ঢাকা ০১:০৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ মার্চ ২০২৩, ১১ চৈত্র ১৪২৯ বঙ্গাব্দ
বিশেষ বিজ্ঞপ্তি ::
দেশের জনপ্রিয় সর্বাধুনিক নিয়ম-নীতি অনুসরণকৃত রাজশাহী কর্তৃক প্রকাশিত নতুনধারার অনলাইন নিউজ পোর্টাল 'যমুনা প্রতিদিন ডট কম' এ আপনাকে স্বাগতম...
সংবাদ শিরোনাম ::
সাংবাদিককে রেল কর্মকর্তার হুমকির প্রেক্ষিতে মহাপরিচালক বরাবর অভিযোগ ৪০০ পথচারী রোজাদারের হাতে ইফতারি তুলে দিলেন  মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার রাজশাহী মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত মান্দায় প্রতিপক্ষের মারপিটে নারীসহ আহত ৫ সিলেট বিভাগের শ্রেষ্ঠ উপজেলা চেয়ারম্যান এস এম নুনু মিয়া গলাচিপায় জেলা প্রশাসককে ফুলেল শুভেচ্ছা ঈশ্বরদীতে একই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ১৮ শিক্ষক-কর্মচারীকে শোকজ মোরেলগঞ্জে বিশ্ব যক্ষা দিবস পালন বাগেরহাটে জাল টাকা ও সরঞ্জামসহ আটক ১ চিরকুমারত্ব ভেঙ্গে ৩৫ বছরের মেয়েকে বিয়ে করলেন ৭০ বছরের বৃদ্ধ

মানুষের কথা শেষ হয়ে গেলেই ‘সম্পর্ক’ ফুরিয়ে যায় কি!

খান মোঃ মেহেদী,নিজস্ব প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ০৭:৩৮:৩৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৩ ৭০ বার পড়া হয়েছে
যমুনা প্রতিদিন অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

✍️খান মাহাদী

সারা জীবনে কতোবার আমাদের কতো মানুষের সাথে ‘সম্পর্ক’ হয়।তারপর ধীরে ধীরে আগ্রহের অভিমুখ পাল্টে যায়, জীবনের গুরুত্ব বদলে যায়, কথা কমে আসে, ‘সম্পর্ক’ হারিয়ে যায়।

এক‌ইরকম ঘটনা ঘটে রক্তের সম্পর্কের মানুষের সাথেও।একদিন যে যতো কাছে থাকে, ধীরে ধীরে সে ততোই দূরে চলে যায়।কথা কমে যায়, ‘সম্পর্ক’ তলানিতে গিয়ে পৌঁছায়।

ছেলেবেলায় স্কুলে যে বন্ধুকে ছেড়ে একমুহূর্ত থাকতে পারতাম না, কতক্ষণে স্কুলে গিয়ে মনের সব কথা কলকল করে বলবো বলে অপেক্ষা করতাম, এখন সে শুধুমাত্র‌ই ‘ভার্চুয়াল বন্ধু’।বদলে যায়, গুরুত্বের অভিমুখ বদলে যায়, কথা কমে যায়, সম্পর্কের সুতো ছিঁড়ে যায়।

যে দাদীমার সাথে ঘন্টাখানেক বকবক না করলে রাতে ঘুম হতো না, সেই দাদীমা যখন মারা গেলেন, ধীরে ধীরে সয়ে গেলো তো ! সয়ে গেলো একা বিছানায় শোয়া।গল্প না শুনেই ঘুমিয়ে পড়া।তেমন করে ক‌ই মনে পড়েনা তো আর দাদা-দাদু, নানা – নানু, চাচা – চাচী, মামা – মামী, ফুপা-ফুপু, খালা – খালুকে !

