কা’বার স্থানকে বলা হয় পৃথিবীর সূচনালগ্ন।যা পবিত্র, স্বচ্ছ ও রবের আঁকানো একটি পবিত্রভূমি।যেখানে গেলেই শোনা যায় মসৃণ কণ্ঠের প্রশান্তিকর আযান আর নামাযে মধুর তিলাওয়াত।
ছোট বেলায় যখন মক্কা-মদিনার আযান শুনতাম, তখন হৃদয়ে কেমন যেন, এক বিশাল ভালোলাগা কাজ করতো।সেই তখন থেকেই অন্তরের অন্তস্থলে জায়গা করে নিয়েছে মহামহিম রবের পবিত্র ঘর কা’বা ও মদিনা।
একটা সময় টিভির সামনে বুদ হয়ে পড়ে থাকতাম!অবলোকন করতাম টিভিতে প্রচার করা হাজিদের হজ করার মনোরম দৃশ্য।ছোট্ট হৃদয়ে সেই যে অনুভূতি জেগেছিল কা’বার প্রতি।তা ব্যক্ত করা কষ্টসাধ্য।বর্ণনার শব্দ নেই।
একরাতের ঘটনা; হজের মৌসুমে হাজিদের তাওয়াফ করা ও পবিত্র পাথর ‘হাজরে আসওয়াদ’কে ছোঁয়া; ওষ্ঠ দ্বারের স্পর্শ করবার জন্য একজনের উপর আরেকজন হুমড়ি খেয়ে পরছেন! দৃশ্যটি বুকে গিয়ে গাঁথল! একটুখানি ব্যথা অনুভব করলাম।সেই মুহূর্তেই চোখের সামনে ভেসে এলো মধ্য বয়সী কয়েকজন মানুষ।হালকা সবুজ কাপড় পরিহিত, লোকগুলো পাথরটিকে চুমু দিচ্ছেন এবং পাথরটির পাশেই দাঁড়িয়ে আছেন একজন বুজুর্গ ব্যক্তি।যিনি সাদা কাপড় পরিহিত, মাথায় পাগড়ি আর ‘তকিনুর’ পড়ে আছে; যা হুজুরদের প্রায় পড়তে দেখা যায়।হটাৎ তিনি আমার দিকে তাকালেন আর আহ্বান করলেন—
: কী, তুমিও কি চুমু খাবে?
কথাটা শুনেই ভয়ে আমার অন্তর কেঁপে উঠলো, বিছানা থেকে যেই পাথরটিকে স্পর্শ করার জন্য মাটিতে পা দিলাম, আমার সেই পা দু’টি ভয়ে কাঁপছে।তাঁরপরও অন্তরে এক অনন্য আশা নিয়ে উনার আহ্বানে এগিয়ে গেলাম!” পাথরটি ছিল বিশেষ একটি বাক্সের ভিতরে, যার রঙ ছিলো সবুজ, আমি দু’হাত বাড়িয়ে পাথরটিকে স্পর্শ করে সম্পূর্ণ শরীরে হাত বুলাতে লাগলাম।তখনি শুনতে পেলাম মসজিদ থেকে আজানের ধ্বনি আল্লাহ্ আকবর ‘আসসালাতু খাইরুম-মিনান নাউম।’নামাজের জন্য উঠে গেলাম।
আল্লাহ তায়ালা আমাদের সকলকে বাইতুল্লাহর মুসাফির হিসেবে কবুল করুন এবং নবীজীর রওজা মোবারক জিয়ারত করার তাওফিক দান করুন।(আমিন)
সাঈদা সিমি
লেখক : সুনামগঞ্জ।
তারিখ : ০৫-০৫-২০২৩ ইংরেজি