মঙ্গলবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৪, ০৪:০২ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
দুই আন্তর্জাতিক নৃত্যশিল্পী একই পূজামন্ডপে নৃত্য করে আলোড়ন সৃষ্টি করলেন আনুষ্ঠানিকভাবে ঝালকাঠি জেলায় প্রথম ছাত্রশিবিরের প্রধান কার্যালয় উদ্বোধন ভোলায় মৎস্য অবমুক্তকরণ কর্মসূচির উদ্বোধন করলেন জেলা প্রশাসক রংপুরে বিএসটিআই’র উদ্যোগে পালিত হয়েছে বিশ্ব মান দিবস ভেজাল মদপানে শিক্ষার্থীর মৃত্যু,হাসপাতালে ভর্তি ২ একসঙ্গে ৩ যমজ বাচ্চা প্রসব, দুশ্চিন্তায় দরিদ্র বাবা ঝালকাঠিতে টাস্কফোর্স টিমের অভিযান,দুই ব্যবসায়ীকে জরিমানা মহিপুরে গন অধিকার পরিষদের আলোচনা সভা ও দলীয় অফিস উদ্বোধন জাতীয় সাংবাদিক সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যানের শারীরিক সুস্থতা ও দীর্ঘায়ু কামনায় দোয়া মাহফিল রাজশাহীতে বিশ্ব মান দিবস পালিত
নোটিশ :
দেশের জনপ্রিয় সর্বাধুনিক নিয়ম-নীতি অনুসরণকৃত রাজশাহী কর্তৃক প্রকাশিত নতুনধারার অনলাইন নিউজ পোর্টাল ‘যমুনা প্রতিদিন ডট কম’

নড়াইলে বস্তায় আদাচাষে সফলতা

নড়াইলে বস্তা পদ্ধতিতে আদাচাষ করে সফল হচ্ছে নড়াইলে কৃষি উদ্যোক্তারা।দামী এই মসলা জাতীয় ফসলের উৎপাদন বাড়ায় আমদানী নির্ভরতা কমিয়ে লাভবান হচ্ছেন কৃষক।এটি গৃহিনীর সুস্বাদু রান্নায় এক অনন্য মসলা।আদা ছাড়া রান্নার সঠিক সাদ বা ঘ্রাণ আসে না।আর সেই আদা বাণিজ্যিকভাবে বস্তা পদ্ধতিতে চাষ হচ্ছে নড়াইল জেলার প্রত্যন্ত বামনহাট গ্রামে।

এই পদ্ধতিতে একদিকে যেমন মাটিবাহীত রোগের আক্রমণ অনেক কমে যায়, অন্যদিকে প্রাকৃতিক বিপর্যয় হলে বস্তা অন্য জায়গায় সরিয়েও নিয়ে যাওয়া যায়।কৃষি খাতে আধুনিকতার প্রসার ঘটায় বর্তমান সময়ে বাড়ির উঠান কিংবা পতিত,নিচু জলাশয় জমিতে বস্তায় আদা চাষে ঝুঁকছে চাষিরা।

অল্প খরচ আর অধিক লাভ হওয়ায় সাথী ফসল হিসেবে বস্তায় আদা চাষ করছেন নড়াইলের প্রত্যন্ত বামনহাট গ্রামের কৃষানী মল্লিকা রায়।বসতভিটার পাশে নীচু জমিতে ১০ হাজার বস্তায় আদার চাষ করেছেন।সারা বছর পানিতে ডুবে থাকা পতিত জমিতে বস্তার মধ্যে আদার ব্যাপক ফলন হয়েছে।৯ মাসের এই ফসলে ১০ লক্ষ টাকা আয়ের আশা তার।

কৃষানী-মল্লিকা রায় জানান, সিমেন্টের ফেলে দেয়া বস্তায় সার মাটি দিয়ে ৫০ গ্রাম করে আদা রোপন করা হয়েছে।সারা বছর এই জমিতে পানি থাকে এখানে অন্য কোন ফসল হয়না। তাই কৃষি বিভাগের পরামর্শে আদা চাষ করেছি আশা করি ভালো ফলন পাবো।সাড়ে ৩ একর জমিতে ৭ লাখ টাকা খরচ হয়েছে।১০ থেকে ১২ লাখ টাকা লাভ হবে এমনটি আশা করছি।

