দীর্ঘ দিন প্রবাসে অবস্থান করে স্বৈরশাসক বিহীন বাংলাদেশে পা রাখলেন সিলেটের তিন সাবেক ছাত্রনেতা, সাবেক ছাত্রদল অর্গানাইজেশনের সভাপতি আবু জাফর রাসেল, পর্তুগাল বিএনপির সদস্য সচিব ছায়েফ আহমেদ সুইট ও পর্তুগাল বিএনপির অন্যতম যুগ্ন আহবায়ক শেখ খালেদ আহমদ মিনহাজ।
দেশে ফিরে তিন বিএনপি নেতা বলেন, ‘আপনারা যেভাবে দেশে থেকে মাফিয়া আওয়ামী সরকারের নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, আমরা প্রবাসে থেকেও বিভিন্নভাবে ১৭ বছর নির্যাতিত ছিলাম।শেখ হাসিনা দেশের মানুষের কণ্ঠস্বর কেড়ে নিয়েছিলেন।গণতন্ত্র কেড়ে নিয়েছিলেন, ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছিলেন।কেউ কোনো কথা বলতে পারিনি।দেশকে একটি কারাগার বানিয়েছিল। বিগত দিনে বিএনপি শত শত নেতাকর্মী অনেক গুম, হত্যাসহ মামলা-হামলায় নির্যাতিত হয়েছেন।সর্বশেষ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে বিপ্লবের মাধ্যমে এ দেশ স্বাধীন হয়েছে।’
তারা আরও বলেন, ‘দেশ স্বাধীন হলেও আমরা এখনও পূর্ণাঙ্গ স্বাধীনতা পাইনি।আমাদের দল এখনও ক্ষমতায় আসেনি।আগামী দিনে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যম নতুন সরকার গঠন হবে।তবে নির্বাচন অনেক কঠিন হবে, এখনই খুশি হওয়ার কিছু নেই।দলের প্রতি সম্মান রাখতে হবে।দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশ মেনে চলতে হবে।সবাই মিলে নির্বাচনে বিজয় এনে সরকার গঠন করতে পারলে ইনশাল্লাহ দেশ নেতা তারেক রহমানকে আমরা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে পাবো।’
আজ সকাল ৯.২০ মিনিটের বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিশেষ একটি ফ্লাইটে সিলেটে অবতরণ করেন।সিলেট জেলা ও মহানগর বিএনপি, যুবদল, সেচ্ছাসেবক দল, ছাত্রদল সহ বিভিন্ন অংগসংগঠনের নেতৃবৃন্দ তাদেরকে সিলেট এম.এ.জি. ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে তাদেরকে উস্ম অভ্যর্থনা ও ফুলেল শুভেচছা জানান।
অভ্যর্থনা প্রদানকালে নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘শেখ হাসিনা সরকারের অনিয়ম, অগণতান্ত্রিক সরকার পরিচালনার সময় বিএনপির কোনো নেতা কর্মী সাহস করেনি বাংলাদেশে আসতে, কারন শেখ হাসিনার পোষা পুলিশ যেকোন সময় গুম, খুন করতে পারে তাই তারা দেশে আসেন নি, তারপরও যারা বাংলাদেশে এসেছেন তারা লুকিয়ে, লুকিয়ে পরিবারের সাথে, দলীয় নেতৃবৃন্দের সাথে সাক্ষাৎ করে গেছেন, কখনো প্রকাশ্যে তারা বের হতেন না।
তারা আরও বলেন, আমাদের অনেকের পাসপোর্ট শেখ হাসিনা সরকার আটকে রেখেছিলো, আমাদের পাসপোর্ট রিনিউ করতে দেয় নাই, আমরা আজ বাংলাদেশে এসেছি আমাদের ভিতরে কোনো ভয় নেই, শেখ হাসিনা নেই, পোষা পুলিশবাহিনী নেই, আমরা নির্ভয়ে এখন চলাফেরা করতে পারবো।
সিলেট বিমানবন্দরে অন্যান্যরা মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, সিলেট জেলা বিএনপির সংগ্রামী সাধারন সম্পাদক এডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী, সাবেক সিলেট মহানগর বিএনপির যুগ্ন আহবায়ক ও প্যানেল মেয়র রেজাউল হাসান কয়েস লোদী, সিলেট মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক মাহবুবুল হক চৌধুরী (ভিপি মাহবুব) সিলেট জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট আল আসলাম মুমিন, জেলা যুবদলের সহ সভাপতি সাহেদ আহমদ চমন, সাবেক ছাত্রনেতা মারজানুল হক জোসেফ, সাবেক জেলা সেচ্চাসেবক দলের সদস্য সচিব দেওয়ান জাকির হোসেন খান, মহানগর যুবদলের সাধারন সম্পাদক মির্জা সম্রাট, পর্তুগাল বিএনপির যুগ্ন আহবায়ক মিজানুর রহমান শাহ জামাল, দিলোয়ার আহমেদ রাফি, ৫ নং ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আহমদ, জেলা যুবদলের সহ তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক শাকের মাহমুদ,এম সি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের আহবায়ক সেলিম আহমদ সাগর, জেলা ছাত্রদলের সহ সাংগঠনিক সম্পাদক শাহ আলম সহ প্রায় দু শতাধিক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক তার বক্তব্যে বলেন, প্রবাসে থেকে ও তাহারা গনতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনে অগ্রণী ভুমিকা রেখেছিলো, বহির্বিশ্বের প্রত্যেকটি আন্দোলন সংগ্রামে পর্তুগাল বিএনপির সদস্য সচিব ছায়েফ আহমেদ সুইটের অংশগ্রহণ ছিলো, স্বৈর শাসকের পতন আন্দোলনে তাদের ভুমিকা অবিস্মরণীয়।
সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সাবেক প্যানেল মেয়র ও মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ন আহবায়ক রেজাউল হাসান কয়েস লোদী বলেন, ছাত্র জনতার গন অভ্যুত্থানে নতুন বাংলাদেশে আমি তাদের স্বাগত জানাচ্ছি, স্বৈরাচারের পতন হয়েছে চুড়ান্ত লড়াই এখনো শেষ হয়নি, গনতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনে সবাইকে একসাথে কাজ করতে হবে।
অন্যান্যের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন, বিমানবন্দর থানা বিএনপি নেতা এমদাদুল হক, শামীম আহমেদ, জাহেদ আহমেদ, সাদেক আহমদ, সাদ্দাম হোসেন সহ আরও অনেকে!
পর্তুগাল বিএনপির সদস্য সচিব ছায়েফ আহমেদ সুইট বিশেষ ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান বিমান বন্দরে আগত সিলেট জেলা ও মহানগর বিএনপি, যুবদল, সেচ্ছাসেবক দল সহ সকল নেতৃবৃন্দের প্রতি।