রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০৪:৫৪ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
বিয়েতে রাজি না হওয়ায় আত্মহত্যা, প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে মামলা সারিয়াকান্দির সেই মেধাবী ছাত্র সাকিবুল হাসানের দায়িত্ব নিলেন সাহাদারা মান্নান এমপি সারিয়াকান্দিতে জিপিএ-৫ পেয়েও অর্থের অভাবে কলেজে ভর্তি অনিশ্চিত সাকিবুল হাসানের সারিয়াকান্দিতে ইউএনও’র সাথে নবনির্বাচিত ভাইস চেয়ারম্যানের শুভেচ্ছা বিনিময় সারিয়াকান্দিতে সরকারি খাদ্য গুদামে ইরি-বোরো ধান ও চাল সংগ্রহের শুভ উদ্বোধন সারিয়াকান্দিতে ট্যাপেন্টাডল ট্যাবলেটসহ গ্রেফতার-২ নালিতাবাড়ী খাদ্য গুদামে ধান-চাল সংগ্রহের উদ্বোধন অনুষ্ঠিত সারিয়াকান্দিতে অভিবাসী কর্মীদের পুনঃএকত্রীকরণে রেইজ প্রকল্পের ভূমিকা’ শীর্ষক ওরিয়েন্টেশন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে লালমনিরহাট জেলা পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যানের শ্রদ্ধা সারিয়াকান্দিতে পূর্ব শত্রুতার জেরে এক যুবককে ছুরিকাঘাত
নোটিশ :
দেশের জনপ্রিয় সর্বাধুনিক নিয়ম-নীতি অনুসরণকৃত রাজশাহী কর্তৃক প্রকাশিত নতুনধারার অনলাইন নিউজ পোর্টাল ‘যমুনা প্রতিদিন ডট কম’

রাজাপুরে সবুজ পাতার ফাকেঁ হলুদ সূর্যমূখীর সাথে কৃষকের মুখে হাসি

ঝালকাঠির রাজাপুরে বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে এ যেন সবুজের মাঝে হলুদের সমাহার।যতদূর চোখ যায়, সূর্যের দিকে মুখ করে হাসছে সূর্যমুখী।বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ফুলের দিক পরিবর্তন হয়।সকালে পূর্ব দিকে তাকিয়ে থাকলেও বিকেলে দিক পরিবর্তন করে ধাবিত হয় পশ্চিমে।

রাজাপুরের ৬টি ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানের ধানি জমিতে এ ফুলের চাষ করা হয়েছে।সূর্যমুখী ফুলের বাগানে এমন দৃশ্য দেখা মিলল।আর এমন মনোরম দৃশ্য দেখতে প্রতিদিনই ভিড় করছেন এলাকার শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন বয়সি দর্শনার্থীরা।

প্রকৃতির এক অসাধারণ রূপবান উদ্ভিদ সূর্যমুখী।সূর্যমূখী ফুল থেকে উতপাদিত বীজ থেকে ভোজ্য তেল উতপাদন করা হয়।কেউ কিনেন, কেউ চাষ করেন, আবার কেউ ফুলের সৌন্দর্য দেখেন।এজন্য সবাই ফুলের কাছে ছুটে যান।আর এ ফুল যদি হয় শস্য ক্ষেতের সুন্দর হলুদ সূর্যমুখী, তাহলে তো কথাই নেই।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, সূর্যের ঝলকানিতে হলুদ রঙে ঝলমল করছে চারপাশ।সূর্যের দিকে মুখ করে আছে ফুল, সকালে পূর্ব দিকে তাকিয়ে হাসলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সূর্যের আবর্তনে তার দিক পরিবর্তন হয়।

বিস্তীর্রণ মাঠজুড়ে এ যেন সবুজের মাঝে হলুদের সমাহার।সূর্যের দিকে মুখ করে হাসছে সূর্যমুখী।আর এমন মনোরম দৃশ্য দেখতে প্রতিদিনই এলাকার দর্শনার্থীরা ভিড় করছেন সূর্যমুখী বাগানের সৌন্দর্য দেখতে।মনোরম সুন্দর পরিবেশ, উন্নত যাতায়াত ব্যবস্থা হওয়ায় এমন দৃশ্য দেখাকে হাতছাড়া করতে চাইছেন না অনেকেই।সেইসঙ্গে সেলফি ও গ্রুপ ছবি তো আছেই।সবুজ মাঠের এই হলুদ রঙ ছবিতে এনে দিচ্ছে নতুন মাত্রা।

একগুচ্ছ সূর্যমুখী ফুলের সঙ্গে দর্শনার্থীরা যেন হাসছেন।দৃষ্টিকাড়া ফুলের মধ্যে স্মার্টফোনে বন্দী করছেন প্রিয় মুহূর্তগুলো।সূর্যমুখী ওই ফুলের বাগানের আশেপাশের মানুষের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু হওয়ায় সকাল থেকে সন্ধ্যা পুরো দিনই বাড়ছে মানুষের সমাগম।ফুলে ফুলে ভরে গেছে সূর্যমুখী ক্ষেত।সূর্যের দিকে মুখ করে থাকে বলে এই ফুলকে সূর্যমুখী বলা হয়।সূর্যমুখীর হাসিতে স্বপ্ন দেখছেন রাজাপুরের কৃষকরা।

