ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) গত রবিবার এক ছাত্রীকে সাড়ে চার ঘন্টা শারীরিক নির্যাতন ও বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণের অভিযোগ উঠে শাখা ছাত্রলীগের সহ সভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরা ও তার সহযোগী তাবাসসুমের বিরুদ্ধে।র্যাগিংয়ের বিষয়টি হাইকোর্ট পর্যন্ত গড়ালে অভিযুক্তদের ক্যাম্পাসের বাহিরে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়।এর প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার সন্ধায় দেশরত্ন শেখ হাসিনা হল কর্তৃপক্ষের নির্দেশে হল ছাড়তে হয় অভিযুক্তদের।
এদিকে ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বুলিং বা র্যাগিং প্রতিরোধ সংক্রান্ত নীতিমালা-২০২৩’ অনুযায়ী, গভানিং বডি, অ্যাডহক কমিটি বা ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা র্যাগিংয়ে জড়িত থাকলে তাদের সদস্য পদ বাতিল করা যেতে পারে।শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জড়িত থাকলে তাদের এমপিওভুক্তি বাতিলসহ অস্থায়ী বা স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের নির্দেশনা রয়েছে।একইভাবে শিক্ষার্থীদের জন্যও এই বহিষ্কারের শাস্তি রাখা হয়েছে।কিন্তু র্যাগিংয়ের ঘটনার পাঁচ দিন পেরোলেও দেখা যায়নি কোনো দৃশ্যমান শাস্তি।
এদিকে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে পৃথক তিনটি তদন্ত কমিটি করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, দেশরত্ন শেখ হাসিনা হল ও শাখা ছাত্রলীগ।
শাখা ছাত্রমৈত্রীর সাধারণ সম্পাদক ইয়াসিরুল ইসলাম সৌরভ বলেন, তদন্তের নামে বার বার টালবাহানার কারণেই অপরাধীরা দুঃসাহস পাচ্ছে।এরকম অবহেলার কারণে সাধারণ শিক্ষার্থীরা অপরাধীদের কাছে জিম্মি হয়ে থাকছে।এই রকম অপরাধ মূলক কাজ বন্ধ করতে চাইলে অপরাধীদের দ্রুত বিচারের আওয়াতায় আনতে হবে।আমরা প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি, তারা যেন এরকম টালবাহানা না করে দ্রুত সময়ের মাঝে তদন্ত শেষ করে বিচারের আওয়াতায় নিয়ে আসে অপরাধীদের।
এ বিষয়ে শাখা ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মোখলেছুর রহমান সুইট বলেন, ছাত্রী নির্যতনের ঘটনা ৫ দিন হয়েছে কিন্তু দৃশ্যমান শাস্তি আমরা দেখতে পাইনি।ছাত্র ইউনিয়ন ইবি সংসদ এ প্রতিবাদে বিবৃতি প্রদান ও বিক্ষোভ মিছিল সহ ধারাবাহিক কর্মসূচি পালন করে আসছে।আমি আশা করি প্রশাসন গুরুত্বের সাথে বিষয়টি দেখবেন।ভুক্তভোগী ক্যাম্পাসে যেন ফিরতে পারেন সেজন্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে এবং নিপীড়ক নেত্রী অন্তরা সহ এর সাথে যারাই জড়িত তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশনা পাওয়ার পর ওই দুই শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাস ছাড়ার বিষয়ে হল প্রভোস্টকে জানিয়েছিলাম।পরে সন্ধ্যায় তারা হল ছেড়ে চলে যায়।
ভুক্তভোগীর বিষয়ে তিনি বলেন, আমি ও ওসি ভুক্তভোগী ও তার পরিবারের সাথে কথা বলেছি।সে ক্যাম্পাসে আসলে আমরা তার নিরাপত্তা দিব।
উল্লেখ্য, দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে গত রবিবার ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রীকে রাতভর র্যাগিং, শারীরিকভাবে নির্যাতন ও বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণের ঘটনায় সারাদেশে তোলপাড় সৃষ্টি হয়।এই ঘটনায় পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রলীগের সহ সভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরা ও ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষবর্ষের শিক্ষার্থী তাবাসসুম সহ আরও ৭ থেকে ৮ জন জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী।