য উপর প্রশিক্ষণ নিয়ে কয়েক বছর মাছের চিকিৎসক হিসেবে চাকুরী ও করেছেন।চাকুরী ছেড়ে চলে আসেন বাড়িতে।

এক সময় স্বপ্ন দেখেন নিজের একটি মৎস্য খামারের। স্বপ্ন বাস্তবায়নে ২০১৯ইং সালের শুরুতেই স্বল্প পরিসরে শুরু করেন মাছের রেনু উৎপাদন।মাত্র ৩ বছরের গড়ে উঠেছে তার একটি পূর্ণাঙ্গ মৎস্য হ্যাচারী।১ বিঘা ৫ কাঠা জমির উপর গড়ে তুলেছেন তার এই দৃষ্টি নন্দন মৎস্য হ্যাচারী।হ্যাচারীর নাম দিয়েছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মৎস্য হ্যাচারী এন্ড মৎস্য খামার।

তার হ্যাচারীতে উৎপাদন হচ্ছে দেশী বিলুপ্ত প্রজাতির মাছের রেনু।পাশাপাশি তার হ্যাচারীতে উৎপাদন হচ্ছে দেশীয় শিং, রুই,কাতলা,মৃগেল, মাগুর, টেংরা, গুলসা টেংরা, পাবদা, কৈ, থাই কৈ,চিতল, গুচি, পুঁটি, তেলাপিয়া, পাঙ্গাশ ও বাইম, মনোসেক্স তেলাপুইয়া,ভেটকিসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছের রেণু পোনা উৎপাদন করা হয়।

অন্য মাছের তুলনায় দেশীয় মাছের চাহিদা এবং দাম ভালো পাওয়ায় মাছ চাষীদের কাছে বাড়ছে দেশীয় মাছের রেণুর চাহিদা।

তার খামার থেকে নওগাঁ, বগুড়া, জয়পুরহাট, দিনাজপুর, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ,রাজশাহীসহ দেশের বেশ কয়েকটি জেলায় রেণু সরবরাহ করা হয়ে থাকে।

সরকারের সঠিক পৃষ্ঠপোষকতা ও সহযোগিতা পেলে পিয়াল হোসেনের খামারের পরিধি আরও বৃদ্ধি পাবে বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

সফল উদ্যোক্তা ও মৎস্য খামারি পিয়াল হোসেন বলেন, এক সময় ডোবায়ও দেশীয় মাছ পাওয়া যেত।কিন্তু ফসলে কীটনাশক ব্যবহারের ফলে সেই পানি খাল, বিল, নদী ও ডোবাতে চলে যাওয়ার ফলে দেশীয় প্রজাতির মাছ মারা যায়।এতে করে দেশীয় মাছ এখন বিলুপ্ত প্রায়।এছাড়া পুকুরে কীটনাশক ব্যবহার করার ফলে দেশীয় মাছ হারিয়ে যাচ্ছে।

সেই চিন্তাধারা থেকে দেশীয় মাছ বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা করতেই দেশীয় মাছের রেণুর হ্যাচারি করা হয়েছে।এতে করে বাইরে থেকে রেণু কিনতে হচ্ছে না।তার এই হ্যাচারী থেকে প্রতিমাসে প্রায় ২০০ কেজি রেণু উৎপাদন করা সম্ভব।

বদলগাছী উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ আব্দুস সালাম বলেন, পিয়াল হোসেন স্বল্প সময়ে হ্যাচারিতে সফল হয়েছেন।তার কাছ থেকে মৎস্য চাষীরা দেশীয় মাছের রেণু সংগ্রহ করে থাকেন।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বলেন, মাছ চাষে একদিকে যেমন আমিষের চাহিদা পূরণ হচ্ছে, অপরদিকে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছেন চাষীরা।আগামীতে দেশীয় এসব মাছ বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা পাবে এমনটাই মনে করেন তিনি।একদিকে তিনি মাছের রেণু উৎপাদন করে বেশ লাভবান হচ্ছে অন্য দিকে এলাকার বেকার যুবকরা তার হ্যাচারী থেকে রেনু পোনা নিয়ে পুকুরে চাষ করে বেকারত্ব দূর করছেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

three × 4 =


অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ

x