রবিবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৪, ০২:১৪ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
পাইকগাছায় আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস পালিত মান্দায় আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস পালিত সারিয়াকান্দিতে যুবদলের পূজামন্ডপ পরিদর্শন ও আর্থিক সহায়তা প্রদান সাংবাদিক রুবেলের মায়ের মৃত্যুতে রাজশাহী বরেন্দ্র প্রেসক্লাবের শোক বিএনপি সংখ্যালঘুতে বিশ্বাস করে না-শামা ওবায়েদ রিংকু শ্লীলতাহানি ও মারধরের অপমান সহ্য করতে না পেরে তরুণীর আত্মহত্যার চেষ্টা হিন্দু-মুসলিম মিলেমিশে শান্তিতে থাকবো আমরা : নন্দীগ্রামে মোশারফ হোসেন মহানগরীর বিভিন্ন পূজামণ্ডপ পরিদর্শন করলেন সাবেক মেয়র বিএনপি নেতা মিনু সাপাহার সীমান্ত বিজিবি কর্তৃক বিভিন্ন পুজা মন্ডপে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন বিএনপি সব ধর্মের মানুষের পাশে আছে : শামা ওবায়েদ
নোটিশ :
দেশের জনপ্রিয় সর্বাধুনিক নিয়ম-নীতি অনুসরণকৃত রাজশাহী কর্তৃক প্রকাশিত নতুনধারার অনলাইন নিউজ পোর্টাল ‘যমুনা প্রতিদিন ডট কম’

ছোট গল্প : অসহায় মেয়েটি

মো তোফায়েল আহমেদ শিহাব ::

গ্রামের শেষ প্রান্তে একটি পুরনো, ছোট্ট ঘর ছিল সুমনার।তার বয়স মাত্র ষোলো, কিন্তু জীবন তাকে বড় করে তুলেছে অনেক আগে থেকেই।সুমনার বাবা-মা কয়েক বছর আগে এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছিলেন।সেই দিনটি তার স্মৃতিতে আজও স্পষ্ট, অন্ধকারে হারিয়ে যায় সব আশা, সব ভরসা।

অসহায়ত্বে ডুবে আছে হৃদয়,
সপন গড়া খুঁজে পাইনি কোনো ছায়া।
কষ্টের ঢেউয়ে ভাসে জীবনের কাহিনি,
আশার আলো মেলে, হৃদয়ে জাগে নতুন দাবি।

পিতৃ-মাতৃহীন হওয়ার পর সুমনা একা হয়ে গিয়েছিল।গ্রামের মানুষজনও কিছুদিন পর তার প্রতি দৃষ্টি ফেরাতে শুরু করেছিল।প্রতিদিন সকালে সে উঠত এবং সারা দিন কাজ করত, কষ্টে ভরা এই জীবন তাকে ক্লান্ত করে দিত, কিন্তু তার কাছে আর কোনো পথ ছিল না।

একদিন, বর্ষার মধ্যে, সুমনা একটি বিড়ালের বাচ্চা দেখতে পেল।বাচ্চাটি খুব দুর্বল ছিল, বৃষ্টিতে ভিজে গিয়েছিল।সুমনা তার হৃদয়ে একটা পরিবর্তন অনুভব করল, সে বিড়ালটিকে কোলে তুলে নিল, দিল না তাকে একলা, কোনও অন্যথা।

কিন্তু অল্পদিন পর, বিড়ালের বাচ্চাটি অসুস্থ হয়ে গেল।সুমনা চেষ্টা করেও তাকে বাঁচাতে পারল না, কষ্টের বোঝা আরও বাড়ল।বিড়ালের মৃত্যুর দিন, সুমনার চোখে অঝোর কান্না, সে অনুভব করল, জীবনে যত কষ্ট, ততই এক অদ্ভুত শূন্যতা।

কিন্তু তার হৃদয়ের মধ্যে একটা আশা ছিল।সুমনা স্থির করল, সে কিছু একটা করতে চায়।স্থানীয় স্কুলে ভর্তি হতে চাইলে শিক্ষকরা প্রথমে রাজি হলেন না।কিন্তু সে তাদের বোঝাল, তার পড়ালেখার সুযোগ দরকার, যেন সে জীবনে কিছু করতে পারে।

সুমনা প্রতিদিন পড়ালেখা করতে লাগল।তার সমস্ত কষ্ট, সমস্ত কান্না একত্রে হয়ে গেল শিক্ষার মধ্যে।সে জানত, শিক্ষাই তাকে নতুন জীবন দিতে পারে।কয়েক মাসের মধ্যে, তার কঠোর পরিশ্রমের ফলস্বরূপ, সে পরীক্ষায় ভালো নম্বর পেয়ে উত্তীর্ণ হলো।

কিছু বছর পর, সুমনা একটি শিক্ষিকা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হলো।সে গ্রামে ফিরে এসে সিদ্ধান্ত নিল, সে অন্য শিশুদের শিক্ষার সুযোগ করে দেবে।গ্রামের অসংখ্য শিশুদের মুখে নতুন স্বপ্নের আলো ফুটে উঠল।

গ্রামের মানুষ একদিন সুমনাকে বলল, “তুমি আমাদের গর্ব, আমাদের আশা।জীবনের প্রতিটি দুঃখকে জয় করে সুখের দিকে এগিয়ে যেতে হয়।”

সুমনার জীবন একটি প্রেরণার গল্প হয়ে উঠল, এখানে সে শিখিয়ে দিল, আশা কখনো মরে না, বরং ভালোবাসার আলো জ্বালিয়ে রাখতে হয়।

সুমনা জানাল, “প্রত্যেক শিশুর মধ্যে একটি সম্ভাবনা থাকে।আমি বিশ্বাস করি, শিক্ষা একটি শক্তিশালী হাতিয়ার, যা তাদের জীবনের গতিপথ পরিবর্তন করতে পারে।”

এভাবে, সুমনার ছোট্ট উদ্যোগ থেকে তৈরি হলো একটি বড় পরিবর্তন, যেখানে একে অপরের পাশে দাঁড়িয়ে সকলেই নতুন পথে এগিয়ে চলতে লাগল।

গ্রামের প্রতিটি কোণে তার নাম ছিল, প্রতিটি শিশু তার কাছে আসত, নিজেদের স্বপ্নগুলো নিয়ে।সুমনা বুঝতে পেরেছিল, জীবনের প্রতিটি কষ্ট তাকে শক্তিশালী করে তুলেছে এবং সে তাদের জন্য একটি নতুন দিগন্তের উন্মোচন করেছে।

লেখক-শিক্ষার্থী, কাউনিয়া কলেজ, রংপুর।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ

x
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com