দিগন্তজুড়ে হলুদ ফুলের সমারোহ সূর্যের আলো সরিষার ফুলের উপর পড়লে চোখে যেনো ধাধা লেগে যায়।রাজশাহীর তানোর উপজেলার যেদিকে চোখ যায় সেদিকেই শুধু সরিষা ফুলের হলুদের সমারোহ।মাঠ জুড়ে সরিষার হলুদ ফুলের গন্ধে মৌ মৌ করে মধু সংগ্রহ করতে উড়তে দেখা যাচ্ছে মৌমাছির দলকে।
উপজেলার সরনজাই ইউনিয়নের মানিককন্যা ব্লকের তাঁতিহাটি মাঠ ঘুরে দেখা গেছে,এবার আলু চাষের পাশাপাশি সরিষা চাষও হয়েছে ব্যাপক।অথচ তানোরে প্রায় বিলুপ্তির পথে বসেছিলো সরিষা চাষ।কিন্তু হঠাৎ করে এবার তানোর উপজেলাজুড়ে রেকর্ড পরিমাণ জমিতে হয়েছে সরিষা চাষ।যা এর আগে কোন দিন দেখা যায়নি।
সরিষা চাষীদের সাথে কথা বলে জানা যায়,এক বিঘা জমিতে প্রায় ৬ থেকে ৭ মন করে সরিষার ফলন হয়ে থাকে।এতে কৃষকের খরচ হচ্ছে ২ থেকে ৩হাজার টাকা করে।আর ফলন পাচ্ছেন ৭ থেকে ৮ মন।
তাঁতিহাটি গ্রামের সরিষা চাষী নাসিম উদ্দিন ও কাউসার ইসলাম জানান,তারা এবার একেকজন সরিষা চাষ করেছেন ৬থেকে ৭ বিঘা।তুলনামূলক খরচও হয়েছে অনেক কম। সরিষা চাষে বেশি সেচ বা সার পটাশও লাগেনা। কম খরচে আবাদ করে কৃষক লাভবান হয় তা হচ্ছে সরিষা চাষ।
তানোর উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে,এবছর রেকর্ড পরিমাণ জমিতে সরিষা চাষ করেছেন কৃষক।যা এর আগে কোন দিন এতো পরিমাণে সরিষা চাষ করা হয়নি এ উপজেলায়।উপজেলায় প্রায় ৬ হাজার হেক্টর জমিতে সরিষা উৎপাদন করা হয়েছে।
মানিককন্যা ও শুকদেবপুর ব্লকের উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ একিন আলী জানান,অন্যান্য বছরের চেয়ে এ বছরে বেশি সরিষা চাষ করার বিশেষ কারন হচ্ছে,সরকারি কৃষি প্রনোদনার ১ কেজি সরিষার বীজ,১০ কেজি এমওপি ও ১০ কেজি ডিএপি সার দেওয়ায় কৃষকরা উদ্বুদ্ধ হয়ে সরিষা চাষ করছে এবং আমরা সার্বক্ষণিকভাবে কৃষকদের পাশে থেকে কাজ করছি।সরকার যে ভোজ্য তেলের চাহিদা পূরণের জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করছে কৃষকের মাধ্যমে আমরা সেটা বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করছি।
তানোর উপজেলা কৃষি অফিসার সাইফুল্লাহ আহম্মেদ জানান,সরিষা চাষ একটি লাভজনক আবাদ,এ আবাদে কৃষকের একেবারে কম খরচ হয়ে থাকে।অন্য বছরের তুলনায় এবছর ব্যাপক পরিমাণে এ উপজেলায় সরিষা চাষ করেছেন কৃষকরা।আশা করা যাচ্ছে,সরিষা চাষ করে এবার কৃষক ভালো লাভবান হবেন এবং আগামীতে সরিষা চাষে আরো কৃষক আগ্রহী হবে বলে মনে করেন তিনি।