খান মেহেদী :-
বাংলাদেশ হবে দুর্নীতিমুক্ত একটা দেশ সে স্বপ্ন দেখার সাহস যেন হারিয়ে যাচ্ছে ক্রমাগত।দেশের মাথাপিছু আয় বাড়ছে, কাঠামোগত উন্নয়ন হচ্ছে তবে মানবিকতা আর মেরুদণ্ডহীন হয়ে পড়ছে সমাজ।এখন চারদিকে দূর্নীতিবাজ ক্ষমতাধরদের জয়জয়কার।অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বললে টুটি চেপে ধরে অন্যায়কারীরা।যার প্রমান দেশর মানুষ অনেক দেখেছে সাংবাদিক সত্য প্রকাশ করতে গিয়ে মিথ্যা মামলা, হত্যা, হামলার শিকার আর কারাবরণের ঘটনা অহরহ।প্রতিদিন সাংবাদিক নির্যাতন আমাদের দেশে একটা ধারাবাহী রুপ ধারন করেছে।দেশেকে দুর্নীতি মুক্ত করার কথা বলা হয় সব সময়। তবে দূর্নীতি মুক্ত কিভাবে হবে তা কেউ বলে না।বরং দুর্নীতির খবর প্রকাশ হলে হেনস্তা হয়ে যেতে হয় জেলে।এরপরে ও কি বলতে হবে, ভালো আছে বাংলাদেশে!
অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা এ দেশের প্রেক্ষাপটে অচল।কারণ এখানে সত্য বলা যায় না।সত্যের গভীরে যাওয়ার পথকে রুদ্ধ করে রেখেছে কিছু অন্যায়কারী দুর্নীতিবাজ ব্যক্তিরা কালে কালে।আর এদের ক্ষমতা এতটাই শক্তিশালী যে সরকার বদল হলেও তারা থাকে অনড়।কারণ দেশের চালিকাশক্তি যে আমলা নামধারী তারাই।সরকারের কাঁধে ভর করে এরা কেবল রং পাল্টায় সময় ও সুযোগ বুঝে।
একজন সাংবাদিক খবরের সন্ধানে নানা পন্থা অবলম্বন করে।কখনো সোর্স ব্যবহার করে।আবার নিজেও ঘটনার অন্তরালের ঘটনা জানে এবং প্রমাণ জোগাড় করে নিজস্ব কায়দায়।আর এসব পন্থায় যদি সাংবাদিকদের কাল হয়ে দারায় তাহলে পেশাগত দায়িত্ববোধ কোথায় গিয়ে দারায়।তারপরও সাংবাদিকদের চার চোখ খোলা রেখে তথ্য সংগ্রহ করার সাহস সবার আছে।
সাংবাদিকরা পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে ঝুঁকির মধ্যে পড়েন।এই ঝুঁকি এড়াতে অর্থাৎ নির্যাতন প্রতিরোধে সাংবাদিকদের এগিয়ে আসতে হবে।মতভেদ ও বিভেদ ভুলে গিয়ে নিজেদের পেশাগত ঐক্য গড়ে তুলতে হবে।জাতির বিবেক বলে পরিচিত সমাজের দর্পণ হিসেবে দেশবাসীর কাছে সাংবাদিকদের গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে।সমাজের অন্যায় অবিচারসহ সমস্ত ব্যাধি সাংবাদিকরাই চিহ্নিত করেন।সেগুলো তারা তুলে ধরেন লেখনির মাধ্যমে।কিন্তু এই কাজ করতে গিয়ে সাংবাদিকরা যেভাবে নির্যাতিত হচ্ছেন তাতে ভবিষ্যতে এই পেশাজীবীরা কতটুকু স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারবেন সে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।এর উপর রয়েছে জীবনের ঝুঁকি।এগুলো মেনে নিয়ে কতদিন তারা সত্যের পথে চলতে পারবেন এটাও এখন বড় প্রশ্ন।সাংবাদিকতাকে যারা পেশা হিসেবে নিয়েছেন তাদের হাজারো সমস্যার ভিতর দিয়ে যেতে হয়।
সাংবাদিকদের এই দুর্গতি থেকে রক্ষায় অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান এগিয়ে আসার আগে সাংবাদিকদেরই এগিয়ে আসতে হবে।তবে এ কথা না বললেই নয়, সংবাদপত্র এবং সাংবাদিকতা পেশায় কিছুটা অবক্ষয় ঘটেছে।বিশেষ করে মফস্বল সাংবাদিকতায়।তা যদি যথা সময়ে রোধ করা সম্ভব না হয় তাহলে এ পেশার সাথে যারা জড়িত তাদের অবস্থান কোথায় গিয়ে ঠেকবে বলা মুশকিল।
অনেক সাংবাদিক অর্থনৈতিক কারণে নৈতিকতা বিসর্জন দিতে বাধ্য হচ্ছেন।অবক্ষয় হচ্ছে।ফলে সাংবাদিকদের প্রতি জনমনে এক ধরণের নেতিবাচক মনোভাব গড়ে উঠছে।সমাজের অসৎ দুর্নীতিবাজ লোকেরা তখন উক্ত সাংবাদিককে নিজেদের প্রয়োজনে ব্যবহার করার সুযোগ পাচ্ছেন।বর্তমান সামাজিক অবস্থার প্রেক্ষাপটে দেখা যায় অধিকাংশ পেশা নৈতিক অবক্ষয়ের ব্যাধিত জর্জরিত।সেখানে সাংবাদিকতা সৎ পেশা হিসেবে টিকে থাকা কষ্টকর।
আগে সাংবাদিকতায় নিয়োগ দেয়া হতো যোগ্যতার ভিত্তিতে।কিন্তু বর্তমানে অধিকাংশ সাংবাদিক নিয়োগ পান সম্পাদককে বিভিন্নভাবে ম্যানেজ করে।অনেক সাংবাদিক রয়েছেন কোনো রকম একটি পরিচয়পত্র সংগ্রহ করতে পারলেই নেমে পড়েন অবৈধ আয়ের উৎসবের সন্ধানে।তাই গানমাধ্যম রক্ষা করতে সাংবাদিকদের আরো নির্ভীক হয়ে উঠতে হবে।