নতুন প্রজন্মের মডেল ও চিত্রনায়িকা শাহ হুমায়রা হোসেন সুবাহ।জাগো নিউজের বিশেষ অনুষ্ঠান ‘জাগো তারকা’য় অতিথি হয়ে গিয়েছিলেন তিনি।বলেছেন নানা কথা।তার সাক্ষাৎকারের কিছু অংশ পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো। বিশেষ করে তার যারা ভক্ত রয়েছেন তাদের জন্য এই সাক্ষাতকারটি।
সুবাহ কেমন আছেন?
সুবাহ: জি, আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।
এই মুহূর্তে ভালো থাকাটাই হচ্ছে সবচেয়ে বড় আনন্দের কথা।আপনার সিনেমায় যাত্রার গল্পটি শুনতে চাই-
সুবাহ: আসলে যারা আমাকে চেনেন তারা তো জানেন-ই যে আমি কীভাবে চলচ্চিত্রে এসেছি।তবুও সবাইকে আবারও জানিয়ে দিচ্ছি।আমি ছোটবেলা থেকেই গান করতাম।আমার আব্বু আম্মু দুজনই গান পছন্দ করতেন। গানের পাশাপাশি আমি মডেলিংও করতাম।২০১৯ সালে নিজের কণ্ঠে একটি গান ‘চল মেলায় যাইরে’ সংগীতা চ্যানেল থেকে প্রকাশ করি।পাশাপাশি গানটিতে নাচের সঙ্গে মডেল হিসেবেও কাজ করি।গানটি রিলিজ হওয়ার পর দর্শক মহলে ব্যাপক সাড়া পাই।
এরপর তো সিনেমার পরিচালকরা আপনার সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেন-
সুবাহ: জ্বি, বাংলা সিনেমার অনেক ডিরেক্টর আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেন।তারা বলেন, ‘আপনি সিনেমায় প্লেব্যাক করেন।’ সেই সূত্র ধরেই সিনেমার গান রেকর্ডিংয়ের জন্য স্টুডিওতে যাওয়া।তারপর ধীরে ধীরে বিভিন্ন পরিচালকের সঙ্গে পরিচয় হয়।কেউ কেউ আমাকে ছবিতে অভিনয়ের কথা বলেন।আমি বিষয়টি আব্বু আম্মুর সঙ্গে আলাপ করি।আম্মু তো আগে থেকেই রাজি ছিলেন।কিন্তু আব্বুর সম্মতি ছিল না।পরে আব্বুকে ম্যানেজ করি।এই তো এভাবেই সিনেমায় আমার পথচলা শুরু।
আপনি পড়াশোনা কোথায় করছেন? আর আপনার গ্রামের বাড়ি কোথায়?
সুবাহ: আমার শৈশব এবং হাইস্কুল পর্যন্ত রংপুরে কেটেছে। পরে ঢাকায় এসে কলেজে ভর্তি হয়েছি।এখন একটি প্রাইভেট কলেজে ডিগ্রি করছি।
সিনেমায় কাজ করার ক্ষেত্রে পরিবার থেকে কি আপনার কোনো বাধা ছিল?
সুবাহ: ভালো যত বিষয় আছে প্রতিটি ক্ষেত্রেই আমার আম্মু আমাকে সাপোর্ট করতেন।বলতেন, তোমার যেটা ভালো লাগে, তুমি সেটা করো।আম্মুর কারণেই গান শিখতে পেরেছি,নাচ শিখতে পেরেছি।আব্বু কখনো চিন্তাই করেনি যে আমি সিনেমায় আসব।অভিনয় করব।কিন্তু যখন সিনেমার অফার পেলাম তখন আর না করেনি।শুধু বলেছিলেন সামাজিক গল্পের ছবিতে কাজ করো।
সিনেমায় অভিনয়ের সময় পরিচালক যেভাবে অভিনয় করতে বলে সেটা কি আপনি পেরেছিলেন?
সুবাহ: আমি তো আসলে কোনো নাটক বা থিয়েটারের অভিজ্ঞতা নিয়ে সিনেমায় অভিনয় করতে আসিনি।তাই প্রথম প্রথম একটু বুঝতে সমস্যা হচ্ছিল।যেমন ইমোশনাল দৃশ্য করার সময় পরিচালক রফিক স্যার বার বার গ্লিসারিন লাগিয়ে কাঁদতে বলেছিলেন।কিন্তু আমার কান্না আসেনি। স্যার রেগে যাচ্ছিলেন পরে অবশ্য গ্লিসারিন ছাড়াই আমি কান্না করে আমার ইমোশনটা বের করেছি।‘বসন্ত বিকেল’ ছবিতে আমি যতবার কেঁদেছি সবগুলোই ছিল আসল চোখের জল।কোনো গ্লিসারিন ছিল না।
প্রথমে জাতীয় দলের ক্রিকেটার নাসির হোসাইনের সঙ্গে প্রেম দিয়ে শুরু করে গায়ক ইলিয়াস হোসাইনের সঙ্গে বিচ্ছেদ ও মামলা।
সুবাহ: নাসিরের সঙ্গে প্রেমটি ইমোশনালি হয়ে গিয়েছিল। পরে বিয়ে করাটা ছিল আমার ভুল সিদ্ধান্ত।আসলে এ বিষয়গুলো আমাকে অনেক পিছিয়ে দিয়েছে।ভুল তো মানুষই করে; তবে আমার তরফ থেকে আমি ১০০ ভাগ ঠিক ছিলাম।হাতের তালি তো আর এক হাতে বাজে না। কে চায় নিজের সংসার নষ্ট হোক।আমিও সাধারণ আর দশটা মেয়ের মতো সংসারই করতে চেয়েছিলাম।কিন্তু আমার পিঠ পেছনে ঠেকে গিয়েছিল।তাই বাধ্য হয়েই এ সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম।বড্ড বেশি আবেগী হলে যা হয়।
আপনার অভিনয় এবং ক্যারিয়ার নিয়ে সামনের পরিকল্পনা কি?
সুবাহ: আমার হাতে অনেক সিনেমার অফার ছিল। কিন্তু ওইসব ঝামেলার কারণে নিজের ক্যারিয়ার সামনে ভালোভাবে এগিয়ে নিতে পারিনি।তবে এতটুকু বলতে পারি যে,আমি সুবাহ বুড়ি হওয়া পর্যন্ত সিনেমায় কাজ করে যাব।
ধন্যবাদ আপনাকে এতক্ষণ আমাদের সময় দেওয়ার জন্য।
সুবাহ: আমার প্রিয় দর্শকদেরও ধন্যবাদ জানাই।সবাই ভালো থাকবেন।