পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় স্বামীর সাথে অভিমান করে বাবার বাড়িতে চলে গেছে অভিমানী স্ত্রী।
বউ পাগল স্বামী মো. হোসাইন মাহমুদ (২২) হচ্ছেন কলাপাড়া থানার ডাবলুগঞ্জ ইউনিয়নের খাপরাভাংগা গ্রামের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের আবু সালেহ হাওলাদারের ছেলে।
তার স্ত্রী মোসা. শিরিনা বেগম (১৯) হচ্ছেন একই থানার লতাচাবলি ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের চর গঙ্গামতি গ্রামের মো. সেলিম হাওলাদারের মেয়ে।
জানা যায়,হোসাইন মাহমুদের সাথে প্রায় ১ বছর আগে মোসা. শিরিনা বেগমের সাথে পারিবারিকভাবে বিবাহ হয়। বিয়ের পর তাদের দাম্পত্য জীবন সুখে শান্তিতে চলছিল। কিন্তু বিয়ের পর থেকেই উচ্চাভিলাসি শিরিনা বেগম স্বামী হোসাইন মাহমুদের কাছে একের পর এক বায়না ধরতে থাকে।আর বউ পাগল হোসাইন মাহমুদ তার সাধ্য অনুযায়ী স্ত্রীর আবদারগুলো পূরণের চেষ্টা করে যায়।যখনই হোসাইন মাহমুদ তার স্ত্রীর কোন কথা রাখতে অপরাগতা প্রকাশ করেন তখনই সামান্য বিষয় নিয়েই মনোমালিন্য ও ঝগড়ার পরিবেশ সৃষ্টি করে স্ত্রী শিরিনা বেগম। তার চাহিদা দিন দিন বাড়তেই থাকে।এতে হোসাইন মাহমুদের পরিবারের লোকজনও অতিষ্ট হয়ে উঠেছিল।
৬ মাস আগে ডাক্তার দেখানোর কথা বলে শিরিনা বেগম তার বাবার বাড়ি গিয়ে গা ঢাকা দেয়।হোসাইন মাহমুদ তার স্ত্রীকে আনতে শশুর বাড়িতে গেলেও খালি হাতে ফিরতে হয় তাকে। বউয়ের প্রতি ভালোবাসার অগাধ বিশ্বাস থাকার কারণে হোসাইন মাহমুদ এখন পাগলপ্রায়।
এ বিষয়ে হোসাইন মাহমুদ বলেন,আমার বৌকে আমি অনেক ভালোবাসি।তার সকল আবদার পূরণের চেষ্টা করে গেছি আমি।কিন্তু সে তার বাবার বাড়িতে আমার সাথে অভিমান করে চলে গেছে।আমি তাকে ফিরিয়ে আনতে গেলে আমার শ্বশুর বাড়ির লোকজন তাকে আমার সাথে আসতে দেয় নাই।তারা আমার স্ত্রীর নামে জায়গা জমি এবং আলাদা বাড়ি করে দিতে বলে। নতুবা আমার সাথে সে আর ঘর করবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে। আমি একজন গরিব জেলে। আমার আয় কম আমি জায়গা জমি ও নতুন বাড়ি করার মত এত টাকা কোথায় পাব। একটু ধৈর্য্য ধরলে আমি আমার স্ত্রীকে সব করে দেব। এখন আপনারা ওকে আমার বাড়িতে ফিরিয়ে দেন। নতুবা আমার বাঁচা মরা একই কথা। আমি তাকে ছাড়া বাঁচব না- এই কথা বলে হোসাইন মাহমুদ কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।
এ বিষয়ে হোসাইন মাহমুদের বাবা আবু সালেহ হাওলাদার বলেন, আমার বউ পাগল ছেলেটার কথা চিন্তা করে আমরা অনেকবার আমার পুত্রবধূকে আনতে গিয়েছি।কিন্তু তারা শিরিনা বেগমকে আমাদের সাথে দেয় নি। অনেক দিন ধইরা আমাদের ফোনও ধরে না।শুনেছি শিরিনা বেগমকে ধনী ছেলে দেখে কোথায় যেন আবার বিবাহ দিবে। আমি এখন আমার ছেলের দিকে তাকাতে পারছি না। খাওয়া দাওয়া প্রায় বন্ধ করে দিয়েছে। আমার ছেলের বউ যদি আমার বেয়াই আমাদের এখানে দেওয়ার ব্যবস্থা করে তাহলে আমার ছেলেটা বাঁচবে। নতুবা ও মরেই যাবে।
এ বিষয়ে শিরিনা বেগম বলেন,আমার বিবাহের পর থেকে আমি ৬ মাস শ্বশুর বাড়ি ছিলাম।তার ঘরে আমার অশান্তির শেষ নাই।আমার বাবা এখন যা ভালো মনে করবেন আমি তাই করব। বাবা-মায়ের কথা ছাড়া আমি কোন কাজ করতে পারব না।
এ ব্যাপারে শিরিনা বেগমের বাবা সেলিম হাওলাদার বলেন,আমার মেয়ে হোসাইন মাহমুদের বাবা-মায়ের সাথে একঘরে থাকতে চায় না।আমার মেয়ের ভালোর জন্য আমাকে এখন অন্য চিন্তা করতে হবে।
এ বিষয়ে দুই ইউনিয়নের ইউপি সদস্য রুহুল আমিন হাওলাদার ও ছিদ্দিক হাওলাদারের সাথে মুঠো ফোনে জানতে চাইলে তারা জানান,এ বিষয়ে নিয়ে অনেকবার বসা হলেও কোন সমাধান হয়নি।আমরা চেষ্টা করেছি দু পক্ষকে আবার এক করে দেওয়ার জন্য।কিন্তু প্রতিবাই ব্যর্থ হয়েছি।
কলাপাড়া থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আবুল খায়ের বলেন,অভিযোগ পেলে বিষয়টি দেখব।