মাইকে ‘স্বাদের লাউ বানাইলো মোরে বৈরাগী’ গান বাজিয়ে ইঞ্জিন চালিত পাওয়ার টিলারে ফেরী করে বিক্রি হচ্ছে লাউ।
সোমবার (১৮ মার্চ) ঈশ্বরদী শহরের বিভিন্ন রাস্তা ঘুরে ঘুরে এভাবেই একটি ১৫ টাকা আর ৩০ টাকা জোড়ায় লাউ বিক্রি করতে দেখা গেছে।গান বাজিয়ে মাইকিং করে লাউ বিক্রির ঘটনা প্রথম হওয়ায় অনেকেই কৌতুহল ভরে ভীড় করে লাউয়ের গাড়ির সামনে।কারণ, বাজারে যেখানে লাউ ২৫-৩০ টাকার নীচে মেলে না, সেখানে ১০-১৫ টাকায় লাউ বিক্রি দেখে অনেকেই হতবাক হয়েছেন।
শীতের শেষ, তাই শীতকালীন সবজির দাম কমে যাচ্ছে।তবে এবারে শীতের শেষে সবজির দাম যতটা কমে যাওয়ার কথা ছিলো, ততটা কমেনি।রোজার মধ্যে লাউ-বেগুনসহ অনেক সবজির দাম কমে গেছে।তবে হাট-বাজারগুলোতে ২৫-৩০ টাকার নীচে লাউ পাওয়া যায় না।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পাইকারি বাজারে লাউ কম দামে বিক্রি হলেও খুচরা দোকানদাররা বিক্রি করছে দ্বিগুণেরও বেশী দামে।দাম কমে যাওয়ার বিষয়টি সাধারণ ক্রেতারা না জানার কারণে কেউ কেউ এখনও ৪০-৫০ দামেও লাউ কিনছেন।
ঈশ্বরদীর সাহাপুর, সাঁড়া, সলিমপুর ও লক্ষীকুন্ডার চরাঞ্চলে এবারে বিপুল পরিমাণে লাউয়ের উৎপাদন হয়েছে।
অন্যান্য সবজির দাম বেশী থাকায় কৃষকরাও এতাদিন ভালো দামে লাউ বিক্রি করেছেন।শীত পেরিয়ে রোজা শুরু হলে অন্যান্য সবজির মতো লাউয়ের দামও অনেক কমে গেছে।
গ্রামাঞ্চলের পাইকারি হাটে এবং মাঠে লাউ বিক্রি হচ্ছে শতকরা ৯০০ থেকে ১,০০০ টাকা দামে।অর্থাৎ প্রতি পিসের দাম ৯ থেকে ১০ টাকা।
মাইকিং করে আওতাপাড়া গ্রামের লাউ বিক্রেতা আজাহার বলেন, আলহাজ্ব মোড়ের চর এলাকা থেকে শতকরা ১,০০০ থেকে ১,১০০ টাকা দরে কিনে এনেছি।গাড়ি ভাড়া দিয়ে পড়ছে ১২-১৩ টাকা।প্রতিটি ১৫ টাকা করে এক জোড়া ৩০ টাকায় বিক্রি করছি।
লক্ষীকুন্ডার চরে এক বিঘা জমিতে লাউ চাষ করেছেন আমিনুল ইসলাম।সব মিলিয়ে খরচ হয়েছে ২০-২৫ হাজার টাকা।
রবিবার আওতাপাড়া পাইকারি আড়তে তিনি ১০ টাকা দরে ৭০টি লাউ বিক্রি করেন।দুপুর পর্যন্ত বসে থেকেও আর ক্রেতা পাননি।
চাষি মশিউর মৌসুমের শুরুর দিকে দেড়-দুই কেজি ওজনের একেকটি লাউ বিক্রি করেছেন ৪০-৪৫ টাকায়।মাঝামাঝি সময়ে তা কমে ২৫-৩৫ টাকায় দাঁড়ায়।শেষ সময়ে ৮-১০ টাকায় বিক্রি করছেন।
ঈশ্বরদী বাজারে প্রতিটি লাউয়ের দাম বিক্রেতারা রাখছিলেন ২০-২৫ টাকা।সবজি বিক্রেতা আবুল হোসেন বলেন, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সব ধরনের শাকসবজির দাম চড়া ছিল।শুক্রবার থেকে কোনো কোনো সবজির দামে ধস নামে।আম বাগানের পাইকারি বাজার থেকে সকালে ১০ টাকা দরে লাউ কিনে খুচরা ২০-২৫ টাকায় বিক্রি করছেন।
তিনি আরও বলেন, আমদানি বেশি।সেই তুলনায় ক্রেতা নেই।এ কারণে কম দামেও পণ্য বিক্রি হচ্ছে না।
বাজারে লাউসহ সবজির সরবরাহের তুলনায় ক্রেতা না থাকায় দাম কমেছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মিতা সরকার।
তিনি বলেন, উপজেলায় ১৫০ হেক্টর জমিতে লাউয়ের চাষ হয়েছে।শীত কমে যাওয়ায় লাউয়ের চাহিদাও কমছে।লাউ চাষিরা এর আগে ভালো দামে লাউ বিক্রি করেছেন বলে জানান তিনি।