উপজেলায় সূর্যমুখীর হাসিতে অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতার স্বপ্ন দেখছেন চাষীরা।ভোজ্যতেলের সংকটকালে এই তেলজাতীয় উদ্ভিদ সূর্যমুখী চাষ কৃষকদের মাঝে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।

রাজাপুর সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণীর শিক্ষার্থী এ্যাঞ্জেলা আক্তার বলেন, আগে বইয়ের পাতায় শুধু দেখেছি, এখন বাস্তবে সূর্যমুখী বাগানে এসে নিজ চোখে দেখছি।ফুলের সৌন্দর্য দেখতে মাকে সঙ্গে নিয়ে এসেছি।

সূর্যমুখী বাগানে ঘুরতে আসা আরেক দর্শনার্থী তাহিয়া আক্তার বলেন, চমৎকার লাগছে।আসলেই সূর্যমুখী বাগান আমাকে মুগ্ধ করেছে।

কৃষক সেকেন্দার খান ও আঃ হামিদ হাওলাদার বলেন, চলতি মৌসুমে কৃষি অফিসের সার্বিক সহযোগিতা নিয়ে তিনি সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেছেন।সফলতার মুখও দেখছেন।দেশে ভোজ্য তৈল সংকট হওয়ায় সূর্যমূখী তৈলের খুব চাহিদা রয়েছে।আগামী দিনে এই চাষ আরও বাড়াবেন বলে তারা জানান।

কৃষক সেকেন্দার খান বলেন, এবছর তিনি আড়াই কুরা (১ কুরা = ৩০ শতাংশ) জমিতে সূর্যমূখির চাষ করেছেন।চাষ করতে সার, ঔষধ ও শ্রমসহ প্রতি কুরা জমিতে প্রায় ৬ থেকে ৭ হাজার টাকা খরচ হয়েছে।প্রতি কুরা জমির ফুলে প্রায় ৭ থেকে ৮ মণ বীজ উৎপাদন হবে।প্রতি মণ বীজ ৪ হাজার টাকা বিক্রি করা যাবে।অথবা নিজেরা এলাকার মেশিনে ভাঙ্গিয়ে তৈল বের করে তৈলও বিক্রি করা যাবে।

এক কেজি সূর্যমূখী বীজে ৪শ‘ গ্রাম তৈল ও ৬শ‘ গ্রাম খৈল উতপাদন হয়।১ কেজি সূর্যমূখী তৈলের মূল্য ৩৫০ টাকা এবং ১ কেজি খৈলের মূল্য ৬০ টাকা।এ খৈল গরুর সুস্বাদু ও পুষ্টিকর খাদ্য হিসাবে ব্যবহার করা হয়।

কৃষক মোঃ রাসেল বলেন, অনেকটাই শখের বশে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেছি।বাম্পার ফলনের আশা করছি।আগামী দিনে আরও বেশি জমিতে সূর্যমুখী ফুল চাষ করবো।

তিনি আরো জানান, সূর্যমূখী ফুল থেকে ফল বের করার পরে তৈল বের করার জন্য এ উপজেলায়ও ভাঙ্গানোর মেশিন আছে অথবা পিরোজপুর জেলার মঠবাড়ি উপজেলা থেকে পাইকার এসে কিনে নিয়ে যান।এই এলাকায় আমন ধান কাটার পরে পৌষমাসে ওই জমিতে সূর্যমূখী ফুলের চাষ করা হয় এবং বৈশাখ মাসের মাঝামাঝি সময় পরিপক্ক হয়।

রাজাপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোসা. শাহিদা শারমিন আফরোজ বলেন, উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে আগামী দিনে উপজেলায় এই ফুলের চাষ বৃদ্ধির জন্য কৃষকদের বেশী করে বীজ, সারসহ প্রযুক্তিগত সব ধরনের সহায়তা দেওয়া হবে।এ ফুলের চাষ করার জন্য প্রতি বছরই নতুন কৃষকের সংখ্যা বাড়ছে।

এ বছর উপজেলায় মোট প্রায় ৬৫ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখী ফুলের আবাদ করা হয়েছে।বীজ বপনের পর ফসল সংগ্রহ করতে প্রায় তিনমাস সময় লাগে।প্রতিটি গাছে একটি করে ফুল আসে।সরিষা চাষ থেকেও খরচ কম ও ফলন বেশি এবং লাভজনক।

এবছর সূর্যমূখী ফুলের ভালো ফলন হওয়ায় এ উপজেলায় ১২৪ মেট্টিক টণ বীজ উতপাদন হবে বলে লক্ষ মাত্রা ধরা হয়েছে।চাষিরা সূর্যমুখী চাষ করে দ্বিগুণ লাভ করতে পারবেন।সূর্যমুখী চাষ যাতে বৃদ্ধি পায় এ জন্য কৃষি পুনর্বাসন কর্মসূচির আওতায় কৃষকদের সম্পূর্ণ বিনামূল্যে এই ফুলের বীজ বিতরণ করা হয়েছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

6 + 11 =


অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ

x