ঢাকা ০১:২৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ মার্চ ২০২৩, ১১ চৈত্র ১৪২৯ বঙ্গাব্দ
বিশেষ বিজ্ঞপ্তি ::
দেশের জনপ্রিয় সর্বাধুনিক নিয়ম-নীতি অনুসরণকৃত রাজশাহী কর্তৃক প্রকাশিত নতুনধারার অনলাইন নিউজ পোর্টাল 'যমুনা প্রতিদিন ডট কম' এ আপনাকে স্বাগতম...
সংবাদ শিরোনাম ::
সাংবাদিককে রেল কর্মকর্তার হুমকির প্রেক্ষিতে মহাপরিচালক বরাবর অভিযোগ ৪০০ পথচারী রোজাদারের হাতে ইফতারি তুলে দিলেন  মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার রাজশাহী মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত মান্দায় প্রতিপক্ষের মারপিটে নারীসহ আহত ৫ সিলেট বিভাগের শ্রেষ্ঠ উপজেলা চেয়ারম্যান এস এম নুনু মিয়া গলাচিপায় জেলা প্রশাসককে ফুলেল শুভেচ্ছা ঈশ্বরদীতে একই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ১৮ শিক্ষক-কর্মচারীকে শোকজ মোরেলগঞ্জে বিশ্ব যক্ষা দিবস পালন বাগেরহাটে জাল টাকা ও সরঞ্জামসহ আটক ১ চিরকুমারত্ব ভেঙ্গে ৩৫ বছরের মেয়েকে বিয়ে করলেন ৭০ বছরের বৃদ্ধ

‘ম্যানেজ’ করেই চলছে ঈশ্বরদীতে ফসলি জমিতে অর্ধশতাধিক ইটভাটা

স্বপন কুমার কুন্ডুঃ
  • আপডেট সময় : ০৩:২৮:২৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ জানুয়ারী ২০২৩ ৭৫ বার পড়া হয়েছে
যমুনা প্রতিদিন অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

আইনের তোয়াক্কা না করেই ঈশ্বরদীর লক্ষীকুন্ডা ইউনিয়নেই পূর্ণোদমে আবারো চালু হয়েছে ৫২টি অবৈধ ইটভাটা।

কৃষি জমি বিনষ্ট, ভাটায় কাঠ পোড়ানো, নিয়মনীতি লংঘন ও পরিবেশের ভারসাম্যহীনতার বিষয় বিবেচনা না করে চলতি মৌসুমে ইট পোড়ানো শুরু হয়েছে।

পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র, ইট পোড়ানোর লাইসেন্স, ফায়ার সার্ভিসের সার্টিফিকেট এমন কি ভ্যাট-আয়কর প্রদানের কাগজপত্র ছাড়াই ভাটার মালিকরা ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে আর সকলকে ম্যানেজ করে ২৪ ঘণ্টা ইট পোড়ানোর কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।

এরই মধ্যে অবৈধভাবে ইটভাটা পরিচালনা ও পরিবেশ দূষণ করার দায়ে মোবাইল কোর্টের অভিযানে কয়েকটি ইট ভাটা থেকে জরিমানা আদায় করা হয়েছে।মাঝে মাঝে জরিমানার মধ্যেই প্রশাসনিক অভিযান সীমাবদ্ধ রয়েছে। অবৈধ ইটভাটা উচ্ছেদে প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে উচ্ছেদে কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।

কৃষিজমি বিনষ্ট করে গড়ে ওঠা এসব অবৈধ ইটভাটা দীর্ঘদিন ধরে কিভাবে চালু রয়েছে, এবিষয়ে বিশিষ্ঠজনরা বিস্ময় প্রকাশ করেছেন।ইটভাটার ইট পরিবহনের কারণে ওই ইউনিয়ন ও পার্শ্ববর্তী সাহাপুর ইউনিয়নের রাস্তাঘাটের বেহাল অবস্থা।চলাচলের রাস্তা ভেঙ্গে পড়ায় চরম ভেগান্তি পোহাতে হচ্ছে বলে এলাকাবাসীরা অভিযোগ করেছেন।

শহর হতে প্রায় ১২ কিলোমিটার দূরবর্তী প্রত্যন্ত পদ্মা নদী তীরবর্তী লক্ষীকুন্ডায় গড়ে উঠেছে এসব ইটভাটা।

