নড়াইলে লোহাগড়া উপজেলার মল্লিকপুর ইউনিয়নের চর-মল্লিকপুর গ্রামের বিএনপির সমর্থকরা দুই গ্রুপে বিভক্ত।এক পক্ষের নেতৃত্ব দেন লোহাগড়া উপজেলা যুবদলের আহবায়ক মোঃ মাহামুদ খাঁ এবং অপর পক্ষের নেতৃত্ব দেন নড়াইল জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক-২ মোঃ ফেরদৌস শেখ।উভয় পক্ষের মধ্যে স্থানীয় পর্যায়ে এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে মতদ্বন্দ্ব পরিলক্ষিত হয়।
গত ১০/৯/ চর-মল্লিকপুর গ্রামে আইয়ুবের মোড়ে উভয় পক্ষের মধ্যে বাক-বিতন্ডা হয়।সংবাদ পেয়ে লোহাগড়া থানা পুলিশ, টহলরত সেনাবাহিনী ও লোহাগড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার ঘটনাস্থলে হাজির হন।উভয়পক্ষ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট পরবর্তীতে আর বাকবিতন্ডায় জড়িত হবেনা মর্মে প্রতিশ্রুতি দেয়।
সকাল অনুমান ৮.৩০ থেকে ৯.৩০ টার মধ্যে যেকোন সময় ভিকটিম ১। মিরান শেখ (৪৮), ২। জিয়ারুল শেখ (৪৫), ৩। ইরান শেখ (৪৩), সর্বপিতা-মৃত আঃ সামাদ শেখ, সাং-চর-মল্লিকপুর, থানা-লোহাগড়া, জেলা-নড়াইলগণ তাদের দৈনন্দিন কাজের জন্য বের হয়।ঘটনাস্থলে পৌঁছানো মাত্র পূর্ব থেকে ওৎ পেতে থাকা প্রতিপক্ষ ১। ঝন্টু শেখ, ২। হিরন মৃধা, ৩। ফারুক মৃধা, ৪। মোঃ মাহমুদ খাঁ, ৫। পিন্টু শেখ, ৬। মিন্টু শেখ, ০৭। শরিফুল শেখসহ তাদের সহযোগী অন্যান্য আসামীরা রামদা, চাপাতি, ছ্যানদা ও বল্লমসহ দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র সজ্জিত হয়ে উক্ত তিন জনকে এলোপাতাড়িভাবে কুপিয়ে মারাত্মক গুরুতর জখম করে।
স্থানীয় লোকজন তাদেরকে উদ্ধার করে লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ভিকটিম মিরান শেখ ও জিয়ারুল শেখকে মৃত ঘোষণা করেন এবং অপর ভিকটিম ইরান শেখকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন।ঘটনার পর এলাকার আইন-শৃংখলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
নড়াইল জেলা পুলিশ সুপার কাজী এহসানুল কবীর ও খুলনা রেঞ্জ ডিআইজির নির্দেশনায় অতিরিক্ত ডিআইজি জয়দেব চৌধুরী, বিপিএম (সেবা) ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।পুলিশ সুপারের নির্দেশনায় ঘটনার সাথে জড়িত আসামীদের দ্রুত গ্রেফতারের জন্য পুলিশের একাধিক টিম মাঠে নামে।
তারই ধারাবাহিকতায় লোহাগড়া থানা পুলিশ, জেলা গোয়েন্দা শাখা এবং সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেল, নড়াইল এর একটি চৌকস দল ১৪ সেপ্টেম্বর ভোররাতে যৌথভাবে অভিযান পরিচালনা করে গাজীপুর মেট্রোপলিটন
এলাকার কাশিমপুর থানাধীন মাধবপুর গ্রাম থেকে ঘটনার সাথে জড়িত পিন্টু শেখ(৪০), মিন্টু শেখ (৫০) ও শরিফুল শেখ (৩৫)’দের গ্রেফতার করে। এ সংক্রান্তে ৩৫ (পঁয়ত্রিশ) জনকে আসামী করে লোহাগড়া থানার মামলা নং-০৯, তারিখ-১৪/০৯/২০২৪ খ্রিঃ, ধারা-১৪৩/ ৩৪১/ ১১৪/ ৩০৭/ ৩২৩/ ৩২৪/ ৩২৫/ ৩২৬/ ৩০২/ ৩৪/ ৫০৬ পেনাল কোড রুজু হয়।
মামলার ঘটনার সাথে জড়িত অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতারের অভিযান অব্যাহত আছে।