রবিবার, ০৫ মে ২০২৪, ০১:১১ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
বাবা মায়ের স্বপ্ন পূরন করা হলো না এনজিও কর্মী সঞ্জয়ের সারিয়াকান্দি উপজেলা পরিষদ নিবার্চন থেকে সরে দাঁড়ালেন চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুস সালাম ও আশিক রাজশাহীতে কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের মাঝে গ্লুকোজ বিতরণ রাজশাহীতে দৈনিক মানবিক বাংলাদেশ পত্রিকার প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন দুর্গাপুরে প্রশাসনকে ম্যানেজ করে রাতের আঁধারে আবাদি জমিতে পুকুর খনন মোহনপুরে মদ্যপান অবস্থায় বাইক আরোহী নিহত,আহত ২ মান্দায় মহান মে দিবস পালিত মে দিবসে খাবার স্যালাইন,ক্যাপ ও পানি বিতরণ করল রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড জাতীয় শ্রমিক লীগ রাজশাহী মহানগরের উদ্যোগে মহান মে দিবস পালন সারিয়াকান্দিতে দর্জি শ্রমিক ইউনিয়নের মহান মে দিবসে র‌্যালি ও শ্রমিক সমাবেশ
নোটিশ :
দেশের জনপ্রিয় সর্বাধুনিক নিয়ম-নীতি অনুসরণকৃত রাজশাহী কর্তৃক প্রকাশিত নতুনধারার অনলাইন নিউজ পোর্টাল ‘যমুনা প্রতিদিন ডট কম’

ধামইরহাটে জগদ্দল মহাবিহার খনন কাজের উদ্বোধন করলেন শহীদুজ্জামান সরকার এমপি

ইতিহাস সমৃদ্ধ বরেন্দ্র অঞ্চল নওগাঁর সীমান্তবর্তী উপজেলা ধামইরহাটে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর ও সাংস্কৃতিক বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে বাংলা সাহিত্যের সূতিকাগার জগদ্দল মহাবিহারের খনন কাজের উদ্বোধন করা হয়েছে।

শনিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১ টায় উপজেলার ধামইরহাট ইউনিয়নের জগদ্দল এলাকায় মহাবিহারের চতুর্থ পর্যায়ের খনন কাজের উদ্বোধন করেন নওগাঁর ধামইরহাট-পত্নীতলা আসনের এমপি মো. শহিদুজ্জামান সরকার।

প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, জগদ্দল মহাবিহারের প্রথম খনন কাজ শুরু হয় ১৯৯৬ সালে।মাঝে কিছুদিন বন্ধ থাকে।দ্বিতীয় বার ২০১২ সালের ১ ডিসেম্বর আবারও শুরু হয় খনন কাজ।এরপর তৃতীয় পর্যায়ে খনন শুরু হয় ২০১৩ সালে।চলে ২০১৪ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত।

এ সময় খনন করতে গিয়ে ছোট ছোট ব্রোঞ্জের বৌদ্ধমূর্তি, কালো পাথরের একটি অপরিচিত মূর্তি, পোড়ামাটির গুটিকা, পোড়ামাটির বল, প্রদীপ, অলংকৃত ইট, পাথর, পাথরের গুটিকাসহ প্রচুর লোহার পেরেক ও কাঁটা পাওয়া যায়।এছাড়াও সেখানে প্রচুর মৃৎপাত্রের টুকরাসহ প্রাচীন নিদর্শন আবিষ্কৃত হয়।

সাবেক অধ্যক্ষ ও ইতিহাসবিদ মো. শহিদুল ইসলাম জানান, শেষ কীর্তিমান রাজা রামপাল (১০৮২ থেকে ১২২৪) পাল রাজবংশের গৌরব পুনরুদ্ধার করার পর গৌড় থেকে দক্ষিনে সুসজ্জিত রামাবতী নগরীতে তার রাজধানী স্থানান্তর করেন এবং রামাবতী নগরীর সন্নিকটেই জগদ্দল মহাবিহারকে জ্ঞানচর্চার কেন্দ্রে রূপান্তরিত করেন।রাজা রামপালের সভাকবি সন্ধ্যাকর নন্দীর বর্ণনা ও অন্যান্য সূত্র থেকে এসব তথ্য জানা যায়।

