ঈদের বাকি আর মাত্র কয়েকদিন।স্বজনদের সাথে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করতে বাড়ি ফিরছে রাজধানীবাসী।সড়ক ও রেলপথে বাড়ছে যাত্রী চাপ।স্বস্তির খবর হলো, যাত্রীচাপ বাড়লেও ঈদযাত্রায় মহাসড়কে নেই যানজট, নেই দুর্ভোগ।টার্মিনালে সেরকম ভিড় ছিল না।আসন ফাঁকা রেখেই ছেড়েছে অনেকে বাস।
বাস টার্মিনালে ভিড় করা মানুষগুলোর গন্তব্য ভিন্ন।তবে উদ্দেশ্য একটাই, ঈদে প্রিয়জনের কাছে ফেরা।
রাজধানীর গাবতলী বাস টার্মিনালে এক যাত্রী বলেন, ‘অফিস ছুটি হয়ে গিয়েছে।আর কাউন্টারে টিকিট কাটতে গিয়ে কোনো বিড়ম্বনা হয়নি।এখন অপেক্ষা করছি বাসের জন্য।’
এক পরিবহন কর্মী বলেন, ‘যাত্রী নেই।ঈদের বাজার হিসেবে যাত্রীর চাপ কম।’
টাঙ্গাইলে খুব বেশি যানবাহনের চাপ নেই ঢাকা টাঙ্গাইল বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে।
রোববার মহাসড়কে বিভিন্ন পয়েন্টে ঘুরে দেখা যায়, স্বাভাবিকের তুলনায় কিছু যানবাহন বেশি চলাচল করলেও মহাসড়কে কোনো যানজট দেখা যায়নি।এতে ভোগান্তি ছাড়াই নির্বিঘ্নে বাড়ি যেতে পারছে উত্তর বঙ্গের মানুষ।
পুলিশ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে মহাসড়কে গাড়ির চাপ বাড়তে থাকে।শুক্রবার রাতে এ চাপ আরো বৃদ্ধি পায়।তবে শনিবার রাতে যানবাহনের চাপ আবার কিছুটা কমে আসে।এতে নির্বিঘ্নেই যাতায়াত করা যাচ্ছে।
বঙ্গবন্ধু সেতুর টোল প্লাজা সূত্র জানায়, গত ২৪ ঘন্টায় সেতু দিয়ে ২৫ হাজার ৮৪টি যানবাহন পার হয়েছে।গত শুক্রবার এই সংখ্যা ছিল ২৮ হাজার ৭১০।
সিরাজগঞ্জে বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম গোলচত্বর থেকে উত্তর ও দক্ষিণ বঙ্গের পরিবহন চলছে স্বাভাবিক গতিতে।স্বাভাবিক সময়ে এই মহাসড়ক দিয়ে দিনে ১০ থেকে ২০ হাজার পরিবহন চলাচল করলেও ঈদ আসলে এই সংখ্যা বেড়ে হয় দ্বিগুণ।
স্থানীয়রা বলছেন, সাউথ এশিয়া সাবরিজিওনাল ইকোনমিক কো-অপারেশন-২ (সাসেক) প্রকল্পের অধীনে মহাসড়কটি চার লেনে উন্নীত করা এবং গুরুত্বপূর্ণ স্থান ও বাজার এলাকায় আন্ডারপাস–ওভারপাস নির্মাণ করায় এবার ভোগান্তি কমেছে।
হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, ‘গত শনিবার এলেঙ্গা–রংপুর মহাসড়কের সিরাজগঞ্জ অংশে ৩টি ওভারপাস এবং একটি সেতু খুলে দেওয়া হয়েছে, ফলে যানজট নেই।এবারের ঈদ যাত্রা অন্যান্য বছরের তুলনায় হবে অনেক আরাম দায়ক এবং আনন্দের।’
ঈদের আগ মুহুর্তেও যাত্রীবাহী যানবাহনের কোনো চাপ নেই মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া–দৌলতদিয়া এবং আরিচা–কাজিরহাট নৌরুট ফেরিঘাটে।এতে ভোগান্তি ছাড়াই স্বস্তিতে ঘরে ফিরছেন দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা কার্যালয়ের উপমহাব্যবস্থাপক শাহ মো. খালেদ নেওয়াজ বলেন, ‘পুর্ব প্রস্তুতি অনুয়ায়ী পাটুরিয়া এবং আরিচা ফেরিঘাটে মোট ২০টি ফেরি স্ট্যান্ডবাই রাখা হয়েছে।আশানুরুপ যানবাহন না আসায় ফেরিগুলো ঘাটে নোঙ্গর করে রাখা হয়েছে।আর যারা আসছে তারা অপেক্ষায় না থেকে স্বস্তিতে ফেরি পার হয়ে যাচ্ছে।’
শাহ মো. খালেদ নেওয়াজ বলেন, ‘এখন ঘাটে যানবাহনের চাপ না থাকলেও গার্মেন্ট মালিকরা শ্রমিকদের ছুটি দিলে কিছুটা যাত্রী ও যানবাহনের চাপ বাড়তে পারে।’
তবে ভিন্ন চিত্র ট্রেনে।দিনভর ভিড় ছিলো কমলাপুর স্টেশনে।ধূমকেতু, দ্রুতযান ও কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেসসহ কয়েকটি ট্রেন ছাড়ে দেরিতে।ভোগান্তিতে পড়ে যাত্রীরা।টিকিট দেখিয়ে স্টেশনে ঢুকতে হয়েছে যাত্রীদের।ফলে, ট্রেনে অতিরিক্ত যাত্রী উঠার সুযোগ ছিলো না।
রেলওয়ের বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা শাহ্ আলম কিরণ শিশির বলেন, ‘মোট ৬৮ জোড়া ট্রেন যাতায়াত করবে এর মধ্যে ক্যান্টনমেন্ট থেকে দুই জোড়া যাতায়াত করবে।নীল সাগর ও চিলাহাটি।এটা বিমানবন্দরে যাত্রা বিরতি করবে না।আমাদের অতিরিক্ত কোচ আছে, অতিরিক্ত ইঞ্জিনও রাখা আছে।’