মিঠামইনে পুলিশের করা আলোচিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলার আসামি সাংবাদিক মোক্তার হোসেন গোলাপসহ ৩জনের বিরুদ্ধে আজ অভিযোগ (চার্জ) গঠনের শুনানি হবে ঢাকা সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতে।
মামলার বিবরন থেকে জানা গেছে, দেশ যখন করোনায় আতঙ্ক ঠিক তখন ইটালি প্রবাসী শেখ হোসাইন মোহাম্মদ ইকবাল তার নিজ বাড়ি ঘাগড়াতে এসে বিগত ২০২০ সালের ১৩ মার্চ মিঠামইন থানার পুলিশের বিরুদ্ধে ১ লাখ টাকা চাদা দাবির অভিযোগ এনে ভিডিও বার্তা ফেসবুকে ভাইরাল করে।ওই সময় কিশোরগঞ্জ-৪ আসনের এমপি রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক বিষয়টি অধিকতর তদন্তের দাবি করেন যমুনা টিভিতে।এ নিয়ে দেশজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়।
সেই সময় মিঠামইন থানার এস আই নজরুল ইসলাম ফেসবুকের ভিডিও বার্তাটি মিথ্যা দাবী করে বিগত ২০২০ সালের ২২ মার্চ মিঠামইন থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করে শেখ হোসাইন মোহাম্মদ ইকবাল এবং শেখ বাবু আহম্মেদ কে আসামি করে।পরে ঐ সময় পুলিশ শেখ ইকবাল কে গ্রেফতার করে।পরে পুলিশ আদালতের মাধ্যমে ৮দিনের রিমান্ডে আনে ইকবাল কে।
রিমান্ড শেষে শেখ ইকবাল আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি মুলক জবানবন্দি দেয় সাংবাদিক গোলাপ এর উপর দোষ চাপিয়ে।
ইকবাল তার জবানবন্দিতে উল্লেখ করে, সাংবাদিক গোলাপের কথায় একটা সাক্ষাৎ কার দেই।তখন গোলাপ বলে সাক্ষাৎকার হয়নি।পুলিশের বিরুদ্ধে সরাসরি অভিযোগ আনতে হবে।তখন গোলাপের প্ররোচনায় আমি এক পর্যায়ে দারোগার বিরুদ্ধে ১লাখ টাকা চাদা দাবির অভিযোগ করি একটি ভিডিও তে।”
এলাকার লোকজন জানান, ইকবালের ছোট ভাই শেখ ইফরান ও পুলিশের বিরুদ্ধে বক্তব্য দেয় গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে।অথচ পুলিশ ইফরানকে গ্রেফতার করেননি।অথচ শেখ ইকবালের জবানবন্দির পরপরই ২০২০সালের ১০মে সাংবাদিক গোলাপকে গ্রেফতার করা হয়।তিনি পাঁচ মাস ৫দিন কারাগারে ছিলেন।
তিনি এ প্রতিবেদককে জানান, আমি শুধু সাংবাদিকতার দায়িত্ব পালন করেছি মাত্র।এর বেশি কিছু না।শেখ ইকবালের বক্তব্যের একটি ভিডিও বার্তা ‘বিডি চ্যানেল ফোর’ এ সমপ্রচার করা হয়েছে।এ নিয়ে কোন মামলা হয়নি।শুধু ফেসবুকের ভিডিও বার্তাটিকে কেন্দ্রকরে মামলা করা হয়।পুলিশকে নিয়ে শেখ ইকবালের যে ভিডিও বার্তাটি ভাইরাল করা হয়েছে তা সাংবাদিক গোলাপের ধারন করা না দাবী করা হচ্ছে।
সাংবাদিক গোলাপ আরও জানান আমি ইকবালের রোষানলের শিকার হয়েছি।ইকবালের ভিডিওগুলো দেখতে একই রকম।সেই জন্য শেখ ইকবাল নিজের দোষ আড়াল করে আমার উপর দোষ চাপিয়ে দিয়েছে কৌশলে।এদিকে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বিষয় গুলো খতিয়ে দেখেননি কে দায়ী।শুধু ইকবালের দেয়া স্বীকারোক্তি বক্তব্যের উপর ভিত্তিতে সাংবাদিক মোক্তার হোসেন গোলাপ কে জড়িয়ে আদালতে চর্জশিট দাখিল করেছে।তবে ইকবালের একাধিক ভিডিও সম্পর্কে কোন মন্তব্য নেই চার্জশিটে।নেই মোবাইল ফরেনসিক রিপোর্টও।
বতর্মানে শেখ ইকবাল উচ্চ আদালতের জামিন নিয়ে ইটালিতে বসবাস করছেন।আজ ১২ ফেব্রুয়ারি ঢাকা সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতে মামলার বিচারের জন্য অভিযোগ গঠনের শুনানির দিন ধার্য করেছেন বিচারক।
সাংবাদিক গোলাপকে আইনী সহায়তা দিচ্ছেন বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম এর পক্ষের আইনজীবী কাউসার হোসাইন এবং শেখ বাবুর পক্ষে রয়েছেন এডভোকেট বিল্লাল মজুমদার।