বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ০৪:৩৭ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
রাজশাহীতে দৈনিক মানবিক বাংলাদেশ পত্রিকার প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন দুর্গাপুরে প্রশাসনকে ম্যানেজ করে রাতের আঁধারে আবাদি জমিতে পুকুর খনন মোহনপুরে মদ্যপান অবস্থায় বাইক আরোহী নিহত,আহত ২ মান্দায় মহান মে দিবস পালিত মে দিবসে খাবার স্যালাইন,ক্যাপ ও পানি বিতরণ করল রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড জাতীয় শ্রমিক লীগ রাজশাহী মহানগরের উদ্যোগে মহান মে দিবস পালন সারিয়াকান্দিতে দর্জি শ্রমিক ইউনিয়নের মহান মে দিবসে র‌্যালি ও শ্রমিক সমাবেশ সারিয়াকান্দিতে মে দিবস উপলক্ষে শ্রমিক দলের র‍্যালী ও শ্রমিক সমাবেশ সারিয়াকান্দিতে যমুনা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করায় ৫০ হাজার টাকা জরিমানা সারিয়াকান্দিতে প্রতিপক্ষের হুমকিতে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে কুতুবপুর গ্রামের বাসিন্দা
নোটিশ :
দেশের জনপ্রিয় সর্বাধুনিক নিয়ম-নীতি অনুসরণকৃত রাজশাহী কর্তৃক প্রকাশিত নতুনধারার অনলাইন নিউজ পোর্টাল ‘যমুনা প্রতিদিন ডট কম’

পত্নীতলায় গাছে গাছে শোভা ছড়াচ্ছে সজিনা ফুল

ঋতুবৈচিত্র্যের এই বাংলাদেশে একেক ঋতুতে একেক রূপ নিয়ে হাজির হয় প্রকৃতি।শীতের শেষ ও বসন্তের আগমনীতে গাছে গাছে শিমুল পলাশের সাথে সজিনা ফুলগুলো প্রকৃতিকে সাজিয়েছে আপন মহিমায়।

প্রাকৃতিক সৌন্দর্য নিয়ে সাদা ফুলের বর্ণিল সাজে সেজেছে উত্তরাঞ্চলের শষ্য ভাণ্ডার খ্যাত নওগাঁর পত্নীতলা উপজেলার সজিনা গাছগুলো।প্রকৃতি সেজেছে যেন তার আপন মহিমায়।

বাড়ির আনাচে-কানাচে ও রাস্তার পাশে থাকা সজিনার গাছগুলো থোকায় থোকায় সাদা ফুলে ভরে উঠেছে। মৌ মৌ করছে চারপাশ।সজিনা গাছের ডালের গোড়া থেকে মাথা পর্যন্ত ফুল আর ফুল।এ সময় সজিনা গাছের পাতা ঝরে পড়ে।তাই পাতা শুন্য ডালে থোকা থোকা সাদা ফুলের শোভা দেখে সকলেই মহিত হয়।

সজিনা বিশ্বের অন্যতম প্রয়োজনীয় একটি বৃক্ষ।অলৌকিক গাছ হিসেবে সজিনা পরিচিত।ইংরেজিতে সজিনার নাম ‘ড্রামস্ট্রিক’ যার অর্থ ঢোলের লাঠি।নামটি অদ্ভুত হলেও এটি অতিপ্রয়োজনীয় জীবন রক্ষাকারী সবজি জাতীয় একটি উদ্ভিদ।

এই সজিনা গাছ থেকে সবচেয়ে বেশি লাভবান হন বাড়ির গৃহিনীরা।তারাই এই গাছ গুলো বেশী রোপণ করে আর তারা সজিনা মৌসুমে সজিনা বিক্রি করে হাতের খরচ হিসেবে অর্থ সঞ্চয় করেন।

এছারা গাছের পাতা, ফুল, ফল, ব্যাকল ও শিকড় সবই মানুষের উপকারে আসে।সজিনার পুষ্টিগুণ অনেক বেশি। এ গাছের অনেক গুণ থাকায়, এ গাছকে যাদুর গাছ বলা হয়।কাঁচা সবুজ পাতা রান্না করে, ভর্ত্তা করে ও বড়া ভেজে সবজি হিসেবে খাওয়া যায়।কাঁচায় এর ফল সবজি করে আবার পাকলে বীজ বাদামের মতো ভেজে খাওয়া যায়।

