রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫:৫৮ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
ঢাকা মাতাতে আসছে পাকিস্তানের বিখ্যাত ব্যান্ড ‘জাল’ রাজশাহীতে গণপিটুনিতে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা নিহত সারিয়াকান্দিতে পৌর মৎস্যজীবী দলের পূর্নাঙ্গ কমিটিতে সভাপতি কাঞ্চন, সম্পাদক ঘেরু পর্তুগাল বিএনপির নেতাদের সাথে রাষ্ট্রদূত রেজিনা আহমেদের সৌজন্য সাক্ষাৎ ও মতবিনিময় সারিয়াকান্দিতে পৌর ৭নং ওয়ার্ড বিএনপির উদ্যোগে মতবিনিময় সভা সারিয়াকান্দিতে পৌর ৭নং ওয়ার্ড বিএনপির উদ্যোগে মতবিনিময় সভা মান্দায় বিএনপির মতবিনিময় ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত আরএমপির দায়িত্ব নিলেন নতুন কমিশনার আবু সুফিয়ান গোদাগাড়ী ও তানোর উপজেলা বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন রাজশাহীতে সমবেত কন্ঠে জাতীয় সংগীত গাইলো উদীচী
নোটিশ :
দেশের জনপ্রিয় সর্বাধুনিক নিয়ম-নীতি অনুসরণকৃত রাজশাহী কর্তৃক প্রকাশিত নতুনধারার অনলাইন নিউজ পোর্টাল ‘যমুনা প্রতিদিন ডট কম’

ঝালকাঠিতে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণার সাত বছরেও নির্মাণ হয়নি নতুন সেতু!

ঝালকাঠির বাসন্ডা নদী।বরিশাল-খুলনা মহাসড়ক দিয়ে যাতায়াত করতে পড়ে এই নদীটি।যানবাহন চলাচলের সুবিধা দিতে আশির দশকে এই নদীর ওপর নির্মাণ করা হয় ১২০ মিটার দৈর্ঘ্যের একটি বেইলি সেতু।

স্থানীয়দের কাছে ‘বাসন্ডা সেতু’ নামে পরিচিত সেতুটি গত চার দশকে জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে।সেতুর ওপরে প্লেটে পড়েছে ছয় শতাধিক তালি।লক্কড়-ঝক্কড় হয়ে পড়া সেতুটিকে সাত বছর আগে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ও ঘোষণা করেছে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ।কিন্তু তার পরও থেমে নেই এই সেতু দিয়ে যান চলাচল।প্রতিদিনই ভারী যানবাহন চলছে সেতুটি দিয়ে।

‘ঝুঁকিপূর্ণ’ ঘোষণার পর থেকেই সেতুটি নতুন করে তৈরি বা আমূল সংস্কারের দাবি জানিয়ে আসছেন স্থানীয়রা।কিন্তু সড়ক ও সেতু বিভাগ সে দাবিতে কর্ণপাত করেনি।বরং প্রতিবছরই নিয়ম করে সেতুতে কিছু মেরামত করা হচ্ছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, এই সামান্য মেরামতের কাজে সেতু দিয়ে চলাচলে ঝুঁকি কমছে না।তারপরও প্রতিবার সংস্কারের নামে খরচ করা হচ্ছে সরকারি কোষাগারের টাকা।এভাবে গত পাঁচ বছরে কেবল সেতু মেরামতেই খরচ করা হয়েছে প্রায় এক কোটি টাকা।

সড়ক বিভাগের সেতু পুনর্নিমাণের বদলে মেরামতের এই আগ্রহের কারণেই ঝুঁকিপূর্ণ এই বাসন্ডা সেতুকে স্থানীয়রা নাম দিয়েছেন ‘সড়ক বিভাগের ‘সোনার ডিম পাড়া হাঁস’।তাদের দাবি,এটি যতবার মেরামত করা হয় ততবারই লাভবান হয় ঝালকাঠি সড়ক বিভাগ।সেই লাভের কারণেই জনগণের ঝুঁকিকে অগ্রাহ্য করা হচ্ছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সড়ক বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান,প্রতি চার মাস পরপর তাৎক্ষণিকভাবে সেতুতে যে মেরামত করা হয়, তাতে দরপত্র আহ্বান করা হয় না।সেতু কর্তৃপক্ষ নিজেরাই কাজটি করে থাকে।এতে তাদের নিজেদের একটু লাভবান হওয়ার সুযোগ তো থাকেই।