সন্ধ্যাকর নন্দী লিখেছিলেন ‘মানুষের হৃদয়ের অনুরাগ বা শ্রদ্ধার কেন্দ্রস্থল জগদ্দল মহাবিহার’ জগদ্দল মহাবিহারে বৌদ্ধধর্ম চর্চা ও বৌদ্ধশাস্ত্র পাঠ ছাড়াও ব্যাকরন, শব্দবিদ্যা, হেতুবিদ্যা, চিকিৎসাবিদ্যা, চতুর্বেদ, সংখ্যাশাস্ত্র, সঙ্গীত, চিত্রকলা, মহাযান ও বজ্রযানশাস্ত্র, যোগশাস্ত্র, জ্যোতির্বিদ্যা ইত্যাদি বিষয়ে শিক্ষা দেওয়া হতো

জগদ্দল মহাবিহার সম্পর্কে তিনি আরও জানান, অত্যন্ত কৌতুহল উদ্দীপক ও চমকপ্রদক বিষয় এই যে, বাঙালি জাতির মাতৃভাষা বাঙলা ভাষার আদিরূপ চর্যাপদ রচিত হয়েছিল আমাদের এই জনপদে।

সোমপুর বিহার, জগদ্দল মহাবিহার, যোগীর ঘোপাসহ ধামইরহাট উপজেলার আশেপাশেই।চর্যাপদ রচনাকারী লুইপা, হাঁড়িপা, সবরীপা, কানুপাসহ অন্যান্য পদ রচনাকারী পন্ডিতগনের চারণভূমি ছিল আমাদের এই এলাকা।ধামইরহাটের আঞ্চলিক ভাষার সাথে চর্যাপদের সাথে কিছুটা সাদৃশ্য অতন্ত্য বিষ্ময়কর।বিষয়টি গবেষণার দাবি রাখে।

স্থানীয়দ ও সুধীজন সূত্রে জানা যায়, জগদ্দল মহাবিহারে লুইপার চর্যাপদ গীতির সংস্কৃত অনুবাদের একাধিক গ্রন্থ রচিত হয়েছিল।এছাড়াও এই বিদ্যাপীঠে সংস্কৃত ভাষায় অসংখ্য গ্রন্থ রচনা এবং তিব্বতীয় ভাষায় অনুবাদ কার্য সম্পাদিত হয়েছিল।

গ্রন্থগুলির মধ্যে সন্ধ্যাকর নন্দী রচিত ‘রামচরিতম্‘ এবং লুইপার চর্যাপদ গীতির অনুবাদ বিদ্যাধর বিরোচীত ‘সুভাষিতরত্নকোষ‘ ‘শান্তিদেবের শিক্ষাসমুচ্চয়‘ শ্রীধরদাসের সদুক্তিকরণমৃত সবিশেষ উল্লেখযোগ্য।বিহারের খনন কাজ সম্পন্ন করা হলে এর প্রকৃত ইতিহাস বের হয়ে আসবে বলে তাঁরা জানান।

রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের আঞ্চলিক পরিচালক ডঃ মোছা. নাহিদ সুলতানা বলেন, এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া।গবেষণার জন্য প্রাথমিক অবস্থায় এক মাসের জন্য এর খনন কাজ শুরু করা হয়েছে।পুরো কাজ সম্পন্ন করতে এখনো অনেক সময় প্রয়োজন।

প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের মহাপরিচালক চন্দন কুমার দে বলেন, এর আগে কিছু খনন কাজ হয়েছে।বাকি অংশটুকু খনন কাজের জন্য আমরা উদ্বোধন করলাম।এরপর ধাপে ধাপে পুরো বিহারের উৎখনন করে সংরক্ষণের মধ্য দিয়ে অন্যান্য বিহার যেমন, মহাস্থানের মত জনগণের জন্য উন্মুক্ত করা হবে।এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আজাহার আলী, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আরিফুল ইসলাম, মহাস্থান প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘরের কাষ্টোডিয়ান রাজিয়া সুলতানা, পাহাড়পুর প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘরের কাস্টোডিয়ান মুহাম্মদ ফজলুল করিম, রংপুর জাদুঘর তাজহাট জমিদার বাড়ির কাস্টোডিয়ান হাবিবুর রহমান, রাজশাহী ও রংপুর আঞ্চলিক রিসার্চ এসিস্ট্যান্ট এসএম হাসানাত বিন ইসলাম, রাজশাহী ও রংপুর অঞ্চলের সিনিয়র ড্রাষ্টসম্যান মোহাম্মদ জিয়াউল হায়দার, রাজশাহী ও রংপুর অঞ্চলের আলোকচিত্র মুদ্রাকর মো. দিদারুল আলম, ধামইরহাট থানার ওসি মো. মোজাম্মেল হক কাজী প্রমুখ।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

17 + 15 =


অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ

x