পঞ্চগড় সদর উপজেলার অমরখানা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ নুরুজ্জামান নুরুর বিরুদ্ধে অবৈধ নিয়োগ বানিজ্য, দীর্ঘকালীন হয়রানী, অনিয়ম, প্রতারণা এবং কিছু অসাধু শিক্ষক ও কমিটির ঘুষ-দূর্নীতি বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধ করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও সর্বস্তরের জনগণ।
মঙ্গলবার ( ১৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে স্কুল প্রাঙ্গনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
জানা গেছে, অমরখানা উচ্চ বিদ্যালয়ে গেল ২ বছর আগে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগে দুর্নীতি, অনিয়ম, বিদ্যালয়ের অর্থ আত্মসাৎসহ নানা দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে।বিদ্যালয়ের ৩ জন শিক্ষক ও কমিটির সভাপতি গোপনে রাতের আঁধারে নিয়োগ পরীক্ষা দেন।কোনো জাতীয় পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত না করে টাকার বিনিময়ে গোপনে পছন্দের প্রার্থীকে নিয়োগ দেন।এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি সম্পর্কে এলাকার জনসাধাণ তথা শিক্ষিত যুব সমাজ কেহই অবগত নয়।এছাড়াও ১৫ বছর ধরে এই স্কুলে নানান রকম অনিয়ম ও দূর্নীতি করেন।আওয়ামীলী লীগ পরিবারের লোক বলে এলাকার মানুষ ভয়ে তাকে কিছু বলার সাহস পায় নাই।তার কারণে স্কুলের অবকাঠামো নির্মানের জন্য সরকারী কোনো অনুদান/বরাদ্দ পাওয়া যায় না।
পরবর্তীতে এ বিষয়টি এলাকাবাসীর নজরে আসলে এ ব্যপারে ১৯ অক্টোবর ২০২২ ইং তারিখে অনিয়ম ও দূর্নীতির বিরুদ্ধে এলাবাসী বিক্ষোভ মিছিল প্রতিবাদ সমাবেশ করেছিলেন।এলাকাবাসীর ব্যনারে বিদ্যালয় মাঠে এ সমাবেশ করেন।এ সময় বিক্ষুব্ধ জনতা বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অবরুদ্ধ করে রাখে।পরে ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে নিয়ন্ত্রণে আনেন।
সম্প্রতি বিদ্যালয়টিতে “কম্পিউটার ল্যাব অপারেটর পদে মোছাঃ তৃনা ইসলাম, “অফিস সহায়ক পদে মোঃ হাবিবুর রহমান ও “পরিচ্ছন্নতাকর্মী” পদে মোঃ আশিকুজ্জামান নিয়োগ পেয়ে যোগদান করেন।কিন্তু কবে কখন নিয়োগ হয়েছিল তা কেহই জানেনা।লক্ষ লক্ষ টাকা নিয়ে গোপনে নিয়োগ দেওয়ার অভিয়োগ তোলেন এলাকাবাসী।
অপরদিকে গত ০১/০৭/১৯৯৮ ইং তারিখে “দৈনিক তিস্তা” পত্রিকায় প্রকাশিত এক নিয়োগ বিজ্ঞপিতে আয়া পদে একটি নিয়োগ প্রকাশ করা হয়।তাহাতে মোছাঃ আরজিনা বেগম নামে এক মহিলাকে উক্ত পদে নিয়োগ দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে গত ২৪ (চব্বিশ) বছর ধরে বিনা বেতনে বিদ্যায়ের যাবতীয় কাজ করানো হয়।এমনকি মোছাঃ আরজিনা বেগমের স্বামীর কাছে ১৫ (পনেরো) শতক জমি উক্ত বিদ্যালয়ের নামে রেজিষ্ট্রি করে নেয় এবং বিভিন্ন সময়ে তাহাদের কাছে পর্যায়ক্রমে ১১,৫০,০০০/- (এগারো লক্ষ পঞ্চাশ হাজার) টাকা নিয়ে অভিযুক্ত ০৩ জন শিক্ষক ও সভাপতি মোঃ আব্দুস সামাদ তাহার সহিত প্রতারণা করিয়েছেন।
এ সময় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে মানববন্ধনকারীরা ৯ দফা দাবি দিয়ে প্রধান শিক্ষককে চিঠি দেন।দাবিগুলোর মধ্যে-
(১) অবৈধ কমিটির দ্বারা বাণিজ্য ভিত্তিক নিয়োগকৃত সকলকে অপসারণ করে মেধা ভিত্তিক নিয়োগ দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে।
(২) নিয়োগ দূর্নীতি ও অনিয়মের সাথে সম্পৃক্ত সকলকে সুষ্ঠ তদন্তের মাধ্যমে দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে।
৩। নিয়োগের জন্য আর্থিক লেন-দেনের বিষয়টি প্রকাশ্যে আনতে হবে।
৪। একজন প্রধান শিক্ষক কীভাবে ১৫ বছর বাসায় বসে প্রতিষ্ঠান পরিচালনা ও বেতন ভোগ করে এর জবাব দিতে হবে।
৫। বার্ষিক উন্নয়নমূলক বাজেট ও এর কার্যক্রমের সম্পূর্ণ হিসাব দিতে হবে।
৬। রশিদ ছাড়া অর্থ আদায়ের জবাবদিহি করতে হবে।
৭। কম্পিউটার সম্পর্কে অভিজ্ঞতা ছাড়াই কীভাবে একজন মহিলাকে “ল্যাব অপারেটরের” দায়িত্ব দেওয়া হয়? এর জবাব দিতে হবে।
৮। পূর্বের নিয়োগকৃত চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী মোছাঃ আরজিনা বেগম দীর্ঘ ২৪ বছর চাকরী করার পরেও বিল-বেতন হলো না কেন? এর জবাব দিতে হবে।
৯। এই প্রতিষ্ঠানে দ্রুতই ‘মনিটরিং সেল’ গঠন করতে হবে। যেখানে ০৫ (পাঁচ) জন ছাত্র প্রতিনিধি থাকতে হবে।