রাজবাড়ীতে নিখোঁজের দুই দিন পর মিনহাজুল শেখ (১২) নামে এক শিশুর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টার দিকে রাজব্ড়ী সদর উপজেলার বরাট ইউনিয়নের পূর্ব ভবদিয়া গ্রামের একটি ধানক্ষেত থেকে তার মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
নিহত মিনহাজুল ওই গ্রামের আজাদ শেখের ছেলে।
পরিবারের দাবি, স্থানীয় মোক্তার শেখের মাল্টা বাগানে ঢুকে মাল্টা খাওয়ার অপরাধে মিনহাজুলকে হত্যা করে লাশ ধানক্ষেতে ফেলে রাখা হয়েছে।
এর আগে রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৪টার দিকে ওই গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয় মিনহাজুল।
মিনহাজুলের মা খাদিজা বেগম বলেন, রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৪টার দিকে মিনহাজুল খেলতে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়।এরপর সে তার বন্ধু সুমনের কাছে বলে স্থানীয় মোক্তার শেখের মাল্টার বাগানে যায়।তখন থেকে সে নিখোঁজ ছিল।আমরা বিভিন্ন স্থানে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তার কোনো সন্ধান পাইনি।মাল্টা বাগানে খোঁজার জন্য মোক্তার শেখের কাছে বার বার বাগানের গেটের চাবি চাইলেও তারা দেয়নি।পরে এ ঘটনায় সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) আমরা রাজবাড়ী সদর থানায় জিডি করি।মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টার দিকে মোক্তার শেখের মাল্টা বাগানের পাশে একটি ধানক্ষেতে আমার ছেলের মরদেহ পাওয়া যায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘মোক্তার শেখের মাল্টা বাগানে ঢুকে ফল খাওয়ার কারণে সে আমার ছেলেকে বিদ্যুতের শক দিয়ে হত্যার পর জিহ্বা কেটে দিয়েছে।তার হাত-পা কেটে মরদেহ আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ধানক্ষেতে ফেলে রেখেছে।’তার হাত-পায়ের কিছু অংশ হয়তো শেয়ালে খেয়েছে।
তবে স্থানীয়রা জানান, মোক্তার শেখ তার মাল্টা বাগানের চারপাশে জিআই তার দিয়ে ঘিরে বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে রাখতেন।
এদিকে মিনহাজুলের মরদেহ পাওয়ার পর থেকেই এলাকা থেকে গাঢাকা দিয়েছেন মাল্টা বাগানের মালিক মোক্তার শেখ।
মোক্তার শেখের ভাই সরোয়ার শেখ বলেন, ‘আমার ভাই বাড়িতে নেই।মাল্টা বাগানের সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই।সেখানে কি ঘটেছে আমি তা বলতে পারছি না।তবে ছেলেটির মর্মান্তিক মৃত্যুতে আমি শোকাহত।’
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন রাজবাড়ীর পুলিশ সুপার মোছা. শামিমা পারভীন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) মুকিত সরকার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. ইফতেখারুজ্জামান ও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহমুদুর রহমান।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘মরদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।এ বিষয়ে পরবর্তী আইনি কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন আছে।’