সুনামগঞ্জের তাহিরপুর সীমান্ত চোরাকারবারীদের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েগেছে। নাটকীয় ভাবে প্রতিদিন রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে ভারত থেকে পাচাঁর করা হচ্ছে কয়লা, পাথর ও মাদকদ্রব্যসহ বিভিন্ন মালামাল।আর এই চোরাচালান করতে গিয়ে বিএসএফের গুলিতে, নদীতে ডুবে ও গর্তে মাটি চাপা পড়ে এপর্যন্ত শতাধিক লোকের মৃত্যু হয়েছে।
তবে বিজিবি ও ডিবি পুলিশ পৃথক অভিযান চালিয়ে পাথর ১৬টি নৌকা ও মদের চালানসহ ২জনকে গ্রেফতার করেছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে-গতকাল মঙ্গলবার (১লা অক্টোবর) রাত সাড়ে ১১টায় তাহিরপুর উপজেলার লাউড়গড় সীমান্তের সাহিদাবাদ, দশঘর ও মুকশেদপুর এলাকা দিয়ে ভারত থেকে মদ, বিড়ি, ফুছকা ও চিনি পাচাঁর শুরু করে চোরাকারবারী বায়েজিদ ও জসিম মিয়াগং।
অন্যদিকে এই সীমান্তের জাদুকাটা নদী দিয়ে টহলে থাকা বিজিবি সদস্যরা সোর্স ইব্রাহিম ও লিটন মিয়াকে দিয়ে প্রতি বারকি নৌকা থেকে ২শত টাকা করে চাঁদা নিয়ে প্রায় ৩শতাধিক বারকি নৌকা ভারতের ঘুমাঘাট এলাকায় পাঠায় মদ ও পাথর আনার জন্য।এখবর পেয়ে লাউড়গড় ক্যাম্প কমান্ডার মহিদুল ইসলাম অভিযান চালিয়ে পাথর বোঝাই ১৬টি বারকি নৌকা আটক করেন।
এর আগে তিনি নদীতে অভিযান চালিয়ে ৪শ ১৪ বোতল ভারতীয় মদের চালান জব্দ করেন।কিন্তু যেসব বিজিবি সদস্যদের সীমান্ত টহলে পাঠানো হয় তারা সোর্সদের নিয়ে পাচাঁরের কাজে লিপ্ত হওয়ার কারণে চোরাচালান বন্ধ হচ্ছেনা।
অপরদিকে এদিন রাত সাড়ে ১০টায় পাশের চাঁনপুর বিজিবি ক্যাম্পের সামনের নয়াছড়া এলাকা দিয়ে চোরাকারবারী কালাম মিয়া, জামাল মিয়া, নজরুল ও হোসেন আলীগং ভারত থেকে মদ ও কয়লা পাচাঁর করে পাশের টেকেরঘাট সীমান্তে বড়ছড়া নিয়ে যাওয়ার সময় ডিবি পুলিশ অভিযান চালায়।ওই সময় ২ কার্টুন মদসহ মাদক ব্যবসায়ী হোসেন আলী (৩০) ও তার মোটর সাইকেল চালক আক্কাছকে আটক করা হয়।
এদিকে টেকেরঘাট সীমান্তের পুলিশ ফাঁড়ির পিছন দিয়ে ও বালিয়াঘাট সীমান্তের লাকমা, লালঘাট এলাকা দিয়ে সারদিন ভারত থেকে পাচাঁরকৃত কয়লা ৩০টি বারকি নৌকা বোঝাই করে টেকেরঘাট বিজিবি ক্যাম্পের পিছনে অবস্থিত একাধিক ডিপুতে নিয়ে মজুত করছে চোরাকারবারীরা।
এছাড়া চানপুর সীমান্তের রাজাই এলাকা গারো ছড়া ও বারেকটিলার ১২০২নং পিলার সংলগ্ন আনন্দনগর ২নং গেইট দিয়ে ক্যাম্প কমান্ডার হাবিলদার মিজানের সহযোগীতায় একাধিক চোরাচালান মামলার আসামী শাহিবুর মিয়া, ফখর উদ্দিন, তোতা মিয়া, বুটকন মিয়া, বুলবুল মিয়া, রফিক মিয়া, নিজাম মিয়া, লাল মিয়া, আকরাম মিয়া, সাদ্দাম মিয়া, জানু মিয়া, সাগর মিয়া ও তোতলা আজাদগং ভারত থেকে প্রতিরাতে কোটিকোটি টাকার চিনি, ফুছকা, মদ, গাঁজা, ইয়াবা, নাসিরউদ্দিন বিড়ি পাচাঁর করে।কিন্তু দুই ক্যাম্পের বিজিবির পক্ষ থেকে অবৈধ মালামাল আটকের কোন খবর পাওয়া যায়না।
এব্যাপারে লাউড়গড় বিজিবি ক্যাম্প কমান্ডার মহিদুল বলেন, জাদুকাটা নদীতে পৃথক অভিযান চালিয়ে পাথর বোঝাই ১৬টি নৌকা আটক করেছি,তারআগে মদের চালান জব্দ করেছি।সীমান্ত চোরাচালান প্রতিরোধের জন্য আমার এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।
চাঁনপুর ক্যাম্পের কমান্ডার হাবিলদার মিজানের সরকারী মোবাইল নাম্বারে একাধিক বারবার ফোন করার পরও ফোন রিসিভ করেনি।
টেকেরঘাট কোম্পানী আতিয়ার রহমান বলেন, সীমান্ত চোরাচালান বন্ধ করার জন্য আমরা চেষ্টা করছি।
এই বিয়ষে জানাতে সুনামগঞ্জ ২৮ব্যাটালিয়নের বিজিবি অধিনায়কের সরকারী মোবাইল নাম্বারে বারবার কল করার পর শুধু ব্যস্ত দেখায়, কেউ রিসিভ করেনি।