শনিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:৫৫ অপরাহ্ন
নোটিশ :
দেশের জনপ্রিয় সর্বাধুনিক নিয়ম-নীতি অনুসরণকৃত রাজশাহী কর্তৃক প্রকাশিত নতুনধারার অনলাইন নিউজ পোর্টাল ‘যমুনা প্রতিদিন ডট কম’

আমার “মা’

সাতক্ষীরা জেলার দেবহাটা উপজেলার দেবীশহর গ্রামের পিতা কালিপদ বিশ্বাস এবং মাতা দাশী বিশ্বাস এর কন্যা আমার মা সরস্বতী শীল।তাদের ৩ পুত্র এবং ৪ কন্যা ছিল।আমার মা ছিলেন সবার ছোট।জন্ম থেকে দেখেছি, বাবা, মা অন্যের জমিতে কাজ করে দৈনিক পরিবারের ভরণপোষণ জোগাতে।

আমি শৈশবে আমার ঠাকুরমার কাছে শুনেছি যে, আমার পিতার বয়স যখন ৩মাস তখন আমার ঠাকুরদা ইহলোক ছেড়ে পরলোক গমন করেন।আমার ঠাকুরমা (জ্যেৎস্না) ওই সময় নিজের সন্তান ও মেয়েকে অনেক কষ্ট করে মানুষ করছে।

সে সময় আমাদের গ্রামে তারাপদ মল্লিক নামে একজন সম্ভান্ত ব্যক্তি ছিলেন।ওনার বাড়িতে আমার ঠাকুরমা দৈনিক কাজ করতেন।

তখন পরিবারে ছিল খুবই অভাব।এমন অভাব ছিল যে সে সময় খুদ (চালের টুকরা অংশ) শাপলা সিদ্ধ ও কচু শিদ্ধ করে খেতে জীবন ধারণ করেছে।

আমার বাবা লোকের বাড়িতে কাজ করে পরিবার, ভাইসহ আমার লেখাপড়ার খরচ জোগায়েছেন।বাবা পূজা বা কোন অনুষ্ঠানে নতুন জামা নিতেন না।শুধু আমাদের জন্য কিনতেন।

আমি পরিবারের বড়।আমি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশুনা শেষ করে বর্তমানে বিদুৎ জ্বালানি খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালেয়র অধীনে (ডেসকো) তে কর্মরত আছি।

আমার স্নেহের ছোট ভাই স্বপন শীল নাটানা মাছের ডেরায় কাজ করেন এবং পরিবারের খরচ বহন করেন।ছোট ভাই খুবই ভদ্র।

গৃহিণী মা সব সময় আমাদের খেয়াল রাখেন।অপর দিকে অন্যের ক্ষেত-খামারে কৃষি কাজ করে।বাবা-মা উভয় কৃষি কাজের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন।আমার বাবা একজন কৃষক, মানে কৃষক হয়ে ও আমাদের দু’ভাইয়ের সব খরচ বহন করত।

বাবার স্বপ্ন ছিল যে সন্তান সু-শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে এক দিন চাকরি পেয়ে পরিবারের সব অভাব দূর করবে।কিন্তু বাবা আমাদের ছেড়ে এই পৃথিবী থেকে চির বিদায় নিবে তা ভাবতে পারিনি।২০২১ সালের নভেম্বর মাসের ২২ তারিখে বাবা ব্রেইন টিউমার আক্রান্ত হন।ধীরে ধীরে বাবা মৃত্যু শয্যায় পতিত হন।অবশেষে ২০২২ সালের ৭ জুলাই বাবা ইহলোক ছেড়ে পরলোক গমন করেন।মৃত্যুকালে বাবার বয়স হয়েছিল ৪৯ বছর।

কষ্টের বিষয়টা হচ্ছে আমাদের জন্য বাবা সারাটা জীবন বিলিয়ে দিয়েছে।আজ তুমি আমাদের মাঝে নেই, তখন নিজের চোখে জল চলে আসে।প্রতিটা ক্ষণ নিজেকে অসহায় মনে হয়।বাবা ছিল আমার বটবৃক্ষ।সেই বটবৃক্ষ যে সন্তানের জীবনে নেয়, সেই জানে বাবার গুরুত্ব কতটুকু।তোমার আর্দশ ধারণ করে বড় হয়েছি।ভবিষ্যতে তোমার আর্দশ নিয়ে সামনে পথ পাড়ি দিব।

অপরদিকে ২০২২ সালের ৩০ডিসেম্বর আনুমানিক রাত ৮:২০ মিনিটে ঠাকুমা পরলোক গমন করেন।এভাবে তাদের ছেড়ে চলে যাওয়াটা মেনে নিতে অনেক কষ্ট হয়।

বাবা, মা না থাকলে আজ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখার সুযোগ পেতাম না।আমার সফলতার পেছনে তোমরা ছিলে।আমার জীবনে তোমাদের অবদান বলে শেষ হবে না।তোমরা শত বছর আমার হৃদয়ে থেকো।তোমার স্বপ্নগুলো বাস্তবে রূপ দিতে আমি কঠোর পরিশ্রম করে চলেছি।সেই সাথে দৈনিক পত্রদূত পত্রিকার সংবাদকর্মী, কর্তৃপক্ষ এবং সাতক্ষীরা জনগণ আমার জন্য আর্শিবাদ/দোয়া করবেন।আমি যেন দেশ ও জনগণের সেবায় নিজেকে আত্ম নিয়োগ করতে পারি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ

x
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com