শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ০৮:০৩ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
বাবা মায়ের স্বপ্ন পূরন করা হলো না এনজিও কর্মী সঞ্জয়ের সারিয়াকান্দি উপজেলা পরিষদ নিবার্চন থেকে সরে দাঁড়ালেন চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুস সালাম ও আশিক রাজশাহীতে কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের মাঝে গ্লুকোজ বিতরণ রাজশাহীতে দৈনিক মানবিক বাংলাদেশ পত্রিকার প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন দুর্গাপুরে প্রশাসনকে ম্যানেজ করে রাতের আঁধারে আবাদি জমিতে পুকুর খনন মোহনপুরে মদ্যপান অবস্থায় বাইক আরোহী নিহত,আহত ২ মান্দায় মহান মে দিবস পালিত মে দিবসে খাবার স্যালাইন,ক্যাপ ও পানি বিতরণ করল রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড জাতীয় শ্রমিক লীগ রাজশাহী মহানগরের উদ্যোগে মহান মে দিবস পালন সারিয়াকান্দিতে দর্জি শ্রমিক ইউনিয়নের মহান মে দিবসে র‌্যালি ও শ্রমিক সমাবেশ
নোটিশ :
দেশের জনপ্রিয় সর্বাধুনিক নিয়ম-নীতি অনুসরণকৃত রাজশাহী কর্তৃক প্রকাশিত নতুনধারার অনলাইন নিউজ পোর্টাল ‘যমুনা প্রতিদিন ডট কম’

বিদ্যুতায়নের যুগে বিলুপ্তির পথে হারিকেন

গ্রামীণ বাংলার জীবনে রাতের অন্ধকার দূর করতে একটা সময় দেশের ৬৪ হাজার গ্রামের মানুষের অন্যতম ভরসা ছিল হারিকেন বা কুপি বাতি (টেমি)।

কয়েক বছর আগেও গ্রামবাংলায় একমাত্র আলোর উৎস ছিল হারিকেন।যাকে রাতের বন্ধু বলে ডাকা হত।সচিবসহ দেশ পরিচালনার দায়িত্বে উচ্চ পর্যায়ে থাকা ব্যক্তি খোঁজ করলে লক্ষ্য করা যাবে অনেকেই পড়ালেখা করেছেন হারিকেনের মৃদু আলোয়।গৃহস্থালী এবং ব্যবসার কাজেও হারিকেনের ব্যাপক চাহিদা ছিল।

হারিকেন হচ্ছে জ্বালানি তেলের মাধ্যমে বদ্ধ কাঁচের পাত্রে আলো জ্বালাবার ব্যবস্থা। হারিকেনের বাহিরের অংশে অর্ধ বৃত্তাকার কাঁচের অংশ থাকে, তেল শুষে অগ্নি সংযোগের মাধ্যমে আলো জ্বালাবার জন্য কাপড়ের শলাকা থাকে এবং সস্পূর্ণ হারিকেন বহন করার জন্য এর বহিরাংশে থাকে একটি লোহার ধরনি। হারিকেনের আলো কমানো বা বাড়ানোর জন্য বহিরাংশে থাকে একটি চাকটি যা কমালে বা বাড়লে শলাকা ওঠা নামার থাকে যা দ্বারা আলো কমা বা বাড়ানো যায়।

মোঘল আমলে হারিকেনের প্রচলন শুরু হয়। রাতের আধারে বিকল্প আলোর উৎস হিসাবে ধীরে ধীরে গ্রামবাংলায় জনপ্রিয় হয়ে ওঠে হারিকেন। তবে এখন সেই হারিকেনের ঠাঁই হচ্ছে জাদুঘরে।

হারিকেনের স্থান দখল করেছে নানা ধরনের বৈদ্যুতিক বাতি। বৈদ্যুতিক ও চায়না বাতির কারণে শহরে হারিকেনের ব্যবহার অনেক আগেই বন্ধ হয়েছে।সেই আলোর প্রদীপ এখন গ্রাম থেকেও বিলুপ্ত হচ্ছে।

এক সময় হারিকেন জ্বালিয়েই বাড়ির উঠানে বা বারান্দায় পড়াশোনা করতো শিক্ষার্থীরা। রাতের বেলায় পথ চলার জন্য ব্যবহৃত ছিল হারিকেন।হারিকেনের জ্বালানি আনার জন্য প্রতি বাড়িতেই থাকতো কাচের বিশেষ ধরনের বোতল।সেই বোতলে রশি লাগিয়ে ঝুলিয়ে রাখা হতো। হাটের দিনে সেই রশিতে ঝুলানো বোতল হাতে নিয়ে যেতে হতো হাটে। এ দৃশ্য বেশি দিনের নয়।

পল্লী বিদ্যুতায়নের যুগে এখন আর এমন দৃশ্য চোখে পড়ে না।প্রাচীন বাংলার গ্রামীণ ঐতিহ্য কুপি বাতি (টেমি) ও হারিকেন এখন শুধুই স্মৃতি।গ্রামের অমাবস্যার রাতে মিটি মিটি আলো জ্বালিয়ে মানুষের পথ চলার স্মৃতি এখনও তাড়া করে। চলচ্চিত্রের প্রথম আমলের ছবিগুলোর দিকে এক নজর তাকালেই তার কিছুটা নমুনা পাওয়া সম্ভব।

যেখানে সিনেমার নায়িকা তার ভালোবাসার মানুষটিকে অন্ধকার রাতে খুজে পেতে কুপি হারিকেন নিয়ে ছুটে আসে।আবার বাংলা সাহিত্যের অন্যতম ‘‘ডাক হরকরা’’ গল্পের নায়ক তার এক হাতে হারিকেন আর অন্য হাতে বল্লভ নিয়ে রাতের আধারে ছুটে চলে তার কর্ম পালনে।

দিন দিনই প্রযুক্তি মানুষকে উন্নত করছে যার দরুন হারিকেন ছেড়ে মানুষ এখন বিদ্যুতের দিকে ঝুঁকছে। তাপ বিদ্যুৎ, সৌর বিদ্যুৎ সহ জ্বালানী খাতে ব্যাপক উন্নয়নে ঐতিহ্যবাহী হারিকেন বিলুপ্তির পথে। এছাড়া প্রযুক্তির মাধ্যমে বিদ্যুতকে সংগ্রহ করার পন্থা আবিস্কার করেছে বিজ্ঞানীরা।চার্জার লাইট, সৌর বিদ্যুতসহ বেশ কিছু আলোর যোগান থাকায় এখন আর কেউই ঝুঁকছেন না হারিকেনের দিকে।

প্রবীণদের মতামত এক সময় হারিকেন দেখতে যেতে হবে জাদুঘরে। নতুন প্রজন্ম হয়তো জানবেও না হারিকেন কী ও হারিকেনের ইতিহাস।এক সময় হয়তো চিরতরে বিলুপ্ত হবে হারিকেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

9 − five =


অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ

x