ঢাকা ০৩:৪০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ মার্চ ২০২৩, ১০ চৈত্র ১৪২৯ বঙ্গাব্দ
বিশেষ বিজ্ঞপ্তি ::
দেশের জনপ্রিয় সর্বাধুনিক নিয়ম-নীতি অনুসরণকৃত রাজশাহী কর্তৃক প্রকাশিত নতুনধারার অনলাইন নিউজ পোর্টাল 'যমুনা প্রতিদিন ডট কম' এ আপনাকে স্বাগতম...

হাতীবান্ধায় সুদের টাকার জন্য যুবককে মারধর,ভিডিও করায় সাংবাদিকের উপর হামলা

মাজাহারুল ইসলাম মামুন,লালমনিরহাটঃ
  • আপডেট সময় : ০৬:১৭:১৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৮ মার্চ ২০২৩ ৭৬ বার পড়া হয়েছে
যমুনা প্রতিদিন অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় সুদের পাওনা টাকার জন্য জাকির হোসেন (২৫) নামে এক মাইক্রোবাস চালককে আটক করে মারধর করেন মাদক কারবারি সিরাজুল ও তার লোকজন।খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ভিডিও করলে সাংবাদিকদের উপর চড়াও হয়ে অতর্কিতভাবে হামলা করেন সিরাজুল ও তার লোকজন।

পরে স্থানীয় থানায় বিষয়টি অবগত করা হলে পুলিশ এসে ভুক্তভোগী জাকির হোসেনকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়।সেই ঘটনার ভিডিও ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) রাতে হাতীবান্ধায় থানায় সিরাজুলের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী জাকির হোসেন।

এই ঘটনায় এর আগে ওই দিন বিকেলে সিরাজুলের বিরুদ্ধে থানায় আরও একটি লিখিত অভিযোগ করেন সাংবাদিক মাহমুদ হাসান।

ভুক্তভোগীরা হলেন, উপজেলার টংভাঙ্গা এলাকার আবদার হোসেনের ছেলে জাকির হোসেন ও দৈনিক কালের কন্ঠ পত্রিকার হাতীবান্ধা উপজেলা প্রতিনিধি মাহমুদ হাসান।

আর অভিযুক্ত সিরাজুল ইসলাম উপজেলার উত্তর হলদীবাড়ি গ্রামের মৃত আবদার রহমানের ছেলে।

জানা গেছে, উপজেলার মেসার্স ডি এস ফিলিং স্টেশন এলাকায় সুদের পাওনা টাকার জন্য চালক জাকিরকে আটক করে মারধর করেন মাদক কারবারি সিরাজুল ও তার লোকজন।খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ভিডিও করলে সাংবাদিকদের উপর চড়াও হয়ে হামলা করেন সিরাজুল ও তার লোকজন।পরে স্থানীয় থানায় বিষয়টি অবগত করা হলে।পুলিশ এসে ভুক্তভোগী জাকির হোসেনকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়।পরে সেখান থেকে হাতীবান্ধা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয় জাকির হোসেন।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী জাকির বলেন, আমি সিরাজুলের নিকট থেকে ১০ হাজার টাকা সুদের উপর নিয়ে দেই সাফিউল সর্দারকে।সাফিউল সর্দার এখন কোথায় আছে জানি না।কিন্তু আমি সেই টাকার মধ্যে ৫ হাজার টাকা ইতোমধ্যে সিরাজুলকে দিয়েছি।আর বাকি ৫ হাজার টাকা আগামী ২৫ মার্চ পরিশোধ করবো বলে সময় নেই।কিন্তু বৃহস্পতিবার ১৬ মার্চ সিরাজুল আমাকে সেই টাকার জন্য আটক করে মারধর করে।খবর পেয়ে সাংবাদিকরা এসে সিরাজুলকে প্রশ্ন করেন টাকার জন্য কাউকে আটক করা কি ঠিক? আপনি যদি টাকা পান, আর সে যদি না দেয়, তাহলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করেন এই কথা বলা মাত্র সিরাজুল ও তার লোকজন আমার উপর আরও বেশি ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে মারধর করে টেনে নিয়ে যেতে থাকে।

এ সময় সাংবাদিকরা ভিডিও করলে সিরাজুল ও তার লোকজন সাংবাদিকদের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে তাদের উপরেও হামলা চালায়।পরবর্তীতে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে আমাকে উদ্ধার করে।

তিনি আরও বলেন, তারা টাকার জন্য আমাকে প্রচুর মারধর করেছে।পুলিশ আমাকে উদ্ধার না করলে তারা হয়তো আমাকে মেরে ফেলতো।আমি থানায় অভিযোগ করেছি।এর সুষ্ঠ বিচার চাই।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী সাংবাদিক মাহমুদ হাসান বলেন, আমাদের কাজই হলো ছবি ও ভিডিও করা।জাকিরকে মারধর করার ভিডিও করলে সিরাজুল ও তার লোকজন আমাদের উপর অতর্কিত ভাবে হামলা করে।বিষয়টি পুলিশকে অবগত করা হলে পুলিশ এসে জাকিরকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমরা তাদেরকে কোন মারধর করি নাই।তারাই আমাদেরকে মারধর করেছে।আপনি ও আপনার লোকজন সাংবাদিক ও জাকিরের উপর হামলা করেছেন তার ভিডিও আমাদের নিকট আছে এমন প্রশ্ন করা হলে তার কোন সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি।

এ বিষয়ে হাতীবান্ধা প্রেসক্লাবের সভাপতি ইলিয়াস বসুনিয়া পবন বলেন, সাংবাদিকের উপর হামলা কোনভাবে মেনে নেওয়া যায় না।সাংবাদিকের কাজ ছবি তোলা ও ভিডিও করা।এ বিষয়ে প্রেসক্লাবে আলোচনা করে সাংগঠনিক ভাবে কর্মসূচী ঘোষনা দেয়া হবে।