কথা নেই, মনে পড়াও নেই, মানুষগুলো কেমন যেনো ধীরে ধীরে মুছে যেতে থাকে জীবন থেকে।

মনে পড়ে কতো মানুষের উপর অভিমান করে কথা বলিনি।কতো মানুষকে অন্যায়ের শাস্তি দিতে কথা বন্ধ করেছি।আবার, কতো মানুষ তীব্র অভিমানে আমার সাথে কথা বলেনি।কেউবা রাগ করে কথা বলে না।কেউবা অন্য কোনো কারণে।

যাদের এককালে খুব আপন মনে হতো, এখন তাদের সাথে সেভাবেই কথা বলতে গেলে, কেমন বোকা বোকা লাগে। দিন বদলে গেছে, সময় বদলে গেছে।জীবনের অভিমুখ বদলে গেছে।কথা ফুরিয়ে গেছে।সম্পর্ক শেষ হয়ে গেছে।আমরা একাই পৃথিবীতে এসেছি, আর ধীরে ধীরে বয়সের সঙ্গে আবার একা থাকতেও অভ্যস্ত হয়ে উঠছি।

কতোকষ্টে একটা মানুষ, একটা সুসম্পর্ক অর্জন করি আমরা।কথা না বলে আমরা সেই মানুষটার সাথে সম্পর্কটাই হারিয়ে ফেলি।

শুধুমাত্র নিয়মিত কথার অভাবে তা শেষ হয়ে যায় মানুষের ‘সম্পর্ক’ খরচ হয়ে যায় অকারণে।কতো ছোট্ট জীবন।কতো মূল্যহীন আমাদের রোজকার চাওয়া – পাওয়া – দুঃখ – রাগ – রোষ – ক্ষোভ – মান – অভিমান – অভিযোগ !

‘একটা মানুষ নেই’ হয়ে গেলে ক’দিন তাকে মনে রাখে মানুষ ? সাধারণ মানুষ বাতাসের মতো।বাতাস উষ্ণ হয়ে উপরে উঠে গেলে পার্শ্ববর্তী বাতাস ছুটে এসে শূন্যস্থান পূর্ণ করে যেমন।কেউ মারা গেলে আত্মীয়-পরিজন, কাছের মানুষ তেমন‌ই নিজেদের প্রয়োজনে তাঁকে ভুলে যায় ধীরে ধীরে।

মারা যাওয়ার আগে তাই আর কাউকে বাদ দিতে ইচ্ছে করে না।কথা বা ‘সম্পর্ক’ ফুরোতে ইচ্ছে করে না।

মনে হয়, কথা থাকুক।এই মায়ার পৃথিবীতে ‘সম্পর্ক’ থাকুক।ভালোবাসা থাকুক, বন্ধুত্ব থাকুক, আর মানুষটা জমা থাকুক জীবনের হিসেবের খাতায়।

দু’হাজার কুড়ি ও একুশ আমাদের জীবন থেকে অনেক কিছু কেড়ে নিয়েছে।হয়তো আরো নেবে।তাই, আর কোনো ‘সম্পর্ক’ হারাতে ইচ্ছে করে না।

মনে হয়, সবাই থাকুক, কথায় থাকুক, মনে থাকুক, চিন্তায় থাকুক, হৃদয়ের অনেক কাছাকাছি থাকুক।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

মানুষের কথা শেষ হয়ে গেলেই ‘সম্পর্ক’ ফুরিয়ে যায় কি!

আপডেট সময় : ০৭:৩৮:৩৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

✍️খান মাহাদী

সারা জীবনে কতোবার আমাদের কতো মানুষের সাথে ‘সম্পর্ক’ হয়।তারপর ধীরে ধীরে আগ্রহের অভিমুখ পাল্টে যায়, জীবনের গুরুত্ব বদলে যায়, কথা কমে আসে, ‘সম্পর্ক’ হারিয়ে যায়।

এক‌ইরকম ঘটনা ঘটে রক্তের সম্পর্কের মানুষের সাথেও।একদিন যে যতো কাছে থাকে, ধীরে ধীরে সে ততোই দূরে চলে যায়।কথা কমে যায়, ‘সম্পর্ক’ তলানিতে গিয়ে পৌঁছায়।

ছেলেবেলায় স্কুলে যে বন্ধুকে ছেড়ে একমুহূর্ত থাকতে পারতাম না, কতক্ষণে স্কুলে গিয়ে মনের সব কথা কলকল করে বলবো বলে অপেক্ষা করতাম, এখন সে শুধুমাত্র‌ই ‘ভার্চুয়াল বন্ধু’।বদলে যায়, গুরুত্বের অভিমুখ বদলে যায়, কথা কমে যায়, সম্পর্কের সুতো ছিঁড়ে যায়।

যে দাদীমার সাথে ঘন্টাখানেক বকবক না করলে রাতে ঘুম হতো না, সেই দাদীমা যখন মারা গেলেন, ধীরে ধীরে সয়ে গেলো তো ! সয়ে গেলো একা বিছানায় শোয়া।গল্প না শুনেই ঘুমিয়ে পড়া।তেমন করে ক‌ই মনে পড়েনা তো আর দাদা-দাদু, নানা – নানু, চাচা – চাচী, মামা – মামী, ফুপা-ফুপু, খালা – খালুকে !

কথা নেই, মনে পড়াও নেই, মানুষগুলো কেমন যেনো ধীরে ধীরে মুছে যেতে থাকে জীবন থেকে।

মনে পড়ে কতো মানুষের উপর অভিমান করে কথা বলিনি।কতো মানুষকে অন্যায়ের শাস্তি দিতে কথা বন্ধ করেছি।আবার, কতো মানুষ তীব্র অভিমানে আমার সাথে কথা বলেনি।কেউবা রাগ করে কথা বলে না।কেউবা অন্য কোনো কারণে।

যাদের এককালে খুব আপন মনে হতো, এখন তাদের সাথে সেভাবেই কথা বলতে গেলে, কেমন বোকা বোকা লাগে। দিন বদলে গেছে, সময় বদলে গেছে।জীবনের অভিমুখ বদলে গেছে।কথা ফুরিয়ে গেছে।সম্পর্ক শেষ হয়ে গেছে।আমরা একাই পৃথিবীতে এসেছি, আর ধীরে ধীরে বয়সের সঙ্গে আবার একা থাকতেও অভ্যস্ত হয়ে উঠছি।

কতোকষ্টে একটা মানুষ, একটা সুসম্পর্ক অর্জন করি আমরা।কথা না বলে আমরা সেই মানুষটার সাথে সম্পর্কটাই হারিয়ে ফেলি।

শুধুমাত্র নিয়মিত কথার অভাবে তা শেষ হয়ে যায় মানুষের ‘সম্পর্ক’ খরচ হয়ে যায় অকারণে।কতো ছোট্ট জীবন।কতো মূল্যহীন আমাদের রোজকার চাওয়া – পাওয়া – দুঃখ – রাগ – রোষ – ক্ষোভ – মান – অভিমান – অভিযোগ !

‘একটা মানুষ নেই’ হয়ে গেলে ক’দিন তাকে মনে রাখে মানুষ ? সাধারণ মানুষ বাতাসের মতো।বাতাস উষ্ণ হয়ে উপরে উঠে গেলে পার্শ্ববর্তী বাতাস ছুটে এসে শূন্যস্থান পূর্ণ করে যেমন।কেউ মারা গেলে আত্মীয়-পরিজন, কাছের মানুষ তেমন‌ই নিজেদের প্রয়োজনে তাঁকে ভুলে যায় ধীরে ধীরে।

মারা যাওয়ার আগে তাই আর কাউকে বাদ দিতে ইচ্ছে করে না।কথা বা ‘সম্পর্ক’ ফুরোতে ইচ্ছে করে না।

মনে হয়, কথা থাকুক।এই মায়ার পৃথিবীতে ‘সম্পর্ক’ থাকুক।ভালোবাসা থাকুক, বন্ধুত্ব থাকুক, আর মানুষটা জমা থাকুক জীবনের হিসেবের খাতায়।

দু’হাজার কুড়ি ও একুশ আমাদের জীবন থেকে অনেক কিছু কেড়ে নিয়েছে।হয়তো আরো নেবে।তাই, আর কোনো ‘সম্পর্ক’ হারাতে ইচ্ছে করে না।

মনে হয়, সবাই থাকুক, কথায় থাকুক, মনে থাকুক, চিন্তায় থাকুক, হৃদয়ের অনেক কাছাকাছি থাকুক।