গত সোমবার (১৮ মার্চ) খুলনা জেলার তেরখাদা উপজেলার পাতলা গ্রামের একটি গমের ক্ষেত থেকে ৪টি বন বিড়ালের বাচ্চা উদ্ধার করেন মোঃ জসীম লস্কার।বিষয়টি একই গ্রামের রিয়ন মোল্যা জানার পরে তিনি তেরখাদা উপজেলার অন্যতম সেচ্চাসেবী সংগঠন তেরখাদা ইয়াংস্টার কমিউনিটি এর সভাপতি লস্কার ইসতিয়াক আহমেদ (লিমন) কে জানান।লিমন লস্কর বিষয়টি জানার পরে গতকাল মাগরিবের নামাজের পরে উক্ত এলাকায় উপস্থিত হয়ে যে ক্ষেত থেকে বন বিড়াল সাবক গুলোকে উদ্ধার করা হয় গহিন বিলের ভিতরে সেই ক্ষেতে গিয়ে শাবক গুলোকে অবমুক্ত করে দেন।অবমুক্তকরণের সময় ক্ষেতে মা বন বিড়ালের উপস্থিতি দৃশ্যমান হয়, যার কারনে উদ্ধারকারী সহ সংশ্লিষ্ট সবায় নিশ্চিত হয় যে শাবক গুলো নিরাপদে তার মায়ের কাছে পৌছে যাবে।
এ বিষয়ে লিমন লস্কর বলেন৷ সেচ্ছাসেবী সংগঠন তেরখাদা ইয়াংস্টার কমিউনি অন্যান্য সামাজিক কর্মকান্ডের পাশাপাশি পরিবেশ ও বন্যপ্রানী সংরক্ষণের বিষয়ে তেরখাদা উপজেলাব্যাপী নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে।ফলশ্রুতিতে বিগত সময় থেকে এই অঞ্চলে বর্তমানে বন্যপ্রানী ও পরিবেশ সংরক্ষণের গুরুত্ব সম্পর্কে মানুষ বেশ সচেতন হয়েছে যার কারনে বিভিন্ন সময়ে কোনো বন্যপ্রানী উদ্ধারের প্রয়োজনে তেরখাদা ইয়াংস্টার কমিউনিটি কে মানুষ অবহিত করে সহযোগিতা চাইছেন।
তিনি বলেন, বন বিভাগ খুলনা থেকে সংগঠনের কয়েকজন কর্মী প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হয়েছেন তাছাড়া যে কোনো উদ্ধার কাজে খুলনা বন বিভাগ সাথে আমরা সরাসরি যোগাযোগ করি, তাদের অবহিত করি এবং তাদের পরামর্শ ও দিকনির্দেশনা অনুযায়ী প্রাথমিক ব্যাবস্থা গ্রহন করি।তিনি উক্ত কাজের জন্য জসীম লস্কার, রিওন মোল্যা ও অভি শেখের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ভালোবাসা জ্ঞাপন করেন।
বন বিড়াল একটি উপকারী প্রাণী, বন বিড়ালের খাবারের বড় অংশই হচ্ছে ঘাসফড়িং জাতীয় বড় পোকা এবং ইঁদুর।যেগুলো আমাদের ক্ষেত খামারে থাকে এবং ফসলের ক্ষতিসাধন করে।তাই বন বিড়াল গৃহপালিত হাঁস, মুরগি, কবুতর ধরে নিয়ে খেয়ে যতটুকু ক্ষতি করে তার থেকে অনেক বেশি উপকার সাধন করে থাকে পার্শ্ববর্তী কৃষিজমিগুলোর।এরা নিশাচর।গাছে উপর উঠে রাতের আধারে এরা ছোট পাখি বা পাখির ডিম, ছানা প্রভৃতি শিকার করে খায়।এক লাফে কয়েক ফুট পৌঁছে যেতে পারে।দিনের বেলায় এরা লতাপাতাঘেরা বড় গাছের কোটরে ঘুমায় বা তন্দ্রাচ্ছন্ন থাকে।প্রজনন মৌসুমে গাছের কোটরে দু’ থেকে চারটি ছানা প্রসব করে।
বাংলাদেশের ১৯৭৪ ও ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনের তফসিল-১ অনুযায়ী এ প্রজাতিটি সংরক্ষিত।বন বিড়াল শিকার বাংলাদেশ, চীন, ভারত, মিয়ানমার, পাকিস্তান, তাজিকিস্তান, থাইল্যান্ড এবং তুরস্কে নিষিদ্ধ, কিন্তু ভুটান, জর্জিয়া, লাওস, লেবানন, মিয়ানমার, নেপাল, শ্রীলঙ্কা ও ভিয়েতনামের মধ্যে সুরক্ষিত এলাকার বাইরে আইনি সুরক্ষা নেই।