মরিয়ম মারিয়া এই সময়ের অন্যতম ব্যস্ততম শিল্পী।গান নিয়ে তার পরিকল্পনা যেমন অনেক ঠিক তেমনি তার ভক্ত এবং শ্রোতার সংখ্যাও অনেক।বর্তমান প্রজন্মের জনপ্রিয় এই সংগীত শিল্পীর গল্প নিয়েই আমাদের আজকের এই আয়োজন।
বর্তমান ব্যস্ততা কি নিয়ে যাচ্ছে?
বর্তমান ব্যস্ততা আসলে প্রোগ্রাম নিয়ে।যেহেতু এখন সামার টাইম।সামার প্রায় শেষের দিকে তো এতদিন বেশ কিছু প্রোগ্রাম ছিল বিভিন্ন পথমেলা, পিঠা উৎসব, বিভিন্ন জেলার পিকনিক বনভোজনের অনুষ্ঠান বিভিন্ন অফিসিয়াল অনুষ্ঠান তো যাই হোক আর পাশাপাশি যেহেতু কাজ নিয়ে আছি।সেদিকেও ব্যস্ত সময় কাটাতে হয়।পরিবার কে সময় দিয়ে সবকিছু নিয়েই ব্যস্ত আছি।
গানের শুরুর গল্পটা জানতে চাই?
গানের শুরুটা নিয়ে আসলে অনেক গল্প বলেছি।এর আগে বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তারপরও সংক্ষেপে বলি।আমার মায়ের পরিবার যেহেতু একটু সংস্কৃতিমনা, তো ছোটবেলায় অনেক গান শুনতাম।আমার জন্ম যশোরে সে কারণে কলকাতার একটা ছোঁয়া ছিল গানের ক্ষেত্রে।ছোটবেলা থেকেই লতা মঙ্গেশকর আশা ভোঁসলে মান্না দের গান শুনে আমার বড় হওয়া তো আমি এদের গান গান শুনে অনুসরণ করতাম কিভাবে উনারা গিয়েছেন এগুলো রপ্ত করতাম।ঈদের সময়ই একবার আমার কাজিন আমার গান শুনতে চাইলো। তখন আমি কিশোর কুমারের একটা গান গাওয়ার পর খুবই অবাক হলেন এবং বললেন যে খালাম্মা ওকে শিশু একাডেমিতে ভর্তি করে দেন যশোরে তাহলে ও আমার মনে হয় ভালো করবে।আসলে সেই থেকেই শেখাটা শুরু।মায়ের অনুপ্রেরণায়, পরিবারের অনুপ্রেরণায় ছোট বোনের অনুপ্রেরণা সহ আমার বর্তমানে আমার সন্তান আমার স্বামী সবার উৎসাহে আসলে এই পর্যন্ত আসা।আমার হাতে খড়ি ছিল শিশু একাডেমীতে লিয়াকত আলী খান স্যার এর কাছে।শাহ মোহাম্মদ মোরশেদ ওস্তাদ মোশাররফ হোসেন।আমি শিল্পকলা এবং সর্বশেষ সুর বিতান সংগীত একাডেমী থেকে তালিম নিয়ে ঢাকায় ওস্তাদ সঞ্জীবদের কাছে উচ্চাঙ্গ সংগীতে তালিম নেই।
আপনার প্রিয় শিল্পী কে?
আমার প্রিয় শিল্পী অনেকেই দেশে এবং বিদেশে লতা মঙ্গেশকর, আশা ভোঁসলে, মান্না দে, কিশোর কুমার, বাংলাদেশের সামিনা চৌধুরী সাবিনা ইয়াসমিন।যাদের গান শুনে আসলে আমি এখনো নিজেকে তৈরি করি।
জীবনে সবচাইতে বেশী অনুপ্রেরণা পেয়েছেন কার থেকে?
জীবনের সবচাইতে বেশি অনুপ্রেরণা পেয়েছি আমার মায়ের কাছ থেকে, আমার পরিবারের সবার কাছ থেকে, কাজিনদের কাছ থেকে, ছোট বোন, আমার সন্তান, আমার হাজব্যান্ড সবার কাছে আমি কৃতজ্ঞ।আমার বন্ধু যারা ছিল স্কুল সহপাঠী এখনো সবার কাছ থেকে অনুপ্রেরণা পাই।
কর্মজীবনে আপনি টিভি চ্যানেল থেকে শুরু করে অনেক জায়গায় কাজ করেছেন।বর্তমানে আমেরিকাতে রিয়েল স্টেট নিয়ে কাজ করছেন।সেই অভিজ্ঞতা জানতে চাই?
