রাজনীতিতে এখন মামলা, হামলা আর গ্রেফতারের ভয় না থাকায় প্রতিপক্ষ বিহীন অনুকূল পরিবেশ পেয়ে সারা দেশের ন্যায় মাঠে নেমেছে উপজেলা বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা।নিজেদের অবস্থান জানান দিতে বিএনপির বিভিন্ন নেতার নেতৃত্বে উপজেলাজুড়ে চলছে মটরসাইকেল মহড়াসহ সভা সমাবেশ।সেইসঙ্গে দৃশ্যমান হয়ে উঠছে দলীয় অভ্যন্তরীণ কোন্দল (গ্রুপিং)।
নেতাকর্মীরা বলছেন, রাষ্ট্র ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা লাপাত্তা।এমন পরিস্থিতিতে মান্দার রাজনীতির মাঠে এখন বিএনপির প্রতিপক্ষ হয়ে উঠছে বিএনপি।
উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক শফিকুল ইসলাম বাবুল চৌধুরীর ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আব্দুল মতিনের নেতৃত্বে সেসব মোটর সাইকেল শোডাউন, মতবিনিময় সভা ও দোয়া মাহফিল হয়েছে তার কোনটাতেই সাবেক বিএনপির সভাপতি মকলেছুর রহমান মকে, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ডাঃ ইকরামুল বারী টিপু’কে দেখা যায়নি।একইভাবে সাবেক সভাপতি ও সাবেক সাধারণ সম্পাদকের সভা সমাবেশেও আসেননি উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা আব্দুল মতিন।
গত ৪ ও ৫ সেপ্টেম্বর যুবদল ও বিএনপি নিজেদের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন ও প্রতিবাদ সভাও করেছে।ফলে দিন যতই গড়াচ্ছে ততই বাড়ছে বিভাজন।এই সুযোগে দল ভারী করতে নব্য বিএনপি ও অনুপ্রবেকারীরা দলে প্রবেশ শুরু করেছে এ অবস্থায় নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ রাখতে জ্যেষ্ঠ নেতাদেরও কোনো প্রয়াস নেই বলে মন্তব্য করেছেন উপজেলা বিএনপির বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা।
এছাড়া প্রকাশ্যে দলীয় বিভিন্ন মিছিল মিটিংয়ে ডাক পড়লে বিব্রতকর পরিস্থিতি ও নিজ দলীয় রাজনৈতিক রোষাকলে পড়তে হচ্ছে তাদের।এমন অবস্থায় রাজনৈতিক পরিবেশ ফেরাতে দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের আহ্বান জানান তৃণমূলের নেতৃবৃন্দ।
২০১৯ সালের (১০ অক্টোবর) বৃহস্পতিবার ৫১ সদস্য বিশিষ্ট অনুমোদিত বর্তমান এ কমিটিতে স্বাক্ষর করেছেন নওগাঁর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মাষ্টার হাফিজুর রহমান ও যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাড. জেডএম রফিকুল আলম।এ কমিটিতে আহ্বায়কের পদ লাভ করেছেন উপজেলার গনেশপুর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম বাবুল চৌধুরী।যুগ্ম আহ্বায়কের পদ পেয়েছেন একেএম নাজমুল হক নাজু, তোফাজ্জল হোসেন টুকু ও মোজাম্মেল হক মুকুল।
এছাড়া সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য প্রয়াত নেতা সামসুল আলম প্রামানিক, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির আরেক সদস্য আব্দুল মতিন, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ডা. ইকরামুল বারী টিপু, উপজেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি সদ্য (বহিষ্কৃত) মনোজিৎ কুমার সরকার, উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মকলেছুর রহমান মকেসহ উপজেলা ও ইউনিয়নের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ সেসময় আহ্বায়ক কমিটির সদস্য পদ লাভ করেছেন।
জানা গেছে, বিএনপির দলীয় মনোনয়ন পেতে মান্দা উপজেলা থেকে প্রকাশ্যে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ডাঃইকরামুল বারী টিপু ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য নিজেদের দলীয় অনুসারীদের নিয়েই উপজেলা জুড়ে বিভিন্ন ধরনের সাংগঠনিক কার্যক্রম চালাচ্ছেন।
রাজনৈতিক এমন পরিস্থিতিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বিএনপির নেতাদের পক্ষে বিপক্ষে নিজেদের অনুসারীদের দোষারোপ করতেও দেখা গেছে।
অপরদিকে রাজনৈতিক এমন পরিস্থিতিতে দলীয় কোন কোন্দলে না গিয়ে নিরবে মাঠ গোছাতে ব্যস্ত সময় পার করছে মান্দা উপজেলা জামায়াতের নেতৃবৃন্দ।সংগঠনের নিয়ম নেমে বিভিন্ন মিছিল,মিটিং,দোয়া মাহফিল, শহীদদের অর্থ প্রদান জনমত গঠনে কাজ করেছেন বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামী।
জামায়াতের একাধিক নেতাকর্মী জানান, কোন কোন্দল ছাড়াই কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তারা মাঠ পর্যায়ে কাজ করে যাবে এমনটাই জানিয়েছেন জামায়াতের তৃণমূল নেতৃবৃন্দ।
মান্দা উপজেলা শাখার জামায়াতের সেক্রেটারি মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, আমাদের সংগঠনে কোন বিভক্তি নেই।আমরা কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশনা অনুসরণ করে সবাই এক সাথে কাজ করে যাচ্ছি।
নওগাঁ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব বায়েজিত হোসেন পলাশ বলেন, মান্দাতে একই দলের বিভক্তির কারণে কর্মী সমর্থকরা কিছুটা বিচলিত হচ্ছেন।অচিরেই বিভক্তি মিটিয়ে এক সাথে করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে।