শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:৫৭ অপরাহ্ন
নোটিশ :
দেশের জনপ্রিয় সর্বাধুনিক নিয়ম-নীতি অনুসরণকৃত রাজশাহী কর্তৃক প্রকাশিত নতুনধারার অনলাইন নিউজ পোর্টাল ‘যমুনা প্রতিদিন ডট কম’

ন্যাড়া টিম এবং একজন হিমুর গল্প

তখন কলেজে পড়ি। থাকি কলেজ হোস্টেলে। সামনে বিশাল পুকুর। আমরা প্রায়ই দেখতাম বাংলার জাহাজ নামে পরিচিত অতুল স্যার কলেজ হোস্টেলের সামনের পুকুরে ছোট্ট ডিঙি নৌকা নিয়ে জোছনা বিলাস করছেন। তিনি হিমু। রাতে দলবল নিয়ে গ্রামের রাস্তায় হাঁটতে ভালোবাসেন।এই ঘুরাঘুরির তিনি একটা নামও দিয়েছেন পাড়া বেড়ানো। সেই স্কুল জীবন থেকে হিমুকে কালো বর্ণে চিনি; বইয়ের পাতায়-কল্পনা করি। তারপর এই হিমু স্যারের সান্নিধ্য পাওয়ার জন্য বিভিন্ন চেষ্টা তদবির শুরু করলাম। স্যারও কম যান না, তিনিও বাইন মাছের মতোই ভীষণ পিচ্ছিল।যতোই ধরতে যাই, হাত ফসকে বেড়িয়ে যান। আর আমিও বেহায়া হিসেবে হিমালয়ের সুউচ্চ চূড়া। একটা সময় স্যারকে আমি ছাই দিয়ে ধরে ফেলি। তারপর থেকে হিমু ও হিমু ভক্ত শিষ্যের অদ্ভুত কান্ডকারখানায় কলেজের সবাই তাজ্জব হয়ে যেতো। আমাদের গুরু শিষ্যের সম্পর্ক সবার কাছে জোছনা ভেজা পুকুরের জলের মতোই স্বচ্ছ ও পরিষ্কার।

কলেজ হোস্টেলের পূর্বদিকের শ্মশানে চুল্লির রেলিংয়ে বসে গালগল্পে রাত কাটানো। খালি পায়ে হাঁটতে হাঁটতে রাতের গ্রাম পাড়ি দেয়া। এসব ছিলো আমাদের প্রিয়তর নিত্যনৈমিত্তিক বিষয়। অতুল স্যারকে তারপর আমি আর কখনো স্যার ডাকিনি। গুরুজি বলে ডাকতে শুরু করি।স্যারও আমাকে বিটুইল্ল্যা নামে ডাকেন। সেই ডাকে এখনো আমি অদ্ভুত এক মায়া খুঁজে পাই!

বসন্তের মন খারাপ। কিছুক্ষণ আগে বৃষ্টি হলো বেশ। এখন হঠাৎই হৈহৈ রৈরৈ করে একপ্লেট চাঁদ উঠেছে আকাশে।চিড়িয়াখানার খাঁচায় বন্দি হরিণের মতো জানালার বাইরে মুখ বাড়িয়ে আমি চিবিয়ে চিবিয়ে জোছনা খাচ্ছি। আকাশে এমন মায়ার চাঁদ দেখলে আমার কবিতা লিখতে খুব ইচ্ছে করে। কিন্তু যখনই কবিতা লিখার জন্য খাতা কলম হাতে নেই তখনই পঙক্তিগুলো পেটে ধলা পাকিয়ে নিঃশ্বাসের সাথে হাওয়ায় মিলিয়ে যায়। আমার আর কবি হয়ে উঠা হয়না। তবে এখন আমি গুরুজির আবৃত্তি শুনছি। গুরুজি পুকুরের ঠিক মাঝখানে নৌকায় চিৎ হয়ে শুয়ে আছেন। জোছনা জলে স্নান করতে করতে আবৃত্তি করছেন নির্ঝরের স্বপ্নভঙ্গ। আহ! কি যে যাদু এই গলাটায়।অদ্ভুত এক ক্যারেক্টার আমার গুরুজি।

-বিটুইল্লা,পড়তাছোত তো!

-হ । হৈমন্তীকে নিয়া আছি,গুরুজি।

-থাক। তুই হৈমন্তীর মধ্যে ভালো করে ডুব দে। আমি আরেকটু জোছনা গিল্লা আসছি। তুই পড়তে থাক। এসেই হৈমন্তীকে নিয়ে দু’জন বসবো।

অবিবাহিত মানুষ তিনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় পড়াশোনা করেছেন। বংশের ঐতিহ্য রক্ষার মহান দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন। ওনার বংশের চৌদ্দগুষ্টি বাংলার টিচার। সেই ধারাবাহিকতা রক্ষায় ওনাকেও খুব আন্তরিক মনে হয়। সুদর্শন একজন তরুণ শিক্ষকের জন্য কলেজের অনেক সুন্দরী শিক্ষার্থীদের মনে গোপন ফাগুনের চাষাবাদ হয়। গুরুর সাচ্চা শিষ্য হিসেবে হবু বৌদিগণের নিকট আমার কদর ছিলো সেইরকম।বৌদিদের ভালোবাসায় আমিই আগে সিক্ত হতাম। মাঝে মাঝে ওনারা আমাকে নানান গিফট করতেন। নিজেকে রাধাকৃষ্ণের বড়ায়ি চরিত্র মনে হতো খুব।

সবে আমি হৈমন্তীর বেদনার অংশে ঢুকেছি। মনটা ভিজে আসতে শুরু করেছে। হঠাৎই আমাকে ভড়কে দিলেন গুরুজি। জানালার পাশে দাঁড়িয়ে শিস্যের হৈমন্তীর রস আস্বাদন প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করছিলেন। আমি ভূতে পাওয়ার মতো ভয় পেয়ে বুকে থুথু দিতে থাকলাম।

-তুই বাড়ি থেকে আসবি কবে?

-গুরুজি, এই তো বৃহস্পতিবার রওনা হয়ে যামু আর আসমু পরের বৃহস্পতিবার। আম কাঁঠালের ছুটি তো। বাপ মার লগে কাটাইয়া আহি।

– হুম। টেস্ট পরীক্ষার জন্য ভালো করে পড়িস।এবার প্রথম হতে হবে তোকে। আমার সম্মানটা রাখিস, প্লিজ।

আমাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়েই গুরুজি চলে গেলেন ওনার রুমে।

সকালে টেবিলে বসে পড়ছি। বিনা নোটিশে সুমন দৌঁড়ে এসে হুমড়ি খেয়ে পড়লো আমার রুমে। কিছু না বলেই সে আমাকে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে গেলো বাইরে। বাইরে গিয়ে আমি তো তাজ্জব বনে গেলাম। একি গুরুজি হঠাৎ মাথা ন্যাড়া করছেন! গুরু তো সচরাচর এতো সকালে ঘুম থেকেই উঠেন না। অথচ এতো সকালে উঠে মাথা ন্যাড়া শুরু করছেন! অবশ্যই এর পেছনে বিরাট কোনো ফজিলতের গোপন মাহাত্ম্য আছে। এদিকে রাজন শিল দারুণ দক্ষতার সাথে গুরুজির মাথায় খুর চালাচ্ছেন।

– গুরুজি, এইটা কি করলেন! চুল কামাইলেন কেন?

– পরে বলবো। এর পেছনে দারুণ একটা মজার গল্প আছে।আজ রাতে জোছনা উঠলে গল্পটা বলবো। তবে সবাইকে না। যারা মাথা ন্যাড়া করে আমার দলে আসবি তারাই আজ পাড়া বেড়াতে যেতে পারবি। আহ! শান্তি শান্তি শান্তি।

আমি খেয়াল করেছি আমাদের কেউ কেউ আড়াল থেকে দাঁত কেলিয়ে হাসছে। হয়তো কেউ কেউ মনে মনে গুরুকে পাগল ভাবছে। তাই রাজন দা’কে বললাম আমিও ন্যাড়া হবো। আমার মাথা ন্যাড়া করতে দেখে সুমনও বসলো।গুরুজিকে অনুসরণ করে হোস্টেলের মোট সতেরো জন তাদের মাথা ন্যাড়া করলো। বিটুল নিজের মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে নিজেকে সান্ত্বনা দিচ্ছে যে- সত্যিই তো মাথা হেব্বি হালকা লাগছে। শীতল একটা বাতাস মাথায় বারবার আলতো করে চুমু দিয়ে যাচ্ছে। আহ! শুধু শান্তি, শান্তি আর শান্তি।

সকাল দশটায় আজ গুরুজি ক্লাস নিবেন। গুরুর নেতৃত্বে আমরা একসাথে হোস্টেল থেকে বের হয়েছি। ধীরপায়ে সতেরো ন্যাড়া মাথা এগিয়ে যাচ্ছে কলেজের দিকে।বীরদর্পে সামনে হাঁটছেন গুরুজি। রাস্তার পাশের উৎসুক জনতা আমাদের দিকে হা করে তাকিয়ে আছেন। মনে হচ্ছে তারা লাইভে ভিনগ্রহের এলিয়েন দেখছেন! কলেজ ক্যাম্পাসে ঢুকতেই আজ দারোয়ান কদম আলী মুখে সালাম না দিয়েই অর্ধেক হাত তুলে হা করে দাঁড়িয়ে গেলেন।অনেকে আমাদের টিমকে দেখে মুখ টিপে টিপে হাসছে। গুরুজি বিষয়টা মনে হয় বেশ উপভোগ করছেন। শিষ্য হিসেবে আমরাও যথাযথভাবে দারুণ উপভোগ করছি। তবে আমার ভেতরে কিছুটা লজ্জা আর ভয়ও কাজ করছে। ক্লাসে ঢুকলেই তো শিবুসহ মেয়েরা পোয়া মাছের মতো দন্ত প্রদর্শন করবে! হয়তো নজরুলের মতো দুষ্টু বন্ধুরা হাতে থুথু নিয়ে আমার দিকে ত্যাড়ে আসবে গোয়ার ষাঁড়ের গতিতে। আমার মাথায় তাদের আশীর্বাদপুষ্ট হাতটা ছুঁয়ে দেয়ার জন্য প্রাণপণে লড়ে যাবে। ছড়াকার অপুর ঠোঁটে খইয়ের মতো বুটবুট করে ফুটবে ন্যাড়া মার্কা ছড়া,’বেল মাথা চার আনা/চাবি দিলে ঘুরে না/চাবির মধ্যে রক্ত/বেল মাথা শক্ত।’

গুরুজি আজ তিনি সাইন্স, আর্টস ও কমার্সে ক্লাস নিলেন।তারপর থেকেই নাকি স্যালুনগুলো মাথা ন্যাড়া করার জন্য লাইন পড়ে গেছে। হোস্টেলে হোস্টেলে এক বন্ধু আরেক বন্ধুর মাথা ন্যাড়া করে দিচ্ছে। সে কি দারুণ দৃশ্য। মাথা ন্যাড়া করার হুজুগ পড়ে গেছে।

আজ বুধবার।আগামীকাল থেকে কলেজ ছুটি। অনেকের মনে বাড়ি যাওয়ার জন্য ঈদের আমেজ কাজ বিরাজ করছে। আমি গতকাল রাতেই ব্যাগ গুছিয়ে রেখেছিলাম।কিন্তু সকালে বাড়ি যাওয়ার সিদ্ধান্ত বাদ দিয়েছি। টাক মাথায় বাড়ি গেলে মহল্লার সবাই আমাকে নিয়ে হাসাহাসি করবে। এসব সহ্য হবে না আমার। কলেজে গিয়ে তো আমি অবাক। চারিদিকে শুধু ন্যাড়া মাথা। যেদিকে তাকাই শুধু বেল মাথা আর বেল মাথা। সদর্পে কলেজ চত্বরে সূর্যের আলোয় চিকচিক করছে মাথাগুলো। এদিকে কলেজের কিছু সুশীল লোকজন শিক্ষার্থীদের মাথা নষ্ট করে দেয়ার জন্য গুরুজিকে ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে চিহ্নিত করার চেষ্টা করছেন। অধ্যক্ষ স্যারের নিকট নাকি তারা কয়েকজন গিয়ে রসিয়ে কষিয়ে কলেজের সুনাম নষ্ট করার জন্য নালিশও করেছেন। পিয়ন রহমত ভাইকে দিয়ে গুরুজি কলেজের অফিসকক্ষে ডেকে পাঠালেন অধ্যক্ষ স্যার। গুরুজি অফিসে নিজের চেয়ারে বসলেন। ওনার আগাগোড়া ঠিকঠাক ভালো করে দেখে নিলেন অধ্যক্ষ স্যার।

– অতুল সাহেব, আপনি কেমন আছেন? রাতে ঘুম ভালো হয়েছে তো?

– জ্বী, স্যার। দারুণ ঘুম হয়েছে। মাথা তো সেই হালকা লাগছে, স্যার। মনে হচ্ছে মাথার উপর একটা শীতল প্রজাপতি ডানা মেলে বসে আছে। হা হা হা। ইচ্ছে করলে আপনারাও চেষ্টা করে দেখতে পারেন, স্যার।

– আচ্ছা, আপনার কোনো সমস্যা নেই তো? থাকলে আমাকে নিঃসঙ্কোচে বলতে পারেন।

– না তো, স্যার। হঠাৎ এ কথা বলছেন যে, স্যার!

– না, মানে আপনি হঠাৎ মাথার চুল ফেলে দিয়েছেন!গুরুজির কথাটা সবার কর্ণকুহরে ধ্বনি প্রতিধ্বনি হচ্ছে।

অধ্যক্ষ স্যারের কথা শেষ করতে না করতে কয়েকজন শিক্ষক একসাথে হা হা হু হু করে হেসে ফেললেন। একজন সিনিয়র শিক্ষক তো অধ্যক্ষ স্যারের কাছে অতুল গুরুকে আকারে ঈঙ্গিতে পাগল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে গেলেন। তবে অধ্যক্ষ স্যারের ধমকে সবাই চুপসে গেলেন।

– অতুল সাহেব, এই যে তালিকা। এখানে মোট একশো তিরানব্বই জন শিক্ষার্থীর নাম আছে। যারা ইতোমধ্যে আপনার প্ররোচনায় তাদের মাথা ন্যাড়া করেছে। হয়তো আরো সংখ্যাটা বাড়বে।

– কি বলেন, স্যার! ১৯৩ জন! আমি তো জানতাম আমার কলেজ হোস্টেলের মাত্র সতেরো জন মাথা ন্যাড়া করেছেন।

-হ্যাঁ, আমি আপনাকে খুব ভালো করেই জানি। আপনার মধ্যে একটা অদ্ভুত সৃজনশীল ও সম্মোহনী শক্তি রয়েছে। তাই আপনার প্রতি আমার শতভাগ আস্থা এবং বিশ্বাস সবসময়ই ছিলো, আছে এবং থাকবে। মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি আপনার এই মাথা ন্যাড়া করার প্রজেক্টের আড়ালে দারুণ একটা রহস্য অবশ্যই রয়েছে। প্লিজ, আমাকে বিষয়টা খুলে বলুন তো – আপনি কেন হঠাৎ মাথা ন্যাড়া করার এই প্রজেক্ট হাতে নিয়েছেন?

– স্যার, ধন্যবাদ আপনাকে। আসলে এর পেছনে একটাই লক্ষ্য শিক্ষার্থীরা যেন ঘরের বাইরে বের না হয়। কারণ লজ্জায় হলেও ন্যাড়া মাথা নিয়ে যখনতখন কেউ আর ঘরের বাইরে যাবে না। ফলে প্রিয় শিক্ষার্থীদেরকে পড়ার টেবিলমুখী করাটা সহজ হবে। এমনকি আমি চাই আমার কলেজ হোস্টেলের কোনো শিক্ষার্থী যেন বাড়ি না গিয়ে হোস্টেলে থেকেই পড়াশোনা করে। কারণ টেস্ট পরীক্ষা তো খোলার দিন থেকেই শুরু হবে। আমি চাই আমার শিক্ষার্থীরা ভালো প্রস্তুতি নিয়ে পরীক্ষায় একটা তৃপ্তিদায়ক ফলাফল করে নিজের তথা আমার এই কলেজের মুখ উজ্জ্বল করুক।

– দারুণ আইডিয়া তো! ঠিক আছে এই ছুটিতে হোস্টেলে থেকে যারা পড়াশোনা করবে তাদেরকে নিয়ে একদিন আমি উপস্থিত থেকে ‘গণবেল পার্টি’ উৎসবমুখর পরিবেশে উদযাপন করবো।

– অশেষ ধন্যবাদ, স্যার।

– আচ্ছা, আমার লাস্ট একটা প্রশ্ন- আপনি কেন নিজের মাথা ন্যাড়া করেছেন?

– স্যার, টিম লিডার নিজে যদি কাজটা না করে তাহলে কি টিমের অন্য সদস্যরা অনুপ্রাণিত হবে! আমাকে দেখেই তো তারা স্বপ্রণোদিত হয়ে মাথা ন্যাড়া করেছে। এটাই হলো টিমওয়ার্ক, উথআউট ইউযুয়িং ওয়ার্ডস্।

কথাগুলো শুনে অভিযোগকারী কয়েকজন শিক্ষকের মুখ চ্যাপ্টা পাতিলের মতো হয়ে গেলো। অধ্যক্ষ স্যার চেয়ার থেকে উঠে দাঁড়িয়ে অতুল গুরুজিকে বুকে জড়িয়ে নিয়ে বললেন, ‘আই’ম প্রাউড অব মাই ডিয়ার সান। তাহলে আমিও আজ মাথা ন্যাড়া করবো। কি বলেন আপনারা?’ উপস্থিত সকল শিক্ষক নিজ নিজ মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে বললেন,’জ্বী, স্যার। আপনি অনুমতি দিলে আমরাও মাথা ন্যাড়া করতে চাই, স্যার। এবং কলেজ হোস্টেলে আয়োজিত ‘টাক উৎসবে’ অংশগ্রহণ করতে চাই।’

রফিকুল নাজিম

সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার

মাধবপুর, হবিগঞ্জ


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

seven − one =


অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ

x