তবে মেরামত থেকে লাভবান হওয়ার বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি সওজের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা।তারা বলছেন, সেতুটি পুননির্মাণের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।এ-সংক্রান্ত প্রকল্প প্রস্তাবনাও পাঠানো হয়েছে,যা অনুমোদন পেলে বাস্তবায়নের কাজ শুরু হবে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, টেন্ডার ছাড়াই নিজস্ব তত্ত্বাবধানে বছরে তিনবার সেতুটি মেরামত করে থাকে সড়ক বিভাগ। প্রতিবার মেরামতে খরচ হয় ছয় লাখ টাকা।

ঝালকাঠি সড়ক বিভাগের উপবিভাগের প্রকৌশলী হুমায়ুন কবিরের দেয়া হিসাব অনুযায়ী,সেতুটির কিছু প্লেট পরিবর্তন ও ঝালাইয়ের কাজে গত পাঁচ বছরে তাদের ব্যয় হয়েছে এক কোটি টাকা।

সেতুটির পাশেই রয়েছে গাবখান টোল প্লাজা।সেখান থেকে পাওয়া তথ্য বলছে,এ রুটে বাসন্ডা সেতু দিয়ে প্রতিদিন পাঁচ থেকে সাত শতাধিক ভারী যানবাহন চলাচল করে।এই বিপুল পরিমাণ যান চলাচলের কারণেই প্রতিবার মেরামতের কয়েক দিনের মধ্যেই ফের যান চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ে সেতুটি।নাট-বল্টু খুলে পড়ার পাশাপাশি প্রতিনিয়ত ফেটে যাচ্ছে ওপরের অংশের প্লেট।সেতুটি ভেঙে পড়লে ঝালকাঠি থেকে পিরোজপুর, বাগেরহাট, খুলনা ও যশোরের সড়ক যোগাযোগ সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যাবে।

খুলনা থেকে ট্রাক নিয়া বরিশাল যাচ্ছিলেন ফিরোজ গাজী।তিনি জানান, আনলোড গাড়ি নিয়ে ব্রিজে উঠলে ব্রিজ দুলতে থাকে।আর লোড নিয়া উঠলে তো ভয়ে বুকটা ধড়ফড় করতে থাকে।

কুয়াকাটা থেকে বেনাপোলগামী সেভেনস্টার পরিবহনের চালক মনিরুজ্জামান জানান, গাড়ি নিয়া ব্রিজে উঠলে মনে হয় ভূমিকম্প হইতেছে।এইটা হঠাৎ এক দিন ভাইঙ্গা পড়বে,সে দিন বেশি দূরে না মনে হয়।তাও প্যাটের দায়ে গাড়ি নিয়া যাইতে হয়।

এ রুটে নিয়মিত চলাচলকারী বাস ডলফিন পরিবহনের চালক মালেক হাওলাদার জানান, ‘রাতে ব্রিজ পার হওয়ার সময় যে শব্দ হয়, মনে হয় গাড়ির চাকা থেকে টায়ার খুলে গেছে।ব্রিজ ভাইঙ্গা পড়ার আশঙ্কাও আছে।মেরামতে আর কাজ হবে না।এখন নতুন করে তৈরি করা দরকার।

সেতু এলাকার বাসিন্দারা জানান, রাতে সেতুতে ভারী গাড়ি উঠলে বিকট শব্দ হয়।শব্দ থামানোর জন্য মাঝে মাঝে প্লেটের জয়েন্টগুলো কর্তৃপক্ষ দায়সারাভাবে ঝালাই করে থাকে।কিন্তু সেতুটি যেকোনো সময় ভেঙে পড়তে পারে।গাড়ি নিয়ে ভেঙে পড়লে বড় ধরনের প্রাণহানি হবে।

জানতে চাইলে ঝালকাঠি সড়ক ও জনপদ (সওজ) বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী নাবিল হাসান জানান,‘ঝুঁকিপূর্ণ বাসন্ডা বেইলি সেতুটি কংক্রিট দিয়ে নির্মাণ করার জন্য নকশা ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।ডিপিপি বাস্তবায়ন হলে শিগগিরই এখানে নতুন সেতু নির্মাণ করা হবে।

সওজ বরিশাল অঞ্চলের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আবু হেনা মো. তারেক ইকবাল জানান, ‘ফলোআপ প্রকল্প প্রস্তাব তৈরির জন্য ওয়েস্টার্ন বাংলাদেশ ব্রিজ ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্টের প্রকল্প পরিচালকের কাছে সম্ভাব্য সেতুর যে তালিকা চূড়ান্ত করার জন্য চিঠি দেয়া হয়েছে, তার মধ্যে বাসন্ডা সেতুটিও রয়েছে।অনুমোদন পেলেই নতুন সেতু নির্মাণ করা হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ

x
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com