নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, বাংলাদেশ আর ভারতের সম্পর্কটা ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে রক্ত দিয়ে তৈরি করা।৫০ বছর যাবৎ আমাদের এ সম্পর্কটা আছে।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এ সম্পর্কটা অন্যরকম উচ্চতায় চলে গেছে।ভারতের সাথে আমাদের সাংস্কৃতিক, ব্যবসা-বাণিজ্য, চিকিৎসা ও শিক্ষার সম্পর্ক রয়েছে।ভারত থেকে যে গঙ্গা বিলাস এসেছে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কটা যে কত উচ্চতায় আছে পশ্চিমা দেশগুলোর কাছে তা পৌঁছে যাবে।কারণ গঙ্গা বিলাসে ইউরোপের পর্যটকেরাই রয়েছে।তাদের মাধ্যমে এ সম্পর্কটা পৃথিবী জুড়ে ছড়িয়ে যাবে।এ গঙ্গা বিলাস বাংলাদেশ ছুয়ে চলে যাবে, বাংলাদেশের একপ্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত দিয়ে।এটা শুধু জাহাজই যাবেনা, আমাদের বন্ধুত্বকে ছড়িয়ে বর্ণিল করে দিয়ে যাবে।
শনিবার দুপুরে আড়াইটায় বন্দর জেটিতে গঙ্গা বিলাস জাহাজের পর্যটকদের স্বাগত ও অভ্যর্থনা জানানোতে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ সব কথা বলেন।পরে প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বিদেশী এ পর্যটক ও অতিথিদের নিয়ে একটি কেক কাটেন।
এর আগে ২৭ জন সুইজারল্যান্ড ও ১জন জার্মানী পর্যটক নিয়ে ভারতের বানারস থেকে ছেড়ে আসা বিলাসবহুল প্রমোদতরী এম,ভি গঙ্গা বিলাস শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টায় মোংলা বন্দরের ৭ নম্বর জেটিতে ভিড়েছে।
১৩ জানুয়ারী ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বানারাসে এটির যাত্রার উদ্বোধন করেন।এরপর ঘুরতে ঘুরতে শুক্রবার বাংলাদেশের সুন্দরবনের আংটিহারায় প্রবেশ করেন।তারপর শনিবার দুপুরে মোংলা বন্দরে আসে এ জাহাজটি।
দুপুর আড়াইটার এ জাহাজটিকে স্বাগত ও পর্যটকদের অভ্যর্থনা জানান নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাই কমিশনার প্রণয় কুমার ভার্মা, মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মীর এরশাদ আলী, নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোস্তফা কামাল, বিআইডব্লিউটি এর চেয়ারম্যান কমডোর গোলাম সাদেক সহ নৌ পরিবহন ও মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের উর্ধতন কর্মকর্তারা।মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মীর এরশাদ আলী বলেন, সম্প্রতি মোংলা বন্দরের মাধ্যমে ভারতের সাথে পণ্য পরিবহন শুরু হয়েছে।এ কার্যক্রমের মাধ্যমে আমাদের বন্ধুপ্রতীম দেশের সঙ্গে বন্ধুত্ব ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরো জোরদার হচ্ছে।
এমভি গঙ্গা বিলাসের ট্যুর অপারেটর জার্নি প্লাস’র প্রধান নির্বাহী তৌফিক রহমান বলেন, এটি পৃথিবীর সবচেয়ে লঙ্গেজ ট্যুর রিভার ক্রুজ।এটি দুই দেশের ৩২০০ কিলোমিটার নদী পথ পাড়ি দিবে।বাংলাদেশ-ভারতের ২৭টি নদী ও ৫০টি পর্যটন কেন্দ্র ছুয়ে যাবে এ গঙ্গা বিলাস।
শনিবার দুপুরে মোংলা বন্দরে জাহাজটি ভিড়ার পর বিকেলে বাগেরহাটের ষাট গম্বুজ মসজিদে যান পর্যটকেরা। এরপর রবিবার যাবেন সুন্দরবনে।তারপর বাগেরহাটের মোড়েলগন্জ, বরিশাল, ঢাকা, টাঙ্গাইল, সিরাজগঞ্জ, রংপুর ও কুড়িগ্রামে যাবে জাহাজটি।
৫১দিনের এ ট্যুরে ১৭ ফেব্রুয়ারী কুড়িগ্রামের চিলমারী হয়ে ভারতের আসামে ঢুকবে গঙ্গা বিলাস।এরপর ১লা মার্চ আসামের ধুপড়ি হয়ে আসামের শেষ সীমান্তের দিপড়ুগড়ে গিয়ে জাহাজটির ভ্রমণ শেষে সেখানে নামবেন পর্যটকেরা। জাহাজটিতে ৫ তারকা হোটেল মানের সুযোগ-সুবিধা রয়েছে।এতে ভ্রমণ করতে পেরে আনন্দ ও উল্লাস প্রকাশ করেছেন পর্যটকেরা।