সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় না ফেরার দেশে চলে গেলেন বাংলা চলচ্চিত্রের মিয়া ভাই খ্যাত কিংবদন্তি অভিনেতা, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও ঢাকা-১৭ (গুলশান-বনানী) আসনের সংসদ সদস্য আকবর হোসেন পাঠান (ফারুক)।ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।
আজ সোমবার সকাল সাড়ে আটটায় (বাংলাদেশ সময়) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
বীর মুক্তিযোদ্ধা নায়ক ফারুকের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তার স্ত্রী ফারহানা পাঠান ও তার ছেলে রওশন হোসেন পাঠান।
ছেলে রওশন হোসেন পাঠান বলেন, ‘গত ৩-৪ দিন যাবত তার শরীর হঠাৎ খারাপ হয়ে যায়।মা ফোন দিয়ে আমাকে বলে সিঙ্গাপুরে আসতে।সংবাদটি শুনে দ্রুত আমি সেখানে যাই।হয়তো বাবা আমার জন্যই কদিন খুব কষ্ট করেছেন। আপনারা সবাই আমার বাবার জন্য দোয়া করবেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘হাসপাতালে কাজ শেষ করে বাবাকে দেশে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করছি।’
উল্লেখ্য, কিংবদন্তি এ অভিনেতা প্রায় পাঁচ দশক ধরে বড় পর্দা মাতিয়েছেন।একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে ঢাকা-১৭ আসনে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি।
১৯৪৮ সালের ১৮ আগস্ট মানিকগঞ্জের সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন চিত্রনায়ক ফারুক।মানিকগঞ্জে জন্ম হলেও তার শৈশব-কৈশোর ও যৌবনকাল কেটেছে পুরান ঢাকায়।১৯৭১ সালে এইচ আকবর পরিচালিত ‘জলছবি’তে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে বাংলা চলচ্চিত্রে ফারুকের আত্মপ্রকাশ ঘটে।প্রথম সিনেমায় তার বিপরীতে ছিলেন কবরী।এরপর ১৯৭৩ সালে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র খান আতাউর রহমানের পরিচালনায় ‘আবার তোরা মানুষ হ’ ও ১৯৭৪ সালে নারায়ণ ঘোষ মিতার আলোর মিছিল এ দুটি সিনেমায় পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয় করেন তিনি।
১৯৭৫ সালে তার অভিনীত ‘সুজন সখী’ ও ‘লাঠিয়াল’ সিনেমা দুটি ব্যাপক ব্যবসা সফল হয়।ওই বছর ‘লাঠিয়াল’র জন্য তিনি সেরা-পার্শ্ব অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান।১৯৭৬ সালে ‘সূর্যগ্রহণ’ ও ‘নয়নমণি’, ১৯৭৮ সালে শহীদুল্লাহ কায়সারের উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত আব্দুল্লাহ আল মামুনের ‘সারেং বৌ’, আমজাদ হোসেনের ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’সহ বেশকিছু সিনেমায় ‘মিয়া ভাই’ খ্যাত চিত্রনায়ক ফারুকের অভিনয় প্রশংসিত হয়।
২০১৬ সালে আজীবন সম্মাননা অর্জন করেন এ অভিনেতা।বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের ইতিহাসে তিনি সবচেয়ে সফল ও সেরা নায়কদের একজন হিসেবে স্বীকৃত।