রবিবার লীকুন্ডার তিনটি গ্রাম কামালপুর, দাদাপুর ও বিলকেদার গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কৃষি জমির উপর এসব ইট ভাটায় কয়লার পরিবর্তে কাঠ পোড়ানো হচ্ছে।ভাটা নির্মাণের জন্য চিমনীর উচ্চতা ও আনুসঙ্গিক যে নির্দেশনা রয়েছে তা অধিকাংশ ভাটা মালিকারা মানেননি এখানে ৫০টি অটোফিস এবং ২টি জিকজ্যাক (হাওয়া) ভাটা রয়েছে। অটোফিস ভাটায় কাঠ দিয়ে ইট পোড়ানো হয়। ভাটার কালো ধোঁয়া নির্গত হয়ে এলাকার পরিবেশ সবসময় দুষণযুক্ত রাখে।অবাধে নিধন হচ্ছে গাছপালা। ভাটার মালিকরা অবৈধ উপায়ে পদ্মার চরের ফসলী জমি কেটে হতে মাটি সংগ্রহ করে থাকে ফ্রিতেই চলছে এসব ইটভাটা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে জনৈক জনপ্রতিনিধি বলেন, লিখে কি করবেন। সকলকে ম্যানেজ করেই বছরের পর বছর চলছে অবৈধ ইটভাটা। অভিযান চালিয়ে জরিমানা আদায়, আইওয়াশ ছাড়া আর কিছু নয়। অবৈধ ভাটা ভেঙ্গে গুড়িয়ে না দিলে বন্ধ হবে না।

জেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল লতিফ জানান, বিপুল সংখ্যক ইটভাটা গড়ে উঠায় লক্ষীকুন্ডায় কৃষি জমির পরিমাণ কমে গেছে।ইটভাটার নিঃসরিত কালো ধোঁয়ায় ও ছাইয়ে আম-লিচু-কাঁঠালের বাগান এবং ফসলী জমির উপর প্রভাব পড়ছে।পলিউশনের প্রভাবে স্বাভাবিক জনজীবন ক্রমশ: হুমকীর সম্মুখিন হবে।

উপজেলা প্রকৌশলী এনামুল কবীর বলেন, ইটভাটার ইট ও ড্রামট্রাকে বালু পরিবহনের জন্য ওই এলাকার রাস্তাঘাটের অবস্থা শোচনীয়।নতুন করে রাস্তা নির্মাণ করা ছাড়া কোন উপায় নেই। ভারী এসব পরিবহন চলাচল বন্ধ না হলে নতুন রাস্তা নির্মাণ করেও কোন লাভ হবে না।

ঈশ্বরদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার পি এম ইমরুল কায়েস জানান,এসব অবৈধ ইটভাটায় কাঠ দিয়ে ইট পোড়ানোর ফলে পরিবেশ দুষণ এবং কৃষি ফসলের উপর প্রভাব পড়ছে।যেকারণে উপজেলার সহকারি কমিশনার (ভুমি) টি.এম. রাহসিন মাঝে মাঝে অভিযান চালিয়ে জরিমানা আদায় করেছে।

পরিবেশ অধিদপ্তরের বগুড়া আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপ-পরিচালকের সাথে কথা বলার জন্য মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

ইটভাটা মালিকদের সমিতির সাথে যোগাযোগ করা হলে এবিষয়ে তারা কোন কথা বলতে রাজী হননি।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

‘ম্যানেজ’ করেই চলছে ঈশ্বরদীতে ফসলি জমিতে অর্ধশতাধিক ইটভাটা

আপডেট সময় : ০৩:২৮:২৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ জানুয়ারী ২০২৩

আইনের তোয়াক্কা না করেই ঈশ্বরদীর লক্ষীকুন্ডা ইউনিয়নেই পূর্ণোদমে আবারো চালু হয়েছে ৫২টি অবৈধ ইটভাটা।

কৃষি জমি বিনষ্ট, ভাটায় কাঠ পোড়ানো, নিয়মনীতি লংঘন ও পরিবেশের ভারসাম্যহীনতার বিষয় বিবেচনা না করে চলতি মৌসুমে ইট পোড়ানো শুরু হয়েছে।

পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র, ইট পোড়ানোর লাইসেন্স, ফায়ার সার্ভিসের সার্টিফিকেট এমন কি ভ্যাট-আয়কর প্রদানের কাগজপত্র ছাড়াই ভাটার মালিকরা ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে আর সকলকে ম্যানেজ করে ২৪ ঘণ্টা ইট পোড়ানোর কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।

এরই মধ্যে অবৈধভাবে ইটভাটা পরিচালনা ও পরিবেশ দূষণ করার দায়ে মোবাইল কোর্টের অভিযানে কয়েকটি ইট ভাটা থেকে জরিমানা আদায় করা হয়েছে।মাঝে মাঝে জরিমানার মধ্যেই প্রশাসনিক অভিযান সীমাবদ্ধ রয়েছে। অবৈধ ইটভাটা উচ্ছেদে প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে উচ্ছেদে কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।

