গ্রীষ্মের তপ্ত দুপুরে জ্বলন্ত সূর্য যখন মাঝআকাশে থাকে তখন রোদ যেন আগুনের ফুলকি হয়ে ঝরে।গ্রীষ্মের খরতাপে চারপাশ পুড়তে থাকলেও বিভিন্ন রংবেরঙের ফুলে প্রকৃতি যেন ভরে ওঠে অপূর্ব মহিমায়।লাল, নীল, হলুদ, সোনালী সহ বিভিন্ন রঙের ফুল প্রকৃতিতে প্রাণের সজীবতা ফিরিয়ে দেয়।রৌদ্রজ্জ্বল দুুপরে ঝাড়বাতির মতো দীর্ঘ থোকায় হলুদ-সোনালি রঙের ফুলের দেখা মেলে।
সোনাঝরা এই ফুলের নাম সোনালু।এমন অর্ধশতাধিক সোনালু ফুলের সৌন্দর্যে অনন্য হয়ে উঠেছে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ডায়না চত্বর।চোখ ধাঁধানো সোনালু ফুলে সু-সজ্জিত হয়ে নতুন সাজে সেজেছে যেন এই চত্বরটি।নয়নাভিরাম রূপে এবং শোভাবর্ধক হিসেবে সারিবদ্ধ ভাবে দাঁড়িয়ে আছে গাছগুলো।
দীর্ঘদিন যখন নিষ্প্রাণ-নিস্তব্ধ থাকার পর প্রস্ফুটিত হয়, তখন মনে হয় সোনালী আলোকচ্ছটায় চারপাশ আলোকিত হয়ে গেছে।হলুদবরণ সৌন্দর্যে মাতোয়ারা করে রেখেছে চারপাশ।চলতি পথে যে করোর নজর কাড়ে, তৃপ্ত হয় অশান্ত হৃদয়।
শিক্ষার্থীরা ক্লাস-পরীক্ষা শেষে ক্লান্ত দেহে একটু সুখ অনুভব করতে এখানে আড্ডায় মেতে উঠে।প্রেমিক তার প্রিয়তমার কানে দুলের মতো দেখতে হলুদ-সোনালি রঙের থোকা থোকা ফুল গুজে দিতে ভুলে না।নবীন শিক্ষার্থীরা ক্লাসের ফাঁকে ক্লান্তি দূর করতে সহপাঠীদের সাথে গল্পে মাতেন এই চত্বরে।সোনালু ফুল নিয়ে নিজেদের মধ্যে কাড়াকাড়ির খেলায় মাতেন বন্ধু-বান্ধবীরা।বইপ্রেমীদের দেখা যায় নীরবে বসে সোনালুর তলে কবি মনে ভাবতে।হয়তো মনের অজান্তে কোনো কবিতার ছক আঁকছেন তিনি।
হাতে ঝালমুড়ি নিয়ে ছোটছোট দলে গোল হয়ে বসে নিজেদের সুখ-দুঃখের আলাপ নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করে শিক্ষার্থীরা।এরই মধ্যে কেউ ব্যস্ত সোনালুর ছবি তুলতে কেউবা ফুলের সাথে নিজের।সোনালু ফুলগুলো দেখলে মনে হয়, হলুদ শাড়ির আঁচলে জড়ানো কোনো এক ষোড়শী তরূণী দাঁড়িয়ে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আনারুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘ এক মাস ঈদের ছুটি কাটানোর পর ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য বহুগুণে বাড়িয়ে দিয়েছে বাহারি রঙের ফুল।তবে ক্যাম্পাসের ডায়না চত্বরে আসলেই সোনালু ফুলের সৌন্দর্যের প্রেমে পড়তে বাধ্য হবেন।তার সৌন্দর্যে যে কারোর মনকেই নিমিষেই ভালো করে দিতে পারে।অবসর সময়ে যখনই সময় পাই এখানে চলে আসি।
অপর এক শিক্ষার্থী আসলাম আহমেদ বলেন, ক্লাস শেষে যখন ডায়না চত্বরে এসে বসে থাকি তখন একটু শান্তি অনুভব করি।চারিদিকে সারি সারি দাঁড়িয়ে থাকা সোনালু ফুল দেখে যে কেউ মুগ্ধ হবেন।দেখে মনে হয় ফুলগুলো চত্বরটিকে যেন সাজিয়ে তুলেছে নিজের মত করে।ক্যাম্পাসে বিভিন্ন চত্বর থাকলেও তার মধ্যে ডায়না চত্বরের সৌন্দর্য আপনাকে ভাবতে বাধ্য করবে।