সজিনা গাছের পাতাকে বলা হয় অলৌকিক পাতা।এটি পৃথিবীর সবচেয়ে পুষ্টিকর হার্ব।গবেষকরা সজিনা পাতাকে বলে থাকেন নিউট্রিশন্স সুপার ফুড এবং সজিনা গাছকে বলা হয় মিরাক্কেল ট্রি।এটির শাক হিসেবে ব্যবহৃত পাতা ভিটামিন এ-এর এক বিশাল উৎস।সজনের পাতা এবং ফল উভয়ের মধ্যেই বিপুল পরিমাণে পুষ্টি আছে।এতসব পুষ্টিগুণ একসাথে আছে বলেই এর মাধ্যমে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং জীবন ধারনের পুষ্টি দুটোই পাওয়া যায়।

উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ১১ টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় ৫০ হেক্টর জমিতে প্রায় ১০ হাজারেরও অধিক সজিনা গাছ আছে।প্রতি বাড়িতে কমপক্ষে ৩/৪ টি গাছ রয়েছে।এসব গাছ রাস্তার পাশে, বাড়ির পাশে ও ক্ষেতের আইলে, পতিত জমিতে লাগানো হয়।গাছে ফলনও বেশি হয়।যত্ন ছাড়াই এসব গাছ বেড়ে ওঠে।

বাংলাদেশে ২টি জাত আছে সজিনা ও নাজিনা।আবার সাজনের মতোই দেখতে আইখন্জনও আছে।সজিনার ফুল আসে জানুয়ারীতে আর নাজিনার ফুল আসে মার্চ মাস থেকে।তবে সব ফুল থেকে ফল হয় না।একটি থোকায় সর্বাধিক ১৫০টির মত ফুল ধরে।ফুল ৪০ সেমি. থেকে ৮০ সেমি. পর্যন্ত লম্বা হয়।ফুল ফুটার ২মাস পর ফল তোলা যায়।একটি বড় গাছে ৪০০ থেকে ৫০০ ফল ধরে।প্রতিটি ফলে ৩০-৪০টি বীজ হয়।

সাজনের কাঁচা লম্বা ফল সবজি হিসেবে খাওয়া হয়, পাতা খাওয়া হয় শাক হিসেবে।খরা সহিষ্ণু ও গ্রীষ্মপ্রধান অঞ্চলের একটি উদ্ভিদ।ডাল ও বীজের মাধ্যমে বংশবিস্তার করলেও আমাদের দেশে সাধারণত ডালের মাধ্যমে বা অঙ্গজ জননের মাধ্যমে বংশবিস্তার করানো হয়।গ্রীষ্মকাল বিশেষত এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি থেকে শেষ পর্যন্ত ডাল রোপণের উপযুক্ত সময়।

সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বাড়ীর আশেপাশে, রাস্তার দুপাশে, নদীর বেরীবাধে, পতিত জমিতে মওসুমের শুরুতেই ফুলে ফুলে ভরে গেছে সাজিনা গাছ।আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে সাজিনার ভাল ফলনের আশা করছেন সাজিনা চাষীরা।

আরও দেখা যায়,সম্পূর্ন বিনা পরিচর্চায় ইউনিয়নের প্রায় প্রত্যেক বাড়িতে কমবেশি সাজনে গাছ আছে।অনেকেই বাগানে বেড়ার খুটি হিসেবে সাজনের ডাল রোপন করে। পরে তা জীবন্ত গাছে পরিনত হয়ে সাজনে ধরা শুরু করে। রাস্তার পাশে পতিত জমিতে ডাল পুতে রেখে নিখরচায় চাষ হয়েছে অনেক সাজনে গাছ।

স্থানীয়রা জানান, বহুগুনে গুনান্বিত যাদুকরি সবজি সাজিনা।ওষধি গুনাগুনেভরা, সুস্বাদু, কোনো উৎপাদন খরচ নেই, অধিক লাভজনক এবং বাজারে ব্যাপক চাহিদা সম্পন্ন সবজি সাজিনা।শীতের রিক্ততা কাটিয়ে এখন ফুলে ফুলে ভরে গেছে সাজিনা গাছ।

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ প্রকাশ চন্দ্র সরকার বলেন, পুষ্টিগুন দিক থেকে সাজিনা অত্যান্ত উপকারী একটি সবজি।সজিনা লবণ সহিষ্ণু একটি ফসল। অন্যান্য সবজির ক্ষেত্রে পরিচর্যার প্রয়োজন হলেও অনেকটা পরিচর্যা ছাড়াই সাজিনার উৎপাদন সম্ভব।সজিনা অল্প দিনেই খাওয়ার উপযোগী হয় এবং বাজারজাত করা যায়।খেতে সু-স্বাদু ও বাজারে প্রচুর চাহিদা থাকায় সাজিনার আবাদ অত্যান্ত লাভজনক।সজিনা চাষে সাধারণ মানুষকে উৎসাহিত করতে উপজেলা কৃষি অফিসের উদ্যোগে প্রতিবছর সজিনার ডাল রোপণ করা হয়।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

13 − six =


অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ

x