রবিবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৪, ১১:৫৪ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
রাজশাহীতে বিশ্ব মান দিবসের কর্মসূচি ফ্যাসিবাদ শাসন শেষ হলেও রাজশাহীর হাফেজ মুকিতের জেল খাটা শেষ হয়নি জকিগঞ্জে জিডি করার ৭ ঘন্টার মধ্যে কিশোর উদ্ধার ভূরুঙ্গামারীতে হযরত মুহাম্মদ (সা.) কে নিয়ে কটূক্তি ও গালি : যুবক গ্রেপ্তার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে : বরিশাল রেঞ্জ ডিআইজি মা ইলিশ রক্ষায় প্রথম দিনেই উপকূলে কঠোর অবস্থানে প্রশাসন গলাচিপায় আন্তর্জাতিক দূর্যোগ প্রশমন দিবস উপলক্ষে র‍্যালী ও সভা অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস উপলক্ষে রায়পুরায় র‍্যালি ও আলোচনা সভা কুয়াকাটায় তীব্র গরমে পৌর বিএনপির উদ্যোগে পর্যটকদের মাঝে সুপেয় পানি বিতরণ রাজশাহীতে প্রতিমা বিসর্জনে শেষ হলো শারদীয় দুর্গোৎসব
নোটিশ :
দেশের জনপ্রিয় সর্বাধুনিক নিয়ম-নীতি অনুসরণকৃত রাজশাহী কর্তৃক প্রকাশিত নতুনধারার অনলাইন নিউজ পোর্টাল ‘যমুনা প্রতিদিন ডট কম’

আন্তর্জাতিক নৃত্যশিল্পী মোহাম্মদ দ্বীপ এর নৃত্য জীবনের গল্প নিয়ে আলোচনা

আন্তর্জাতিক নৃত্যশিল্পী মোহাম্মদ দ্বীপ এর নৃত্য জীবনের গল্প নিয়ে আলোচনা

আজকে আমরা তাঁর নৃত্য জীবনের কিছু কথা শুনবো।মুঠোফোনে কথা হয় তাঁর সাথে।

তিনি জানালেন আমি নৃত্যকে এত ভালোবাসি যে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আমি নৃত্যশিল্পের সাথে থাকতে চাই।গান ও আমার খুব ভালো লাগে তবে রবীন্দ্র সংগীত আমি ভবিষৎ এ করবো আরও কিছুদিন তালিম নিবো তারপর শুরু করবো।তবে নৃত্যশিল্পকে বলা হয় সকল শিল্পের মা অর্থাৎ প্রধান।তাই ছোটবেলা থেকেই নৃত্য ছিল আমার ধ্যান ও খেয়াল কিন্তু পেশা হিসেবে নিবো এটা সাহস হতো না।যাই হোক আমি সৌভাগ্যবান একজন পুরুষ নৃত্যশিল্পী যিনি ঝুটি প্রথাকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে নিজে একাই ৩০ বছর প্রফেশনালভাবে নৃত্য নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি দেশে ও বিদেশে ।

আমি আগেও বলেছি আমি মগবাজার (প্রজাপতি) খেলাঘর আসর থেকে গান ও নৃত্যের উপর দুই বছরের কোর্স সম্পন্ন করি। সেখানে আমার গুরু ছিলেন শ্রদ্ধেয়া জলি ম্যাম ও পরে কিছুদিন শ্রদ্ধেয় আমানুল হক স্যারের সান্নিধ্য লাভ করি (১৯৮৪-৮৫)।খেলাঘর আসর থেকে প্রচুর অনুষ্ঠান করি এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো “ এমিলির গোয়েন্দা বাহিনীতে দলীয় শিশুশিল্পী হিসেবে অংশগ্রহন করা।“এমিলির গোয়েন্দা বাহিনী” শিশুদের জন্য নির্মিত প্রথম সিনেমা।আমি কোনদিন নৃত্য ছাড়িনি। একটানা ৩০ বছরের অধিক সময় ধরে কখনও দ্বৈত, দলীয় বা একক নৃত্যে পরিবেশন করে আসছি।এরপর আবারও প্রাতিষ্ঠানিক নৃত্যশিক্ষা শুরু করি ১৯৯২-১৯৯৪ বুলবুল ললিতকলা একাডেমী মতিঝিল ও পরে ওয়াইজঘাট শাখায়। এখানে আমার শ্রদ্ধেয় গুরুজন ছিলেন হুমায়ুন স্যার,রঞ্জিত রায় স্যার, কার্তিক সিনহা স্যার, রাহিজা খানম ঝুনু ও জিনাৎ জাহান।মরহুমা জিনাৎ জাহানের কাছে আমি তিন বছর কত্থকের অর্থাৎ উচ্চাঙ্গ নৃত্যর তালিম নিয়ে থাকি।

