নড়াইলের কালিয়া উপজেলার মির্জাপুর গ্রামের কাশেম সরদার (৩৯) এর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ঢাকা অফিসের ১৯৭৪ ও ১৯৭৫ সালের বালাম বইসহ বিপুল পরিমাণে জাল দলিল ও নকল সরঞ্জাম জব্দ করেছে উপজেলা প্রাশাসন।
মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।এ সময় অভিযুক্ত কাশেম সরদার পরিবারের সবাইকে নিয়ে পালিয়ে যায়।
কালিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আফরিন জাহান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
কাশেম সরদার ওই গ্রামের কাউসার সরদারের ছেলে।
জানা গেছে, কাশেম সরদার জাল দলিল প্রস্তুত চক্রের অন্যতম সদস্য। সে দীর্ঘদিন ধরে দেশের বিভিন্ন ভূমি ও সেটেলমেন্ট অফিসের নথি চুরি করে পুরাতন স্ট্যাম্প ও জমির দলিল প্রস্তুত কাজে ব্যবহৃত আনুষঙ্গিক জিনিসপত্র ব্যবহার করে জাল দলিল প্রস্ততের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে।
তাছাড়া কালিয়া পৌরসভার গোবিন্দ নগরের স্থায়ী বাসিন্দা প্রফুল্ল বিশ্বাস নামক ব্যক্তির ১ একর ৮৮ শতক জমি প্রতারণার মাধ্যমে নিজ নামে দলিল করে নিয়েছে। দীর্ঘ অভিযানে অভিযুক্ত কাশেমের বাড়ি থেকে বেআইনিভাবে সংরক্ষিত সরকারি অতি গুরুত্বপূর্ণ ১৯৭৪ ও ১৯৭৫ সালের ঢাকার ভূমি রেজিস্ট্রি অফিসের একটি বালাম বই নম্বর ৫১২+৫, জমির মূল দলিল মোট ১৭টি এর মধ্যে ভারতীয় স্ট্যাম্পে ৫টি, বাংলাদেশি স্ট্যাম্পে ৪টি ও পাকিস্তানি স্ট্যাম্পে ৮টি।
এছাড়াও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (যশোর) এর স্বাক্ষর ও সিল সম্বলিত ভারতীয় স্ট্যাম্পে ২টি রেজিস্ট্রি ডকুমেন্ট, ব্যবহারযোগ্য বিভিন্ন মূল্যের বাংলাদেশি, পাকিস্তানি ও ভারতীয় ষ্ট্যাম্প, পাকিস্তানি স্ট্যাম্পে লিখিত বয়নামা- ৫টি, সার্টিফাইড দলিল-১০টি, কালিয়া উপজেলা ভূমি অফিসের সেল সার্টিফিকেট এর মূল নথি-১১টি এবং মুক্তিযোদ্ধা প্রতিমন্ত্রী ও সচিবের স্বাক্ষরসহ সাময়িক মুক্তিযোদ্ধা সনদ-১টিসহ ব্রিটিশ, ভারতীয় ও বাংলাদেশের অসংখ্য কোর্ট ফি, বিভিন্ন জমির খতিয়ান, পাকিস্তানি বাইকেল-৭টি ও দাখিলাসহ বিভিন্ন ধরনের ব্যক্তিগত ডকুমেন্ট জব্দ করা হয়।
এ বিষয়ে কালিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আফরিন জাহান বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে ঢাকা থেকে হারিয়ে যাওয়া বালাম বই ও বাংলাদেশি, ভারতীয় ও পাকিস্তানি বিভিন্ন মূল্যের ষ্ট্যাম্প ও কোর্ট ফি জব্দ করা হয়েছে।
এসময় অপরাধী পালিয়ে যাওয়ায় তার বিরুদ্ধে মামলার জন্য কালিয়া থানার ওসিকে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।
কালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ তাসমীম আলম মুঠোফোনে বলেন,এ বিষয়ে মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।