চট্টগ্রাম শহরে রাজমিস্ত্রির কাজ করার সুবাদে মিজানুর রহমানের আগ্রাবাদের দিদারুল আলমের পরিচয়।দিদারুল আলম পেশায় গরু ব্যবসায়ী।দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে গরু এনে চট্টগ্রাম শহরে বিক্রি করেন তিনি।গত ১৯ ফেব্রুয়ারি দিদারুল আলমকে গরু বিক্রির কথা বলে ছনুয়ায় নিয়ে আসেন মিজান। এসময় তাকে মারধর করে বন্দুক দিয়ে ছবি তুলে এলাকা ত্যাগ করতে বাধ্য করে মিজানের নেতৃত্বে একদল লোক।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী দিদারুল আলম বাদী হয়ে দুই জনের নাম উল্লেখ করে বাঁশখালী থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।দিদারুল আলম চট্টগ্রামের ডবলমুরিং থানার আগ্রাবাদ চৌমুহনী চারিয়াপাড়া এলাকার আবদুল মোতালেবের ছেলে।
এতে আসামি করা হয়েছে ছনুয়া ইউনিয়নের আমিরপাড়া এলাকার আজগর বাড়ীর মৃত মফিজুর রহমানের ছেলে কামাল উদ্দিন (৩৯) ও ফরমানের ছেলে মিজানুর রহমান (৩৫) সহ অজ্ঞাত ১০-১২ জনকে।
মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, মিজান চট্টগ্রাম নগরীর আগ্রাবাদ এলাকায় রাজমিস্ত্রীর কাজ করার সুবাদে দিদারের সাথে পরিচয়। দিদার আগামী রমজান ও শবেবরাতকে কেন্দ্র করে গরু ক্রয়ের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিলে মিজান বিষয়টি বুঝার পর দিদারকে তাদের বাড়ি থেকে গরু ক্রয় করার প্রস্তাব দেয়। মিজান এসময় বলে, তাদের বাড়িতে গরুর খামার আছে। দিদার সরল মনে তার কথা বিশ্বাস করে। গত ১৯ ফেব্রুয়ারি নগদ তিন লক্ষ টাকা নিয়ে গরু ক্রয় করার জন্য মিজানের সাথে ছনুয়া আমিরপাড়ার আজগর বাড়ী এলাকায় মো. বিপ্লবকে নিয়ে যান দিদারুল আলম। মিজানের বাড়িতে কিছুক্ষণ অবস্থান করার পর সে দিদার ও বিপ্লবের কাছ থেকে আলাদা হয়ে যায়। এসময় মিজানের বাড়িতে মুখোশ পরিহিত অবস্থায় ১০ থেকে ১৫ জন লোক ২টি বন্দুক ও লোহা এবং দা-কিরিচ নিয়ে প্রবেশ করে। তাদের সাথে তখন মিজানও ছিল। তখন দিদার মিজানকে এসবের কারণ জিজ্ঞেস করার সাথে সাথে থাপ্পড় মেরে দেয়। তখন সাথে থাকা ১০ থেকে ১২ জন লোক লাঠি ও লোহার রড দিয়ে এলোপাতাড়ি মারতে থাকে।
ভুক্তভোগী দিদারুল আলম বলেন, মারধরের পর আমার হাতে থাকা গরু কেনার ৩ লক্ষ টাকা ও আমার খরচের জন্য রাখা ৫ হাজার ৪০০ টাকা এবং মোবাইল মানিব্যাগ জোরপূর্বক ছিনিয়ে নেয়। পরবর্তীতে মিজান ও তার দলবল সহ আমাদের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়ে মিথ্যা ডাকাতির স্বীকারোক্তি নিয়ে মোবাইলে ভিডিও ধারণ করে। পরে একজন সিএনজি চালক ডেকে এনে আমাদেরকে গাড়িতে তুলে দেয়। হোছাইন নামের ওই সিএনজি অটোরিকশা চালক আমাদেরকে পুকুরিয়ার চাঁদপুর বাজারে নামিয়ে দেয়। পরে আমরা সেখান থেকে চট্টগ্রাম শহরে চট্টগ্রাম মেডিকেল হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণ করি। এরপর আমি মিজানের মোবাইলে কল দিলে তার নাম্বার বন্ধ পাই।
স্থানীয়রা জানান, মিজান ও কামাল দীর্ঘ এক যুগ সময় ধরে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ এনে এই প্রতারণা করে আসছে। তাদের এই অপকর্মের বিরুদ্ধে এলাকায় কেউ মুখ খুলতে পারে না। মিজানের বিরুদ্ধে হত্যা ও ডাকাতিসহ বিভিন্ন অভিযোগে একাধিক মামলা রয়েছে।
এ বিষয়ে বাঁশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তোফায়েল আহমদ বলেন, প্রতারক চক্রের মূলহোতা আহমদ কবির ওরফে স্বর্ণ মানিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদেরও ধরতে পুলিশের অভিযান চলছে। অপকর্ম করে কেউ পার পাবে না।