এলাকার কৃষক মাহাবুবুর রহমান বলেন, কৃষানী মল্লিকা রায়ের এই উদ্যোগ দেখে আমি অনেক খুশি।নিজে চাষ করবো এবং গ্রামের আশেপাশের লোকদের এই ভাবে আদা চাষ করার পরামর্শ দেব।পরিত্যক্ত জমিতে এদের দেখাদেখি এলাকায় ইতিমধ্যে ছোট-বড় আরো কয়েক বাড়িতে শুরু হয়েছে বস্তায় আদাচাষ।

উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা রাজিব বিশ্বাস জানান, বস্তায় আদা চাষের জন্য আলাদা করে জমির দরকার নেই।অনেকের বাড়িতে এ পদ্ধতিতে আদা চাষ করতে পারেন।আবার অতিবৃষ্টি বা বন্যায় ফসল ডুবে নষ্ট হওয়ার ভয়ও নেই।একটি ফসল তোলার পর সেখানে আলাদা করে কোনো সার ছাড়াই আরেকটি ফসল ফলানো যাবে।খরচও তুলনা মূলক কম।এ পদ্ধতিতে একদিকে যেমন মাটিবাহিত রোগের আক্রমণ অনেক কমে যায়, অন্যদিকে প্রাকৃতিক বিপর্যয় হলে বস্তা অন্য জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়।বাড়ির উঠোন, প্রাচীরের কোল ঘেঁষে বা বাড়ির আশেপাশের ফাঁকা জায়গা অথবা ছাদে যেখানে খুশি রাখা যায়।এর জন্যে আলাদা কোনও জমি বা পরিচর্যার প্রয়োজন হয় না।

কৃষি বিভাগ আরও জানায়, ছায়াযুক্ত জায়গাতেও এ পদ্ধতিতে আদা চাষ করা যায়।সাধারণত বাঁশ বাগানের তলায় কোন ফসল চাষ হয় না। ফলে জায়গাটা পড়েই থাকে।সেই বাঁশ বাগানে বস্তায় আদা চাষ করা যায় খুব সহজেই।চাষের পদ্ধতি প্রথমে মাটির শুকনো ঢেলা ভেঙে চেলে নিতে হবে।যাতে ঝুরঝুরে হয়। বস্তায় মাটি যাতে ফেঁপে থাকে সেজন্যে ভার্মিকম্পোস্ট ও ছাই মেশাতে হবে।পরিমাণমতো যোগ করতে হবে গোবর সার।মাটি তৈরি হয়ে গেলে বস্তায় ভরে চাষের জন্যে বসাতে হবে ৫০ গ্রামের একটি করে আদা রোপন করতে হবে।সামান্য পানি দিতে হবে।এরপর বস্তার উপর ঢেকে দিয়ে রাখতে হবে।এতে মাটিতে আর্দ্রতা বেশিদিন থাকে।অল্প দিনের মধ্যেই কন্দ থেকে গাছ বেরিয়ে আসা শুরু করে।

আদা চাষ করতে খরচ কম আবার রোগবালাই কম হওয়ায় অধিক লাভ করা সম্ভব বলে মন্তব্য করেন কৃষি কর্মকর্তা রাজিব বিশ্বাস।সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি সংস্থা গুলো এখন মাঠ পর্যায়ে বস্তায় আদা চাষের জন্যে কৃষকদের উদ্বুদ্ধকরণ কার্যক্রম পরিচালনা করছেন বলেও জানান তিনি।

সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মাদ রোকনুজ্জামান বলেন, এ বছর জেলায় প্রায় ৩০ হাজার বস্তায় বারি-২ আদা চাষ হয়েছে।এই পদ্ধতিতে আদাচাষ জনপ্রিয় হওয়ায় এবছর মোট আদা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৩’শ ৫০ মেট্রিক টন।যা গত বছরের তুলনায় প্রায় ৪ গুন।সাধারন চাষে প্রতি গাছে সর্বোচ্চ ৮’শ গ্রাম আদা হলেও বস্তায় দেড় কেজি পর্যন্ত আদা ফলানো সম্ভব।সরকারী অনুদানে কৃষকদের প্রশিক্ষনের মাধ্যমে উদ্ধুদ্ধ করা গেলে আদাচাষে ব্যাপক সফালতা সম্ভব।এতে করে আমদানী নির্ভরতা কমিয়ে কৃষকেরা ব্যাপক লাভবান হবেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ

x
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com