রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় মডেল ইউনাইটেড নেশন’স-২০২৩ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ১৫ ফেব্রুয়ারী দুপুর ২.৩০ মিনিটে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ তাজ উদ্দিন আহমেদ সিনেট ভবনে অনুষ্ঠিত হয়।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় মডেল ইউনাইটেড ন্যাশনস এর আয়োজনে অনুষ্ঠিত চারদিনব্যাপী কনফারেন্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ শাহ্ আজম।
কনফারেন্সে তিনি বলেন, বাংলাদেশ এখন দুর্বার গতিতে সামনের দিকে এগিয়ে চলছে, এই দুর্বার গতিকে অপ্রতিরোধ্য রাখতে সক্ষম হবে আমাদের যুব সম্প্রদায়।এক্ষেত্রে দেশপ্রেমিক যুব সম্প্রদায় কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
‘মনুষ্যত্বের শিক্ষাটাই চরম শিক্ষা আর সমস্তই তার অধীন’ রবীন্দ্রনাথকে উদ্ধৃত করে তিনি বলেন মনুষ্যত্ব অর্জনই শিক্ষার লক্ষ্য, মনুষ্যত্ব অর্জন ব্যতীত শিক্ষিত মানুষ দ্বারা দেশের প্রকৃত উন্নয়ন সম্ভব হয় না।
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ এখন ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ডের মধ্য দিয়ে অতিক্রম করছে, এই ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ডের সুযোগটাকে আমাদের কাজে লাগাতে হবে।এজন্য যুব সম্প্রদায়কে, তার সম্ভাবনাকে পুরোপুরি ব্যবহার করতে হবে।জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে সোনার বাংলা নির্মাণ করার প্রত্যয় ঘোষণা করেছিলেন, তারই কন্যা বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা তাঁর সেই স্বপ্নকে বাস্তব রূপ দিতে নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন।তিনি বাংলাদেশকে একটি সুনির্দিষ্ট শক্ত ভিত্তির উপরে দাঁড় করিয়েছেন।বাংলাদেশ সামনে চলার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে এবং সে লক্ষ্য অনুযায়ী ২০৪১ সালে বাংলাদেশ একটি উন্নত অর্থনীতির স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে তৈরি হবে।এই স্মার্ট বাংলাদেশ তৈরির ক্ষেত্রে আমাদের স্মার্ট নাগরিকের প্রয়োজনীয়তা অসীম, সেক্ষেত্রে আমরা আমাদের এই প্রজন্মকে সৃজনশীল কাজে উদ্বুদ্ধ করে তাদের মেধা ও মননকে যদি দেশের কল্যাণে কাজে লাগাতে পারি তাহলেই স্মার্ট বাংলাদেশ তৈরি সম্ভব হবে।এ-কারণে যুব সম্প্রদায়কে প্রস্তুত হতে হবে।তাদের সৃজনশীল চর্চার সাথে যুক্ত হতে হবে। সৃজনশীলতা চর্চার যতগুলো মাধ্যম রয়েছে তার মধ্যে মডেল ইউনাইটেড নেশন’স এর কর্মকাণ্ড অন্যতম।এই মডেল ইউনাইটেড নেশনস এর চর্চার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা তাদের মত প্রকাশ করার সাহস ও সক্ষমতা অর্জন করে, একইসাথে অন্যের মতামতকে শ্রদ্ধার সাথে গ্রহণ করার মানসিক ঔদার্য লাভ করে থাকে।
উপাচার্য বলেন, এটি বিশেষ করে দ্বিপক্ষীয়, ত্রিপক্ষীয় যে সমঝোতা ও নেগোসিয়েশনের বিষয় থাকে, তার ক্ষেত্রে অনেক বেশি শিক্ষণীয় ভূমিকা রাখে।বিশেষ করে আন্তঃদেশীয় যোগাযোগ ও চুক্তিগুলো কিভাবে হয় তার একটা প্রশিক্ষণ এবং চর্চা শুরু থেকেই ছাত্র-ছাত্রীরা এই প্ল্যাটফর্মে এসে করতে পারে, যার ফলে তারা তাদের নেতৃত্বের গুণ বিকশিত করার সুযোগ পায়।তারা ছোটবেলা থেকেই কূটনৈতিক শিষ্টাচার চর্চার একটি সুযোগ লাভ করে।এটি যে শুধুমাত্র একটি সামাজিক পদ্ধতি নয়, যেখানে ছাত্রছাত্রীরা আনন্দ উৎসবে যুক্ত হয়, বরং এর একটি একাডেমিক ভ্যালু রয়েছে।এটিকে যদি একাডেমিক কারিকুলামের অন্তর্ভুক্ত করা যায় এবং ট্রেনিং ও ক্রেডিট প্রোগ্রাম এর মধ্যে আনা যায়, তাহলে শিক্ষার্থীরা অনেক বেশি লাভবান হবে, সাথে সাথে বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের শিক্ষার গুণগত মানও বৃদ্ধি করবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পঠন-পাঠনের যে রীতি, কৌশল এবং কারিকুলাম একটিভিটিগুলো রয়েছে তার সঙ্গে ইউনাইটেড নেশনস এর এই প্রক্রিয়াটিকে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের উপাচার্য ও একাডেমিশিয়ানদের প্রতি রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আহ্বান জানান।
বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ২৫০ জন শিক্ষার্থী এবং ৫০ জন একাডেমিশিয়ান এই কনফারেন্সে অংশগ্রহণ করেন।