এ বিষয়ে হাতীবান্ধা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ আলম বলেন, অভিযোগ পাওয়া গেছে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

হাতীবান্ধায় সুদের টাকার জন্য যুবককে মারধর,ভিডিও করায় সাংবাদিকের উপর হামলা

আপডেট সময় : ০৬:১৭:১৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৮ মার্চ ২০২৩

লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় সুদের পাওনা টাকার জন্য জাকির হোসেন (২৫) নামে এক মাইক্রোবাস চালককে আটক করে মারধর করেন মাদক কারবারি সিরাজুল ও তার লোকজন।খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ভিডিও করলে সাংবাদিকদের উপর চড়াও হয়ে অতর্কিতভাবে হামলা করেন সিরাজুল ও তার লোকজন।

পরে স্থানীয় থানায় বিষয়টি অবগত করা হলে পুলিশ এসে ভুক্তভোগী জাকির হোসেনকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়।সেই ঘটনার ভিডিও ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) রাতে হাতীবান্ধায় থানায় সিরাজুলের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী জাকির হোসেন।

এই ঘটনায় এর আগে ওই দিন বিকেলে সিরাজুলের বিরুদ্ধে থানায় আরও একটি লিখিত অভিযোগ করেন সাংবাদিক মাহমুদ হাসান।

ভুক্তভোগীরা হলেন, উপজেলার টংভাঙ্গা এলাকার আবদার হোসেনের ছেলে জাকির হোসেন ও দৈনিক কালের কন্ঠ পত্রিকার হাতীবান্ধা উপজেলা প্রতিনিধি মাহমুদ হাসান।

আর অভিযুক্ত সিরাজুল ইসলাম উপজেলার উত্তর হলদীবাড়ি গ্রামের মৃত আবদার রহমানের ছেলে।

জানা গেছে, উপজেলার মেসার্স ডি এস ফিলিং স্টেশন এলাকায় সুদের পাওনা টাকার জন্য চালক জাকিরকে আটক করে মারধর করেন মাদক কারবারি সিরাজুল ও তার লোকজন।খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ভিডিও করলে সাংবাদিকদের উপর চড়াও হয়ে হামলা করেন সিরাজুল ও তার লোকজন।পরে স্থানীয় থানায় বিষয়টি অবগত করা হলে।পুলিশ এসে ভুক্তভোগী জাকির হোসেনকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়।পরে সেখান থেকে হাতীবান্ধা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয় জাকির হোসেন।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী জাকির বলেন, আমি সিরাজুলের নিকট থেকে ১০ হাজার টাকা সুদের উপর নিয়ে দেই সাফিউল সর্দারকে।সাফিউল সর্দার এখন কোথায় আছে জানি না।কিন্তু আমি সেই টাকার মধ্যে ৫ হাজার টাকা ইতোমধ্যে সিরাজুলকে দিয়েছি।আর বাকি ৫ হাজার টাকা আগামী ২৫ মার্চ পরিশোধ করবো বলে সময় নেই।কিন্তু বৃহস্পতিবার ১৬ মার্চ সিরাজুল আমাকে সেই টাকার জন্য আটক করে মারধর করে।খবর পেয়ে সাংবাদিকরা এসে সিরাজুলকে প্রশ্ন করেন টাকার জন্য কাউকে আটক করা কি ঠিক? আপনি যদি টাকা পান, আর সে যদি না দেয়, তাহলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করেন এই কথা বলা মাত্র সিরাজুল ও তার লোকজন আমার উপর আরও বেশি ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে মারধর করে টেনে নিয়ে যেতে থাকে।

এ সময় সাংবাদিকরা ভিডিও করলে সিরাজুল ও তার লোকজন সাংবাদিকদের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে তাদের উপরেও হামলা চালায়।পরবর্তীতে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে আমাকে উদ্ধার করে।

তিনি আরও বলেন, তারা টাকার জন্য আমাকে প্রচুর মারধর করেছে।পুলিশ আমাকে উদ্ধার না করলে তারা হয়তো আমাকে মেরে ফেলতো।আমি থানায় অভিযোগ করেছি।এর সুষ্ঠ বিচার চাই।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী সাংবাদিক মাহমুদ হাসান বলেন, আমাদের কাজই হলো ছবি ও ভিডিও করা।জাকিরকে মারধর করার ভিডিও করলে সিরাজুল ও তার লোকজন আমাদের উপর অতর্কিত ভাবে হামলা করে।বিষয়টি পুলিশকে অবগত করা হলে পুলিশ এসে জাকিরকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমরা তাদেরকে কোন মারধর করি নাই।তারাই আমাদেরকে মারধর করেছে।আপনি ও আপনার লোকজন সাংবাদিক ও জাকিরের উপর হামলা করেছেন তার ভিডিও আমাদের নিকট আছে এমন প্রশ্ন করা হলে তার কোন সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি।

এ বিষয়ে হাতীবান্ধা প্রেসক্লাবের সভাপতি ইলিয়াস বসুনিয়া পবন বলেন, সাংবাদিকের উপর হামলা কোনভাবে মেনে নেওয়া যায় না।সাংবাদিকের কাজ ছবি তোলা ও ভিডিও করা।এ বিষয়ে প্রেসক্লাবে আলোচনা করে সাংগঠনিক ভাবে কর্মসূচী ঘোষনা দেয়া হবে।

এ বিষয়ে হাতীবান্ধা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ আলম বলেন, অভিযোগ পাওয়া গেছে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।