শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১০:২৯ পূর্বাহ্ন
নোটিশ :
দেশের জনপ্রিয় সর্বাধুনিক নিয়ম-নীতি অনুসরণকৃত রাজশাহী কর্তৃক প্রকাশিত নতুনধারার অনলাইন নিউজ পোর্টাল ‘যমুনা প্রতিদিন ডট কম’

সুন্দরগঞ্জে সরকারিভাবে এক কেজি ধানও সংগ্রহ হয়নি ৫৮দিনে

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় সরকারিভাবে ধান ও চাল সংগ্রহ অভিযান শুরু হওয়ার ৫৮দিন অতিবাহিত হলেও এক কেজি ধান সংগ্রহ হয়নি। চাল সংগ্রহ হয়েছে ২০০ মেট্রিক টন।

চলতি অর্থবছরে উপজেলার সুবিধাভোগিদের মাঝে চাল সরবরাহ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। সরকারিভাবে নির্ধারিত বাজার দরের চেয়ে কৃষকের উৎপাদন খরচ ও খোলা বাজারে ধান এবং চালের বাজার দর বেশি হওয়ায় কৃষক ও মিল মালিকরা সরকারি খাদ্য গুদামে ধান ও চাল সরবরাহ করছেন না।

উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অধিদপ্তরের কার্যালয় হতে জানা গেছে, গত বছরের ১৭ নভেম্বর উপজেলায় ধান ও চাল সংগ্রহ অভিযান শুরু করা হয়। সংগ্রহ অভিযান চলবে আগামি ২৮ ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত।

উপজেলার দুটি সরকারি খাদ্য গুদাম সুন্দরগঞ্জ ও বামনডাঙ্গায় ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ১ হাজার ৬৬৭ মেট্রিক টন। যার প্রতি কেজি ধানের সরকারি বাজার দর ২৮ টাকা। চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ১ হাজার ১৮ মেটিক টন। প্রতি কেজি চালের বাজার দর ৪২ টাকা।

গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত দুটি খাদ্য গুদামে এক কেজি ধানও সংগ্রহ হয়নি এবং চাল সংগ্রহ হয়েছে ২০০ মেট্রিক টন।

উপজেলায় একটি অটোরাইস মিলসহ ৮৩টি মিল চালু থাকলেও চুক্তিবদ্ধ হয়েছে মাত্র ৩৯টি মিল। বাকী মিলগুলো চুক্তিবদ্ধ হয়নি।

উপজেলার দক্ষিণ ধুমাইটারী গ্রামের কৃষক বাবু মিয়া জানান, তিনি প্রতি বছর সরকারি খাদ্য গুদামে ধান সরবরাহ করে আসছিলেন। চলতি মৌসুমে সরকারিভাবে প্রতি কেজি ধানের বাজার দর নির্ধারণ করেছে ২৮ টাকা। কিন্তু বর্তমানে খোলা বাজারে প্রতি কেজি ধান বিক্রি হচ্ছে ৩০ হতে ৩২ টাকা দরে। উৎপাদন খরচের চেয়ে সরকারি বাজার দর কম হওয়ায় খাদ্য গুদামে ধান সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না।

উপজেলার পৌর বাজারের ধান ব্যবসায়ী ফারুক মিয়া জানান, সরকারি বাজার দরের চেয়ে খোলা বাজারের প্রতি কেজি ধান ২ হতে ৪ টাকা বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে। তাই চলতি মৌসুমে মিলে ধান সরবরাহ করছেন না ব্যবসায়ীরা। লোকসান করে কোন ব্যবসায়ী ব্যবসা করবেন না।

উপজেলা চাল কল মিল মালিক সমিতির সভাপতি শাহাদৎ হোসেন আনন্দ জানান, করোনার কারণে দীর্ঘ চার বছর ধরে মিল মালিকদের ব্যবসা প্রায় বন্ধের পথে। এরপর চলতি মৌসুমে সরকারিভাবে ধান ও চালের যে বাজার দর নির্ধারন করা হয়েছে, সে বাজার দর মোতাবেক কোন মিল মালিক ধান ও চাল সরবরাহ করতে পারবেন না। কারণ কৃষকের উৎপাদন খরচের চেয়ে ধানের সরকারি বাজার দর অনেক কম। এছাড়া বর্তমান বাজারের চালের কেজি ৫৫ হতে ৬০ টাকা। অথচ সরকারিভাবে ক্রয়মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৪২ টাকা। সে কারণে চাল সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না।

উপজেলার একমাত্র হোপ এ্যাগ্রো লিমিটেড অটোরাইস মিল ইউনিট শাখার ব্যবস্থাপনা পরিচালক নজরুল ইসলাম জানান, ধান ও চাল সরবরাহের জন্য সরকারের সাথে চুক্তিবদ্ধ হলেও বাজার দর কম হওয়ায় তা সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না। যার কারণে মিল মালিকরা ধান ও চাল সরবরাহ করতে নারাজ।

উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক হাবিবুর রহমান জানান, কৃষকের উৎপাদন খরর ও খোলা বাজারের চেয়ে সরকারিভাবে নির্ধারণকৃত ধান ও চালের বাজার দর কম হওয়ায় ধান ও চাল সংগ্রহ হচ্ছে না। গত বছরের ১৭ নভেম্বর ধান ও চাল সংগ্রহ অভিযান শুরু করা হলেও আজ পর্যন্ত এক কেজি ধান সংগ্রহ হয়নি।চাল সংগ্রহ হয়েছে মাত্র ২০০ মিট্রিক টন।নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ধান ও চাল সংগ্রহের লক্ষমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হবে না।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

3 × one =


অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ

x