আসলে আমি পড়াশোনা শেষ করেই মিডিয়াতে আসি।প্রথমে ছিলাম এস টিভি ইউএস চ্যানেলে প্রোগ্রাম হিসেবে তারপর চলে আসি একুশে টেলিভিশনে সেখানে প্রায় সাত বছর ছিলাম দেন গান গাওয়ার উদ্দেশ্যে ইউএসএ তে আসা-যাওয়া।পুরো ফ্যামিলি নিয়ে এখন এখানে বসবাস।তো এখানে এখন একটা জব করছি আমার বেশ ভালই লাগে।রিয়েল এস্টেটের জবটা আসলে আমার নতুন অভিজ্ঞতা এবং এটাকে পেশা হিসেবেই নিতে চাই।সঙ্গীত সাধনাতো থাকবেই।
নতুন গান কবে রিলিজ করবে?
ইউএসএ তে আসার আগে কিছু গান কমপ্লিট করে এসেছিলাম অডিও।আসলে সেগুলোর ভিডিও শেষ করতে পারিনি এখানে করার ইচ্ছা আছে।আশা করছি নতুন বছরে নতুন গানগুলি রিলিজ পাবে বেশ কিছু গান তার মধ্যে আছে কিছু আধুনিক এবং কিছু ধামাইল সিলেটি গান।
অবসর সময়ে কি করতে ভালোবাসেন?
অবসরে আসলে বাসায় থাকি বাচ্চাদেরকে সময় দেই।গান করি।বেড়াতে যাই বাইরে সুন্দর কিছু জায়গায়।বাইরে খাই জাস্ট পরিবারকে সময় দেই।
প্রবাসে স্থায়ী হবার পেছনের গল্প জানতে চাই…
আমি ২০১৪ সাল থেকে আমেরিকায় আসা যাওয়া করি।কিন্তু কখনো ইচ্ছা ছিল না এখানেই বসবাস করবো কিন্তু একটা সময় চিন্তা করলাম যে সন্তানদের ভবিষ্যৎ পড়াশোনা এসব চিন্তা করেই আসলে চলে আসা।
তরুণ যারা শিল্পী হতে চান তাদের উদ্দ্যেশ্যে কিছু বলুন…
আসলে তরুণদের সম্পর্কে আমার তেমন কিছু বলার নেই। বর্তমান সময়ে আসলে সবাই খুব অল্পতেই তারকা খ্যাতি পেতে চান।ইউটিউব চ্যানেল থাকায় অল্প কিছু গান রিলিজ করেই রিয়েলিটি শো মাধ্যমে বের হয়ে তারা নিজেকে প্রতিষ্ঠিত ভাবতে চান।কিন্তু তারপরও দেখা যায় যে এদের মধ্যে অনেকেই ঝরে যান।কারণ চর্চার অভাব সংগীত অনেকেরই প্রতিভা থাকে কিন্তু সেটাকে চর্চা করে এগিয়ে নিয়ে যেতে হয়।আসলে জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত যদি আপনি সুরে গান গাইতে চান চর্চার কোন বিকল্প নেই।
গান নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী করছেন?
গান নিয়ে আসলে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা আমার সেই ভাবে নেই বর্তমানটাকে বেশি প্রাধান্য দেই।ইচ্ছা আছে অনেক ভালো কিছু কাজ করব, যেগুলো আমার শুভাকাঙ্ক্ষী আমার পরিবার আমার কে যারা ভালোবাসেন তারা শুনবেন অ্যাপ্রিশিয়েট করবেন।ইচ্ছা আছে ভালো কিছু কাজ করার মনে রাখার জন্য যদি সুস্থ থাকি সুন্দরভাবে চর্চার মাধ্যমে নিজেকে তৈরি রাখতে পারি তাহলে অবশ্যই ভালো কিছু কাজ করব এবং সবার মনে অন্তত জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত থাকতে পারি সেই ভাবে কাজ করে যাব।