ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মঙ্গলবার সকাল ৭টা ৫০ মিনিটে ইউএস বাংলার একটি ফ্লাইটে দেশে আনা হয় মিয়াভাই খ্যাত অভিনেতা আকবর হোসেন পাঠান ফারুকের মরদেহ।এরপর এই নায়কের নিথরদেহ নিয়ে যাওয়া তার উত্তরার বাসায়।সেখানে থেকে দুপুরে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা জানানোর জন্য তাকে নিয়ে যাওয়া হয় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন জনপ্রিয় খল অভিনেতা মিশা সওদাগর।
এসময় তিনি বলেন, ‘ফারুক ভাই নিয়ে কথা বলে শেষ করা যাবে না।তিনি অত্যন্ত অমায়িক মানুষ ছিলেন।ফারুক ভাই সম্মানের দিক থেকে আমার কাছে একজন পীর সমতুল্য।ফারুক ভাইয়ের প্রতি কারো যতই রাগ থাকুক না কেন, তার সামনে এসে দাঁড়ালেই সব রাগ পানি হয়ে যেত।এমনকি তিনি সেই ব্যক্তিকে বুকে জড়িয়েও নিতেন।তার মতো মানুষ আমি দ্বিতীয়জন দেখিনি।’
তিনি আরও বলেন, ‘পীর শব্দের অর্থ কি আমি জানি না।তবে আমরা জানি, পীর যাকে মানা হয় তাকে অনেক মান্য-গণ্য করা হয় এবং তিনি সবার মুরুব্বী।আমি সবসময় ফারুক ভাইকে বলতাম, আপনি আমার পীর সাহেব।’
পুরোনো স্মৃতি স্মরণ করে মিশা বলেন, ‘এবার আমি চলচ্চিত্র সমিতিতে নির্বাচন করতে চাইনি।বন্ধু-বান্ধব, বড় ভাই ও সহশিল্পীরা অনেকেই আমাকে নির্বাচনের জন্য অনুরোধ করেছিল।সবাইকে না করে দিয়েছিলাম।কিন্তু ফারুক ভাইয়ের কথায় নির্বাচন করেছি।ফারুক ভাই এমন একজন মানুষ, যাকে কখনো “না” বলা আমার পক্ষে সম্ভব না।তার কাছে কেউ কোনো সমস্যা নিয়ে গেলে তিনি সর্বোচ্চটা দিয়ে চেষ্টা করেছেন।কেউ তার কাছ থেকে ফেরত আসেনি।’
এদিকে, সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের পর বরেণ্য অভিনেতা, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও ঢাকা-১৭ আসনের সংসদ সদস্য ফারুকের মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় এফডিসিতে।শেষবারের মত এই নায়ককে বিদায় জানাতে ছুটে আসেন সহকর্মী ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা।সেখানে অনুষ্ঠিত হয় তার জানাজা।এরপর এফডিসি থেকে ফারুকের মরদেহ নেওয়া হয় চ্যানেল আই ভবনে।সেখানেও আরেক দফা জানাজা শেষে কিংবদন্তী অভিনেতার মরদেহ নেওয়া হয় গুলশান আজাদ মসজিদে।
সেখানে বাদ আসর আরেক দফা নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।জানাজা শেষে আজ সন্ধ্যা ৭টায় মিয়া ভাইকে নিয়ে যাওয়া হয় গ্রামের বাড়ি গাজীপুরের কালিগঞ্জে।সেখানে দখিন সোম টিওরী জামে মসজিদে জানাজা শেষে পাঠান বাড়ির পারিবারিক কবরস্থানে বাবার কবরের পাশে শায়িত হবেন কিংবদন্তি এই অভিনেতা।