শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১০:১৬ পূর্বাহ্ন
নোটিশ :
দেশের জনপ্রিয় সর্বাধুনিক নিয়ম-নীতি অনুসরণকৃত রাজশাহী কর্তৃক প্রকাশিত নতুনধারার অনলাইন নিউজ পোর্টাল ‘যমুনা প্রতিদিন ডট কম’

দেশে পর্যাপ্ত পেঁয়াজ থাকলেও ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে দাম বাড়াচ্ছে-কৃষি মন্ত্রী

কৃষি মন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, দেশে পেঁয়াজের সংকট নেই, কৃষকের ঘরে যথেষ্ট পেঁয়াজ মজুত আছে।ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের কারণে দাম বাড়ছে।

মঙ্গলবার মঙ্গলবার (২৩ মে) দুপুর ১২ দিকে পাবনার সুজানগর উপজেলার তাতিবন্দ ইউনিয়নের উদয়পুর গ্রামের কৃষক আব্দুল হাকিমের বাড়িতে ইয়ার ফ্লো চেম্বার সিস্টেমে পেঁয়াজ সংরক্ষণাগার পরিদর্শনকালে তিনি আরও বলেন, ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট কারসাজি করে পেঁয়াজের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করছে, দেশে পেঁয়াজের মজুত পর্যালোচনা করে সরকার সিদ্ধান্ত নেবে।কৃষকের ক্ষতি করে পেঁয়াজ আমদানি করা হবেনা বলেও জানান তিনি।

কৃষি মন্ত্রী বলেন, আমাদের সাধারণ মানুষের প্রশ্ন কেন এই আশ্বিন কার্তিক মাস আসলেই পেঁয়াজের ঘাটতি হয়, দাম অস্বাভাবিক হয়? পেঁয়াজ নিয়ে নানা রকম রাজনীতি শুরু হয়? ঈদ এলেই আমাদের পেঁয়াজ ব্যবসায়ীরা নানা ষড়যন্ত্র করে, সিন্ডিকেট করে পেঁয়াজের দাম বাড়িয়ে দেয়।

মন্ত্রী বলেন, কৃষকের পেঁয়াজ যাতে নষ্ট না হয় সেজন্য কৃষক পর্যায়ে দেশীয় পদ্ধতিতে আমরা চেষ্টা করছি পেঁয়াজের সংরক্ষণের সময় বাড়াতে।এ যদি সফল হই তাহলে দেশের চাহিদা মিটিয়ে আমরাই ভারতে পেঁয়াজ রপ্তানি করতে পারব।

গত বছরের পেঁয়াজের দাম সমন্ধে মন্ত্রী বলেন, গত বছর আমাদের কৃষক ভাইয়েরা দাম পায় নাই।অনেক পেঁয়াজ নষ্ট হয়েছে।এজন্য এবারে অনেকেই পেঁয়াজ চাষ না করায় ২-৩ লাখ টন পেঁয়াজ উৎপাদন কম হয়েছে।কিন্ত এবারে পেঁয়াজের উৎপাদন বেড়েছে।

এদিকে পেঁয়াজের দাম নিয়ে মন্ত্রী আরো বলেন, কৃষকেরও কিন্ত বাঁচতে হবে।আমরা চিন্তা ভাবনা করছি, ৬০ থেকে ৬৫ টাকার মধ্যে পেঁয়াজের দাম নির্ধারন করা যায় কিনা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারন বিভাগ জানায়, দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম পেঁয়াজ উৎপাদন এলাকা পাবনা জেলায় এবারে ৭ লক্ষ ৩৭ হাজার ৫৬৮ মেট্টিক টন পেঁয়াজ উৎপন্ন হয়েছে।পাবনাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সংরক্ষণের অভাবে বিপুল পরিমাণ পেঁয়াজ নষ্ট হওয়ায় কৃষক ক্ষতিগ্রস্থ হন।

কৃষকরা মন্ত্রীকে বলেন, কৃষক মৌসুমের শুরুতে কমদামে পেঁয়াজ বিক্রি করে দেন।এতে করে তারা ক্ষতির সম্মুৃখিন হন।পেঁয়াজ সংরক্ষণ করা গেলে তারা মৌসুমের শেষে ভাল দাম পাবেন।

কৃষি বিভাগ আরো জানায়, পেঁয়াজ যাতে নষ্ট না হয় সেজন্য দেশীয় পদ্ধতিতে পেঁয়াজ সংরক্ষণের জন্যও পাবনাসহ পেঁয়াজ সমৃদ্ধ ৩টি জেলায় মডেল প্রকল্প নেয়া হয়েছে।

সুজানগর উপজেলার পোড়াডাঙ্গা বাজার সংলগ্ন কৃষক পর্যায়ে দেশীয় পদ্ধতিতে পেঁয়াজ সংরক্ষণ পদ্ধতি দেখতে আসেন।

এসময় জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু, পাবনা-২ আসনের সংসদ সদস্য আহমেদ ফিরোজ কবির, কৃষি সচিব ওয়াহিদা আক্তার, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আসম আব্দুর রহিম পাকন, সুজানগর উপজেলা চেয়ারম্যান শাহীনুজ্জামান শাহীন, পৌর মেয়র রেজাউল করিম রেজা, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো.তরিকুল ইসলাম, উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ রাফিউল ইসলাম, উপজেলা আ.লীগের সভাপতি আব্দুল ওহাবসহ বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

এদিন কৃষিমন্ত্রী ইয়ার ফ্লো চেম্বার সিস্টেমে আধুনিক পেঁয়াজ সংরক্ষণাগার এবং সনাতন পদ্ধতির পেঁয়াজ সংরক্ষণাগার পরিদর্শন করেন।

দুপুরে মন্ত্রী সদর উপজেলার গয়েশপুর ইউনিয়নের জালালপুরে কৃষক রফিকুল ইসলামের ব্রিধান ৮৯ জাতের বোরো ধান কর্তন উৎসবে অংশ নেন।একই সময়ে সমন্বিত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে খামার যান্ত্রিকীকরণ প্রকল্পের আওতায় কৃষকের মধ্যে ভর্তকী মুল্যে একটি কম্বাইন হার্ভেষ্টার বিতরন করেন।

বিকালে কৃষি মন্ত্রী পাবনা জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে বিনা উদ্ভাবিত জনপ্রিয় জাত সমুহের পরিচিতি এবং বিদ্যমান শস্য বিন্যাসে অন্তর্ভুক্তিকরন শির্ষক কর্মশালায় অংশ নেন।

এসব অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে কৃষি সচিব বেগম ওয়াহিদা আক্তার, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বাদল চন্দ্র বিশ্বাস, বিনার মহাপরিচালক ড. মির্জা মোফাজ্জল ইসলাম, পাবনার জেলা প্রশাসক ব্শ্বিাস রাসেল হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, উত্তরবঙ্গের পেঁয়াজের রাজধানী খ্যাত সুজানগরে প্রথমবারের মতো ইয়ার ফ্লো চেম্বার সিস্টেমে আধুনিক পেঁয়াজ সংরক্ষণাগার স্থাপন করা হয়েছে।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্যোগে ও উন্নয়ন সংস্থার কারিগরি সহায়তায় উপজেলায় তিনটি ইয়ার ফ্লো চেম্বার সিস্টেমে পেঁয়াজ সংরক্ষণাগার স্থাপন করা হয়েছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

eight + 6 =


অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ

x