তাছাড়া আমি বেনুকা ললিতকলা একাডেমিতে এক বছরের একটু বেশী মরহুম গোলাম মোস্তফা স্যারের তত্বাবধানে নৃত্য শিক্ষা লাভ করি।আমি শ্রদ্ধেয় শফিক স্যারের কাছে মুভিটোন প্রতিষ্ঠান থেকে প্রায় দুইবছর মডার্ন নাচ শিক্ষা গ্রহন করি। এছাড়াও শ্রদ্ধেয়া দীপা খন্দকারের কাছে তাঁর দিব্য একাডেমীতে কিছুদিন নৃত্যের উপর প্রশিক্ষন গ্রহন করেছিলেন।সকল শিক্ষকের কাছে উচ্চাঙ্গ , লোকনৃত্য , সাধারন নৃত্য ও মডার্ন নৃত্যের উপর দীর্ঘদিন প্রশিক্ষন নিয়েছি।২০০৮ সালে বাংলাদেশ টেলিভিশন এ তালিকাভুক্তির জন্য পরীক্ষা দিয়েছিলেন।তিনি ভারতেশ্বরী হোম নৃত্য প্রশিক্ষিকা নিভা রায়ের তত্বাবধানে ছিলেন বহু বছর।আমি বাংলাদেশ নৃত্যশিল্পী সংস্থার সদস্য ছিলাম অনেক বছর।

তিনি বাংলাদেশ টেলিভিশন এ নৃত্য করার পাশাপাশি অনেক অনুষ্ঠানের জন্য নৃত্য পরিচালনা করি।বাংলাদেশের মোটামুটি সব স্যাটেলাইট চ্যানেল গুলোতে নৃত্য পরিবেশন করেছি ২০১০ সাল পর্যন্ত ।বাংলাদেশে আমার  নৃত্য শিক্ষার একাডেমী ছিল ঢাকা (বসুন্ধারা), সানারপাড় ও গাজীপুর অসংখ্য নৃত্যশিল্পী তিনি তৈরী করেছেন আমার অনেক ছাত্র ও ছাত্রীর সাথে এখনও যোগাযোগ আছে। তাঁর একজন প্রিয় ছাত্র শাহিন খাঁন কম্পিউটার সাইন্স নিয়ে পড়ালেখা শেষ করে ভালো চাকুরী করছেন বাংলাদেশে গেলে সব সময় তার সাথে দেখা করতে আসে ও নিয়মিত যোগাযোগ রাখে।

এরপর ২০১১ সালে তিনি লন্ডনে এসে নৃত্যশিল্পী হিসেবে কাজ করা শুরু করি।লন্ডনে তিনি আবারও একজন নৃত্যগুরুর কাছে কিছুদিন উচ্চাঙ্গ নৃত্যর উপর তালিম নেই।

আমি একমাত্র পুরুষ নৃত্যশিল্পী যিনি একক নৃত্যশিলপী হিসেবে বেশী পরিচিত।তবে লন্ডনে আসার পর থেকে নমিতা দে তাকে নৃত্যশিল্পটা ধরে রাখার জন্য সব সময় পাশে ছিলেন। এছাড়া ও এম এম ডব্লিও নামের একটি চ্যারিটি সংস্থা ও তার পরিচালক জনাব আনিস সাহেব তাকে অনেকভাবেই নৃত্য করার জন্য সহযোগীতা করেছেন ও করে যাচ্ছেন।প্রথমে তিনি চ্যারিটি সংস্থা মাধ্যমে একটি সংস্হা গড়ে তোলেন যা টাওয়ার হ্যামলেটের সহযোগীতায় দুই বছর নৃত্যর উপর প্রশিক্ষন দিয়েছিলেন। বর্তমানে তিনি ও নমিতা দে মিলে একটি সংস্হা পরিচালনা করছেন যা লন্ডনে ইতিমধ্যে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। নদী মিউজিক এন্ড ড্যান্স মিডিয়া ইউ, কে নামে পরিচিত।

২০২২ সালে আন্তর্জাতিক দুবাই নৃত্য প্রতিযোগীতায় অংশগ্রহন করে সেমি ক্ল্যাসিক্যাল ও লোকনৃত্য দুইটি দ্বিতীয় স্থান পেয়ে রানার্স আপ এর গৌরব অর্জন করি ইন্ডিয়ান হাই কমিশনের যৌথ প্রয়োজনায়। এটি তাঁর জীবনের দুটি বড় প্রাপ্তি বলে আমার।