কৃষিজমি বিনষ্ট করে গড়ে ওঠা এসব অবৈধ ইটভাটা দীর্ঘদিন ধরে কিভাবে চালু রয়েছে, এবিষয়ে বিশিষ্ঠজনরা বিস্ময় প্রকাশ করেছেন।ইটভাটার ইট পরিবহনের কারণে ওই ইউনিয়ন ও পার্শ্ববর্তী সাহাপুর ইউনিয়নের রাস্তাঘাটের বেহাল অবস্থা।চলাচলের রাস্তা ভেঙ্গে পড়ায় চরম ভেগান্তি পোহাতে হচ্ছে বলে এলাকাবাসীরা অভিযোগ করেছেন।

শহর হতে প্রায় ১২ কিলোমিটার দূরবর্তী প্রত্যন্ত পদ্মা নদী তীরবর্তী লক্ষীকুন্ডায় গড়ে উঠেছে এসব ইটভাটা।

রবিবার লীকুন্ডার তিনটি গ্রাম কামালপুর, দাদাপুর ও বিলকেদার গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কৃষি জমির উপর এসব ইট ভাটায় কয়লার পরিবর্তে কাঠ পোড়ানো হচ্ছে।ভাটা নির্মাণের জন্য চিমনীর উচ্চতা ও আনুসঙ্গিক যে নির্দেশনা রয়েছে তা অধিকাংশ ভাটা মালিকারা মানেননি এখানে ৫০টি অটোফিস এবং ২টি জিকজ্যাক (হাওয়া) ভাটা রয়েছে। অটোফিস ভাটায় কাঠ দিয়ে ইট পোড়ানো হয়। ভাটার কালো ধোঁয়া নির্গত হয়ে এলাকার পরিবেশ সবসময় দুষণযুক্ত রাখে।অবাধে নিধন হচ্ছে গাছপালা। ভাটার মালিকরা অবৈধ উপায়ে পদ্মার চরের ফসলী জমি কেটে হতে মাটি সংগ্রহ করে থাকে ফ্রিতেই চলছে এসব ইটভাটা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে জনৈক জনপ্রতিনিধি বলেন, লিখে কি করবেন। সকলকে ম্যানেজ করেই বছরের পর বছর চলছে অবৈধ ইটভাটা। অভিযান চালিয়ে জরিমানা আদায়, আইওয়াশ ছাড়া আর কিছু নয়। অবৈধ ভাটা ভেঙ্গে গুড়িয়ে না দিলে বন্ধ হবে না।

জেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল লতিফ জানান, বিপুল সংখ্যক ইটভাটা গড়ে উঠায় লক্ষীকুন্ডায় কৃষি জমির পরিমাণ কমে গেছে।ইটভাটার নিঃসরিত কালো ধোঁয়ায় ও ছাইয়ে আম-লিচু-কাঁঠালের বাগান এবং ফসলী জমির উপর প্রভাব পড়ছে।পলিউশনের প্রভাবে স্বাভাবিক জনজীবন ক্রমশ: হুমকীর সম্মুখিন হবে।

উপজেলা প্রকৌশলী এনামুল কবীর বলেন, ইটভাটার ইট ও ড্রামট্রাকে বালু পরিবহনের জন্য ওই এলাকার রাস্তাঘাটের অবস্থা শোচনীয়।নতুন করে রাস্তা নির্মাণ করা ছাড়া কোন উপায় নেই। ভারী এসব পরিবহন চলাচল বন্ধ না হলে নতুন রাস্তা নির্মাণ করেও কোন লাভ হবে না।

ঈশ্বরদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার পি এম ইমরুল কায়েস জানান,এসব অবৈধ ইটভাটায় কাঠ দিয়ে ইট পোড়ানোর ফলে পরিবেশ দুষণ এবং কৃষি ফসলের উপর প্রভাব পড়ছে।যেকারণে উপজেলার সহকারি কমিশনার (ভুমি) টি.এম. রাহসিন মাঝে মাঝে অভিযান চালিয়ে জরিমানা আদায় করেছে।

পরিবেশ অধিদপ্তরের বগুড়া আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপ-পরিচালকের সাথে কথা বলার জন্য মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

ইটভাটা মালিকদের সমিতির সাথে যোগাযোগ করা হলে এবিষয়ে তারা কোন কথা বলতে রাজী হননি।