এছাড়া ও তিনি বাংলাদেশের অনেক জেলা থেকে কাজের স্বীকৃতি স্বরুপ সম্মাননা পেয়েছেন।তার মধ্যে গোপালগঞ্জ এর পদাতিক নৃত্য একাডেমী সম্মাননা, সিরাজগঞ্জ এর আনন্দধারা নৃত্যকলা সম্মাননা,বিশ্ববাংলা সংস্থার সম্মাননা, অক্সফোর্ড সুফি আলিয়া সম্মাননা, বঙ্গবন্ধু ৯৯ তম জন্মবারষিকী , চেতনায় বাংলাদেশ, অনুকুল ঠাকুরের সংস্হা থেকে , স্বদেশ বাংলাদেশ ও আমার জীবনের অনেক বড় একটি অর্জন কুইন্স কোম্পানী পদক যা আমি পেরেছিলাম ৬৫ টি দেশের শিল্পীদের মধ্য আমাকে দেওয়া হয়েছিল “কন্ট্রিবিউশন অব কলেজ লাইফ” পদক।

যেহেতু আমার মা আমাকে কোনদিন প্রতিযোগীতায় অংশগ্রহন করতে দিতেন না।যার কারনে নতুনকুঁড়ির মত প্রতিযোগীতায় আমি অংশগ্রহন করতে পারি নাই।তবে বাংলাদেশ একবার প্রতিযোগীতায় অংশগ্রহন করেছিলাম আমার বোনের ছেলে-মেয়েদের অনুরোধে তা ছিল ঢাকা- গাজীপুর ও ময়মনসিং যৌথভাবে করেছিল।আমি সেখানে সাধারন নৃত্য দ্বীতিয় হয়েছিলাম এর পর দুবাই প্রতিযোগীতায় অংশগ্রহন করে রানার্স আপ হই।এটা আমার আন্তর্জাতিক দুইটি পদক আসে। এগুলো আমার উল্লেখযোগ্য পদক। এছাড়া ও অনেক পদকের জন্য আমি মনোনীত হয়েছি তা পর্যায়ক্রমে গ্রহন করব।

আমি বাংলাদেশে অনেক অনুষ্ঠান করেছি তা পুর্বেই বলেছি। লন্ডনে লেবার পার্টির সবচেয়ে বড় দুটি অনুষ্ঠান আমাকে নৃত্য করার সুযোগ আমার হয়েছিল।এ ছাড়া ও আমি নৃত্য শিল্পী হিসেবে হাউস অব কমন্সে দাওয়াত পেয়েছি ও দিয়েছি। বাংলাদেশ বইমেলা দশম ও একাদশ বইমেলা লন্ডন আমি নৃত্য পরিবেশন করেছি। বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক পরিষদ ইউ, কে ও সম্মিলিত সাংস্কৃতিক পরিষদের বহু অনুষ্ঠান এ আমি নৃত্য পরিবেশন করে ব্যাপক প্রশংসনীয় হয়েছিলাম।বাংলাদেশ মেডিক্যাল সমিতি ও ইউরোপের মেডিক্যাল এসোসিয়েশন এ নৃত্য প্রদর্শন করে ভুয়শি প্রশংসা পেয়েছেন।তবে আমি দেশে ও বিদেশে কয়েকটি নৃত্যনাট্য অংশগ্রহন করেছিলাম।তার মধ্যে সুর্যমুখী নদী, শ্যামা , চন্ডলিকা প্রমুখ।আমি নিজে পরিচালনা করেছি লন্ডনে শ্যামা ও মহিষাসুর বধ।১০০ টির মত খন্ড নৃত্য তিনি করেছেন । এ ছাড়া বহু দলীয় ও দ্বৈত নৃত্য তিনি কোরিওগ্রাফি করেছেন।

একজন পুরুষ নৃত্যশিল্পী হিসেবে এককভাবে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তিনিই প্রথম বৃটিশ বাংলাদেশী নৃত্যশিল্পী একটানা ৩০ বছর যাবত ইউরোপসহ , এশিয়াতে প্রফেশনালী কাজ করে যাচ্ছেন।তিনি সব সময় অসহায় নৃত্যশিল্পীদের পাশে থাকেন নিজস্ব তহবিল থেকে সহযোগীতা করে থাকেন। নৃত্য শিল্পীদের নৃত্য নিয়ে পড়ালেখা ও পি, এইচ, ডি করতে চান যারা তারা মোহাম্মদ দ্বীপের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। তিনি দেশে ও বিদেশে মঞ্চ নাটকেও অভিনয় করছেন নিয়মিতভাবে।তাঁর শেষ অভিনয় হয় ২০২৩ কাজী নজরুলের জীবনী নিয়ে ইংরেজীতে যা দর্শকদের কাছে খুবই প্রসংশিত হয়েছিল।

আমরা পরবর্তীতে তাঁর অন্যান্য পেশার কথা তুলে ধরবো।তাঁর সব কাজগুলো ইউটিউব এ আছে ও ফেইসবুকে নিয়মিত দিয়ে থাকেন।সকলের কাছে সব সময় তিনি দোয়া কামনা করেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ

x
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com